নাচে গৌরীদিবা হিম-গিরি-দুহিতা
বাণী
নাচে গৌরীদিবা হিম-গিরি-দুহিতা। নাচে দীপ্তিমতী নাচে উমা তপতী নাচে রে চির-আনন্দিতা।। তার কিরণ-আচল দোলে ঝলমল গিরি-পাষাণ অটল করে টলমল গলিয়া তুষার ঝরে নির্ঝর জল তার চরণ-ছন্দ-চকিতা।। তার নাচের মায়ায় প্রাণ পায় জড় জীব ভুলি’ বিরহ সতীর জাগে যোগীন্দ্র শিব, জাগে কুসুম-কলি গাহে বিহগ-অলি, তার রূপে ত্রিদিব হ’ল দীপন্বিতা।।
নিশিদিন জপে খোদা দুনিয়া
বাণী
নিশিদিন জপে খোদা দুনিয়া জাহান — জপে তোমারি নাম। তারায় গাঁথা তস্বি ল’য়ে নিশীতে আসমান — জপে তোমারি নাম।। ফুলের বনে নিতি গুঞ্জরিয়া ভ্রমর বেড়ায় তব নাম জপিয়া, হাতে ল’য়ে ফুলকুঁড়ির তস্বি ফুলের বাগান — জপে তোমারি নাম।। সাঁঝ সকালে কোকিল পাপিয়া মধুর তব নাম ফেরে গাহিয়া, ছল ছল সুরে ঝর্নার ধারা নদীর কলতান — জপে তোমারি নাম।। বৃষ্টি ধারার তস্বি ল’য়ে তব নাম জপে মেঘ ব্যাকুল হয়ে, সাগর-কল্লোল, সমীর-হিল্লোল বাদল ঝড়-তুফান — জপে তোমারি নাম।।
না মিটিতে মনোসাধ যেয়ো না হে শ্যামচাঁদ
বাণী
না মিটিতে মনোসাধ যেয়ো না হে শ্যামচাঁদ আঁধার করিয়া ব্রজধাম, সখা হে —। সোনার বরনী রাই অঙ্গে মাখিয়া ছাই দিশা নাই কাঁদে অবিরাম, সখা হে —।। অবিরাম কাঁদে রাই তারে কাঁদায় যে তারি তরে অবিরাম কাঁদে সখা হে। এখনো মাধবী-লতা কহেনি কুসুম-কথা জড়াইয়া তরুর গলে, এখনো ফোটেনি ভাষা আধ-ফুট ভালোবাসা ঢাকা লাজ পল্লব-তলে। বলা হলো না,হলো না, বুকের ভাষা মুখে বলা যে হলো না। সখা আমরা নারী, বলতে নারি! দুঃখের কথা মুখে বলতে নারি নয়ন জলে গলতে পারি তবু মুখে বলতে নারি মরণ-কোলে ঢলতে পারি সখা মুখ ফুটে তবু বলতে নারি, সখা হে — নবীন নীরদ-বরণ শ্যাম জানিতাম মোরা তখনি, ঐ করুণ সজল কাজল মেঘে থাকে গো ভীষণ অশনি। তুমি আগুন জ্বালিলে, ওহে নিরদয়! বুকে কেন আগুন জ্বালিলে। বুকে আগুন জ্বালায়ে চোখে সলিল ঢালিলে। তাহে আগুন নেভে কি? চোখেরি জলে ডুবে আগুন নেভে কি সথা হে- আগুন নেভে কি।।
নীল সরসীর জলে চতুর্দশীর চাঁদ
বাণী
নীল সরসীর জলে চতুর্দশীর চাঁদ ডোবে আর উঠে গো। এলোকেশে ঢেউয়ে জড়াজড়ি ক’রে পড়ে লুটে গো।। নীল-শাড়ি-বিজড়িত কিশোরী কলসী ল’য়ে ফেরে সাঁতরি’ চাঁদ ভেবে মুদিত কুঁড়ি হেসে ওঠে ফুটে গো।। সরসির পড়শি পলাশ, পারুল সুরভিত সমীরণ হাসিয়া আকুল, কলষে কঙ্কণে রিনিঝিনি সুর বাজে-তরঙ্গে সজল বিধুর, কমলিনী হরষে ঢ’লে পড়ে পরশে অধর-পুটে গো।।
নারায়ণী উমা খেলে হেসে হেসে
বাণী
নারায়ণী উমা খেলে হেসে হেসে হিম-গিরির বুকে পাহাড়ি বালিকা বেশে॥ গিরি-গুহা হতে জ্যোতির ঝরনা ছুটে চলে যেন চল ঝরনা, তুষার-সায়রে সোনার কমল যেন বেড়া ভেসে। — খেলে হেসে হেসে। মাধবী চাঁদ ওঠে কৈলাস-চূড়ে, খেলা ভুলিয়া যায়, অনিমেষ চোখে চায় পাষাণ প্রতিমা প্রায় সেই সুদূরে। সতী-হারা যোগী পাগল শঙ্করে মনে পড়িয়া তার নয়নে বারি ঝরে, শিব-সীমন্তনী পাগলিনী প্রায় ‘শিব শিব’ বলে ধায় মুক্তকেশে॥