বাণী

		প্রিয়ে ... বলি ও-প্রিয়ে ... তুমি দেখ ...।
		[কাঁপা-কন্ঠে আবৃত্তির ঢঙে বলা হয়েছে]
পুরুষ	:	প্রিয়ে! বলি, ও প্রিয়ে! তুমি দেখ!
		দেখ বিরহের দাবানল জ্বলে গোঁফ-দাড়িতে।
স্ত্রী	:	ও-স’রে যা, সে আগুন লেগে যাবে শাড়িতে॥
পুরুষ	:	একে ভীষণ ফাগুন মাস
স্ত্রী	:	ওগো তাই বুছি হাঁসফাঁস ?
পুরুষ	:	কাপাস ফলের মত ফেটে পড়ে হিয়া গো,
স্ত্রী	:	প্রেম-তুলো বের হয়ে পড়ে ছড়াইয়া গো,
উভয়ে:	রব্ ওঠে ভোঁস্-ভাঁস্ হৃদি-রেলগাড়িতে॥
পুরুষ	:	আজি এ বিরহের কাঠ-ঠোক্রা, ঠোক্রায় প্রেমের টাকে,
স্ত্রী	:	ওগো এ হেন বেয়াধি হলে টাকে, মধ্যম-নারায়ণ তেল মাখে।
পুরুষ	:	হায়-হায়-হায়-হায়-হায়
		আমাদের মাঝে কে রচিবে মিলনের সাঁকো।
স্ত্রী	:	থাক্ থাক্, পুরুতঠাকুর ইঞ্জিনিয়ার
		তারে তাড়াতাড়ি ডাকো, ডাকো, একবার ডাকো না ?
উভয়ে:	আগুন লাগিল ওরে দাড়ি আর শাড়িতে
		যুগল মিলন হ’ল ধেড়ে আর ধাড়িতে॥

বাণী

প্রভু সংসারেরি সোনার শিকল বেঁধো না আর পায়
তোমার প্রেম ডোরে ত্রিভুবন স্বামী বাঁধ হে আমায়॥
সারা জীবন বোঝা বয়ে, এসেছি আজ ক্লান্ত হয়ে
জুড়াতে হে শান্তি দাতা তোমার শীতল ছায়॥
হে নাথ যতদিন শক্তি ছিল বোঝা বহিবার
হাসি মুখে বয়েছি নাথ তোমার দেওয়া ভার।
শেষ হল আজ ভবের খেলা, কি দান দেব যাবার বেলা
তোমার নামের ভেলায় যেন এ দীন তরে যায়॥

বাণী

পথে কি দেখলে যেতে আমার গৌর দেবতারে।
যা’রে কোল যায় না দেওয়া, কোল দেয় সে ডেকে তারে।।
নবীন সন্ন্যাসী সে রূপে তার পাগল করে
আঁখির ঝিনুকে তা’র অবিরল মুক্তা ঝরে।
কেঁদে সে কৃষ্ণের প্রেম ভিক্ষা মাগে দ্বারে দ্বারে।।
জগতের জগাই-মাধাই মগ্ন যারা পাপের পাঁকে
সকলের পাপ নিয়ে সে সোনার গৌর-অঙ্গে মাখে।
উদার বক্ষে তাহার ঠাঁই দেয় সকল জাতে
দেখেছ প্রেমের ঠাকুর সচল জগন্নাথে?
একবার বললে হরি যায় নিয়ে সে ভবপারে।।

বাণী

পিউ পিউ পিউ বোলে পাপিয়া
বুকে তারি পিয়ারে চাপিয়া।।
বাতাবি নেবুর ফুলেলা কুঞ্জে
মাতাল সমীরণ প্রলাপ গুঞ্জে
ফুলের মহলায় চাঁদিনী শিহরায়
নদীকূলে ঢেউ ওঠে ছাপিয়া।।
এমনি নেবু ফুল এমনি মধুরাতে
পরাতো বঁধু মোর বিনোদ খোঁপাতে,
বাতায়নে পাখি করিত ডাকাডাকি
মনে পড়ে তায় উঠি কাঁপিয়া।।

বাণী

পদ্মার ঢেউ রে —
মোর শূণ্য হৃদয়–পদ্ম নিয়ে যা, যা রে।
এই পদ্মে ছিল রে যার রাঙ্গা পা
আমি হারায়েছি তারে।।
মোর পরান–বঁধু নাই, পদ্মে তাই মধু নাই (নাই রে)
বাতাস কাঁদে বাইরে, সে সুগন্ধ নাই রে
মোর রূপের সরসীতে আনন্দ–মৌমাছি নাহি ঝঙ্কারে রে।।
ও পদ্মারে —
ঢেউয়ে তোর ঢেউ ওঠায় যেমন চাঁদের আলো
মোর বঁধুয়ার রূপ তেমনি ঝিল্‌মিল করে কৃষ্ণ–কালো।
সে প্রেমের ঘাটে ঘাটে বাঁশি বাজায়
যদি দেখিস্‌ তারে, দিস্‌ এই পদ্ম তার পায়
বলিস্‌, কেন বুকে আশার দেয়ালি জ্বালিয়ে
ফেলে গেল চির–অন্ধকারে।

বাণী

পরজনমে যদি আসি এ ধরায়।
ক্ষণিক বসন্ত যেন না ফুরায়॥
মিলনে নাহি যেন রহে অবসাদ
ক্ষয় নাহি হয় যেন চৈতালি-চাঁদ,
কণ্ঠ-লগ্ন মোর প্রিয়ার বাহু
খুলিয়া২ না পড়ে যেন, নিশি না পোহায়॥
বাসি নাহি হয় যেন রাতের মালা,
ভরা থাকে যৌবন-রস-পেয়ালা।
জীবনে না রহে যেন মরণ-স্মৃতি
পুরাতন নাহি হয় প্রেম-প্রীতি,
রবে অভিমান রহিবে না বিরহ,
ফিরে যেন আসে প্রিয়া মাগিয়া বিদায়॥

১. মিলনে যেন নাহি আসে অবসাদ, ২. ঢলিয়া