বাণী

নিশিদিন জপে খোদা দুনিয়া জাহান — জপে তোমারি নাম।
তারায় গাঁথা তস্‌বি ল’য়ে নিশীতে আসমান — জপে তোমারি নাম।।
	ফুলের বনে নিতি গুঞ্জরিয়া
	ভ্রমর বেড়ায় তব নাম জপিয়া,
হাতে ল’য়ে ফুলকুঁড়ির তস্‌বি ফুলের বাগান — জপে তোমারি নাম।।
	সাঁঝ সকালে কোকিল পাপিয়া
	মধুর তব নাম ফেরে গাহিয়া,
ছল ছল সুরে ঝর্নার ধারা নদীর কলতান — জপে তোমারি নাম।।
	বৃষ্টি ধারার তস্‌বি ল’য়ে
	তব নাম জপে মেঘ ব্যাকুল হয়ে,
সাগর-কল্লোল, সমীর-হিল্লোল বাদল ঝড়-তুফান — জপে তোমারি নাম।।

বাণী

নারায়ণী উমা খেলে হেসে হেসে
হিম-গিরির বুকে পাহাড়ি বালিকা বেশে॥
গিরি-গুহা হতে জ্যোতির ঝরনা ছুটে চলে যেন চল ঝরনা,
তুষার-সায়রে সোনার কমল যেন বেড়া ভেসে।
			— খেলে হেসে হেসে।
মাধবী চাঁদ ওঠে কৈলাস-চূড়ে,
খেলা ভুলিয়া যায়, অনিমেষ চোখে চায়
পাষাণ প্রতিমা প্রায় সেই সুদূরে।
সতী-হারা যোগী পাগল শঙ্করে
মনে পড়িয়া তার নয়নে বারি ঝরে,
শিব-সীমন্তনী পাগলিনী প্রায় ‘শিব শিব’ বলে ধায় মুক্তকেশে॥

বাণী

নিপীড়িতা পৃথিবী ডাকে জাগো চন্ডিকা মহাকালি।
মৃতের শ্মশানে নাচো মৃত্যুঞ্জয়ী মহাশক্তি দনুজ-দলনী করালি॥
		প্রাণহীন শবে শিব-শক্তি জাগাও
		নারায়ণের যোগ-নিদ্রা ভাঙাও
অগ্নিশিখায় দশদিক রাঙাও বরাভয়দায়িনী নৃমুন্ডমালি॥
শ্রী চন্ডিতে তোরই শ্রীমুখের বাণী
কলিতে আবির্ভাব হবে তোর ভবানী।
		এসেছে কলি, কালিকা এলি কই
		শুম্ভ-নিশুম্ভ জন্মেছে পুন ঐ
অভয়বাণী তব মাভৈঃ মাভৈঃ শুনিব কবে মাগো খর করতালি॥

বাণী

নৃত্যকালী শঙ্কর সঙ্গে নাচে অতি রুদ্র-বিহঙ্গে।
ছন্দ ঝরে ঝর্ঝর ধারায় মন্দাকিনী গঙ্গা তরঙ্গে।।
মুক্তবেণী ধূর্জটি-জটা বিধূনিত অম্বরে দোলে
সসাগরা ভীতা পৃথ্বী কাঁপে মহাবিষ্ণুর কোলে,
বাজে ঘোর ডম্বরু শিঙ্গা উল্কা ছোটে ভ্রুকুটি ভঙ্গে।।
মৃত্যু-ক্ষুধা জাগিল একি রে, সৃষ্টি-স্থিতি সংহার মানসে।
পঞ্চভূত চিত্ত অহঙ্কার ব্রহ্মা-হরি লয় হ’ল ব্রহ্মে
উগ্র তারা রুদ্রেরে আবরি’ নাচে একা উন্মাদ দম্ভে,
একি হেরি মূর্ছিতা শক্তি সোহম্ শিব আমারি অঙ্গে।।

বাণী

নূপুর মধুর রুনুঝুনু বোলে।
মন-গোকুলে রুনুঝুনু বোলে।।
	কূলের বাঁধন টুটে,
	যমুনা উথলি' ওঠে,
পুলকে কদম ফোটে পেখম খোলে
	শিখী পেখম খোলে।।
ব্রজনারী কুল ভুলে'
	লুটায় সে পদমুলে
চোখে জল, বুকে প্রেম- তরঙ্গ দোলে।।
	শ্রীমতি রাধারই সাথে
	বিশ্ব ছুটেছে পথে,
হরি হরি ব'লে মাতে ত্রিভুবন ভোলে।
	নামে ত্রিভুবন ভোলে।।

বাণী

নিতি নিতি মোরে ডাকে সে স্বপনে,
নিরাশার আলো জ্বলিয়া গোপনে।
জানি না মায়াবিনী কী মায়া জানে
কেবলি বাহিরে পরান টানে,
ঘুরে ঘুরে মরি আঁধার-গহনে।।
শত পথিকে ও-রূপে ছল হানে,
অপরূপ শতরূপে শত গানে।
পথে পথে বাজে তাহারি বাঁশি,
সে-সুরে নিখিল-মন উদাসী;
দহে যাদুকরী বিধুর দহনে।।