বাণী

আজি নাহি কিছু মোর মান-অপমান ব’লে।
সকলি দিয়াছি মোর ঠাকুরের রাঙা চরণের তলে॥
		মোর দেহ-প্রাণ, জাতি কুল মান,
		লজ্জা ও গ্লানি আর অভিমান;
(আমি) দিছি চিরতরে জলাঞ্জলি গো কালো যমুনার জলে॥
মোরে যদি কেহ ভালোবাসে আজ জল আসে আঁখি ভ’রে।
মোর ছল ক’রে সে যে ভালোবাসে মোর শ্যামসুন্দরে।
মোরে		না বুঝিয়া কেহ করিলে আঘাত
		কেঁদে বলি, ওরে ক্ষমা করো নাথ্
বৃন্দাবনে যে প্রেম মধুর হয় আঘাত নিন্দাছলে॥

বাণী

আমার কথা লুকিয়ে থাকে আমার গানের আড়ালে।
সেই কথাটি জানার লাগি’ কে গো এসে দাঁড়ালে।।
	শূন্য মনের নাই কেহ মোর সাথি
	গান গেয়ে তাই কাটাই দিবারাতি,
সেই হৃদয়ের গভীর বনে কে তুমি পথ হারালে।।
হৃদয় নিয়ে নিদয় খেলার হয় যেখানে অভিনয়,
চেও না সেই হাটের মাঝে আমার মনের পরিচয়।
	যে বেদনার আগুন বুকে ল’য়ে
	জ্বলি আমি প্রদীপ-শিখা হ’য়ে,
সেই বেদনা জুড়াতে মোর কে তুমি হাত বাড়ালে।।

গীতিচিত্র: ‘অতনুর দেশ’

বাণী

বিরহের গুলবাগে মোর ভুল ক'রে আজ ফুটলো কি বকুল।
অবেলায় কুঞ্জবীথি মুঞ্জরিতে এলে কি বুলবুল।
এলে কি পথ ভুলে মোর আঁধার রাতে ঘুম-ভাঙানো চাঁদ,
অপরাধ ভুলেছ কি, ভেঙেছে কি অভিমানের বাঁধ।
মরণ আজ মধুর হলো পেয়ে তব চরণ রাতুল।।
ওগো প্রদীপ নিভে আসে ইহারি ক্ষীণ আলোকে,
দেখে নিই শেষ দেখা যত সাধ আছে চোখে।
হে চির-সুন্দর মোর, বিদায়-সন্ধ্যা মম
রাঙালে এ কি রঙে উদয় ঊষার সম
ঝ'রে পড়ুক তব পায়ে আমার এই জীবন-মুকুল।।

বাণী

কাছে আমার নাইবা এলে হে বিরহী দূর ভালো।
নাই কহিলে কথা তুমি ব'লো গানে সুর ভালো।।
	নাই দাঁড়ালে কাছে আসি'
	দূরে থেকেই বাজিয়ো বাঁশি।
চরণ তোমার নাই বা পেলাম চরণের নূপুর ভালো।।
ওগো পথে পাওয়ার চেয়ে আমায় চাওয়ায় যেন পথ-বঁধু
দুই কূলেতে রইব দুজন বইবে মাঝে স্রোত-বঁধূ।
	পরশ তোমার চাই না প্রিয়
	তোমার হাতের আঘাত দিও
মিলন তোমার সইতে নারি বেদনা-বিধুর ভালো।।

বাণী

আমার	মুক্তি নিয়ে কি হবে মা, (মাগো) আমি তোরেই চাই
		স্বর্গ আমি চাইনে মাগো, কোল্ যদি তোর পাই॥
(মাগো)		কি হবে সে মুক্তি নিয়ে,
			কি হবে সে স্বর্গে গিয়ে;
		যেথায় গিয়ে তোকে ডাকার আর প্রয়োজন নাই॥
		যুগে যুগে যে লোকে মা প্রকাশ হবে তোর
(আমি)	পুত্র হয়ে দেখব লীলা এই বাসনা মোর।
			তুই, মাখাস্ যদি মাখ্‌ব ধূলি,
			শুধু তোকে যেন নাহি ভুলি;
		তুই, মুছিয়ে ধূলি নিবি তুলি বক্ষে দিবি ঠাঁই॥

বাণী

বিষাদিনী এসো শাওন সন্ধ্যায়
		কাঁদিব দুজনে।
দীপালির উৎসবে আঁধারের ঠাঁই নাহি
		কাহারো হাসি যদি নিভে যায়।
তোমারি মতো তাই ম্লান-মুখ চিরদিন
		লুকায়ে রাখি অবগুণ্ঠনে॥