নিশিদিন তব ডাক শুনিয়াছি মনে মনে
বাণী
নিশিদিন তব ডাক শুনিয়াছি মনে মনে শ্রবণে শুনিনি আহ্বান তব পবনে শুনেছি বনে বনে।। হে বিরহী তব আতাস পাণ্ডু করেছে তোমার আকাশ বিজনে তোমারে করিয়াছি ধ্যান শুধা যে ফিরিনি জনে জনে।। সকলে যখন ঘুমায়ে পড়েছে আধ রাতে স্মৃতি মঞ্জুষা খুলিয়া দেখেছি নিরালাতে। যদি তব ছবি ম্লান হয়ে যায় অশ্রু সলিলে ধুয়ে রাখি তায় দেবতা তোমারে মৌন পূজায় নীরবে ধেয়াই নিরজনে।।
নদীর নাম সই অঞ্জনা
বাণী
নদীর নাম সই অঞ্জনা নাচে তীরে খঞ্জনা, পাখি সে নয় নাচে কালো আঁখি। আমি যাব না আর অঞ্জনাতে জল নিতে সখি লো, ঐ আঁখি কিছু রাখিবে না বাকি॥ সেদিন তুলতে গেলাম দুপুর বেলা কলমি শাক ঢোলা ঢোলা (সই) হ’ল না আর সখি লো শাক তোলা, আমার মনে পড়িল সখি, ঢল ঢল তা’র চটুল আঁখি ব্যথায় ভ’রে উঠলো বুকের তলা। ঘরে ফেরার পথে দেখি, নীল শালুক সুঁদি ও কি ফু’টে আছে ঝিলের গহীন জলে। আমার অমনি পড়িল মনে সেই ডাগর আঁখি লো ঝিলের জলে চোখের জলে হ’ল মাখামাখি॥
নবীন বসন্তের রানী তুমি
বাণী
পুরুষ : নবীন বসন্তের রানী তুমি গোলাব-ফুলী রঙ। স্ত্রী : তব অনুরাগের রঙে আমি উঠিয়াছি আজ রেঙে প্রিয় এই অপরূপ ঢঙ।। পুরুষ : পলাশ কৃষ্ণচূড়ার কলি রাঙা ও-পায়ে এলে কি দলি’? স্ত্রী : বেয়ে প্রেমের পথের গলি এলাম কঠোর হৃদয় দলি’, হের পায়ে তাহারি রঙ।। পুরুষ : হায়, হৃদয়-হীনা হৃদয়-সাথি হয় না তা জানি, অবুঝ হৃদয় তবু চাহে তায় জানে সে-পাষাণী। স্ত্রী : ধরিয়া পায়ে প্রেম জানায়ে যাও পালায়ে শেষে কাঁদায়ে কাঁদাই যতই, কাঁদি যে ততই; পুরুষ : বায়ু কেঁদে যায় ফুল ঝরায়ে। স্ত্রী : না, না, যাও যাও মন চেয়ো না গন্ধ লহ, ফুল চেয়ো না; আছে কাঁটা ফুলের সঙ্গ।। উভয়ে : যাই চল সেই কাননে নাই কাঁটা ফুলের সনে যথা নাই বিরহ, শুধু মিলন।।
নতুন চাঁদের তক্বীর শোন্
বাণী
নতুন চাঁদের তক্বীর শোন্ কয় ডেকে ঐ মুয়াজ্জিন — আসমানে ফের ঈদুজ্জোহার চাঁদ উঠেছে মুসলেমিন।। এলো স্মরণ করিয়ে দিতে ঈদুজ্জোহার এই সে চাঁদ, তোরা ভোগের পাত্র ফেল্ রে ছুঁড়ে ত্যাগের তরে হৃদয় বাঁধ। কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।। প্রাণের যা তোর প্রিয়তম আজকে সে সব আন্, খোদারই রাহে আজ তাহাদের কর রে কোরবান্। কি হবে ঐ বনের পশু খোদারে দিয়ে, তোর কাম-ক্রোধাদি মনের পশু জবেহ্ কর্ নিয়ে। কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।। বিলিয়ে দেওয়ার খুশির শিরনি তশ্তরিতে আন, পর্ রে তোরা সবাই ত্যাগের রঙিন পিরহান্। মোদের যা কিছু প্রিয় বিলাব সবে নবীর উম্মত তবে সকলে কবে। কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।
নব কিশলয়-রাঙা শয্যা পাতিয়া
বাণী
নব কিশলয়-রাঙা শয্যা পাতিয়া বালিকা-কুঁড়ির মালিকা গাঁথিয়া আমি একেলা জাগি রজনী বঁধু,এলো না তো কই সৃজনী, বিজনে বসিয়া রচিলাম বৃথা বনফুল দিয়া ব্যজনী। কৃষ্ণচূড়ার কলিকা অফুট আমি তুলি আনিবৃথা রচিনু মুকুট, মোর হৃদি-সিংহাসন শূন্য রহিল আমি যাহার লাগিয়া বাসর সাজাই সে ভাবে মিছে এ খেলনা (সখি)। সে- যে জীবন লইয়া খেলা করে সখি, আমি মরণের তীরে ব'সে তা'রে ডাকি হেসে যায় বঁধু আনঘরে সে-যে জীবন লইয়া খেলা করে। সে-যে পাষাণের মুরতি বৃথা পূজা-আরতি নিবেদন করি তার পায়: সাধে কি গো বলে সবে পাষাণ গলেছে কবে? তবু মন পাষাণেই ধায় (সখি রে)। আমি এবার মরিয়া পুরুষ হইব,বঁধু হবে কুলবালা দিয়ে তারে ব্যথা যাব যথাতথা বুঝিবে সেদিন কালা, বিরহিণীর কি যে জ্বালা তখনি বুঝিবে কালা। দিয়ে তারে ব্যথা যাব যথাতথা বুঝিবে সেদিন কালা।।