বাণী

আজি	ঘুম নহে, নিশি জাগরণ।
	চাঁদেরে ঘিরি’ নাচে ধীরি ধীরি তারা অগণন।।
	প্রখর-দাহন দিবস-আলো,
	নলিনী-দলে ঘুম তখনি ভালো।
	চাঁদ চন্দন চোখে বুলালো
		খোলো গো নিঁদ-মহল-আবরণ।।
	ঘুরে ঘুরে গ্রহ, তারা, বিশ্ব, আনন্দে
	নাচিছে নাচুনি ঘূর্ণির ছন্দে।
	লুকোচুরি-নাচ মেঘ তারা মাঝে
	নাচিছে ধরণী আলোছায়া-সাজে,
	ঝিল্লির ঘুমুর ঝুমুঝুমু বাজে
		খুলি’ খুলি’ পড়ে ফুল-আভরণ।।

বাণী

(মা)	আমি, মুক্তা নিতে আসিনি মা ও মা তোর মুক্তি-সাগর কূলে।
	মোর ভিক্ষা-ঝুলি হ’তে মায়ার মুক্তা মানিক নে মা তুলে।।
		মা তুই, সবই জানিস অন্তর্যামী,
		সেই চরণ-প্রসাদ ভিক্ষু আমি,
	শবেরও হয় শিবত্ব লাভ মা তোর যে চরণ ছুঁলে।।
	তুই অর্থ দিয়ে কেন ভুলাস এই পরমার্থ ভিখারিরে,
	তোর প্রসাদী ফুল পাই যদি মা গঙ্গা ধারাও চাই না শিরে।
		তোর শক্তিমন্ত্রে শক্তিময়ী
		আমি হতে পারি ব্রহ্ম-জয়ী
	সেই মাতৃনামের মহাভিক্ষু তোর মায়াতেও নাহি ভুলে।।

বাণী

আজি	আল কোরায়শী প্রিয় নবী এলেন ধরাধাম
তাঁর	কদম মোবারকে লাখো হাজারো সালাম।
	তওরত ইঞ্জিলে মুসা ঈসা পয়গম্বর
	বলেছিলেন আগাম যাঁহার আসারি খবর
	রব্বুলে দায়ের যাঁহার দিয়েছিলেন নাম
	সেই আহমদ মোর্তজা আজি এলেন আরব ধাম।।
	আদমেরি পেশানিতে জ‍্যোতি ছিল যাঁর
	যাঁর গুণে নূহ তরে গেল তুফান পাথার
	যাঁর নূরে নমরুদের আগুন হলো ফুলহার
	সেই মোহাম্মদ মুস্তাফা এলেন নিয়ে দীন-ইসলাম।।
	এলেন কাবার মুক্তিদাতা মসজিদের প্রাণ,
	শাফায়াতের তরী এলে পাপী তাপীর ত্রাণ
	দিকে দিকে শুনি খোদার নামের আজান
	নবীর রূপে এলো খোদার রহমতেরি জাম।।

বাণী

আমি বুকের ভিতর থাকি তবু ওরা ডাকে দেখা দাও ব’লে।
ওরা চিনিতে পারে না কত রূপে আমি দেখা দিই কত ছলে।।
চোর চোর খেলি মনে বসে, ওরা বনে যায় খুঁজিতে;
কোলে থাকি আমি খোকা হয়ে, ওরা মন্দিরে যায় পূজিতে।
মোরে পাষাণ করিয়া ফেলে রাখে, ওরা আঁধার দেউল তলে।।
(ওরা ডাকিয়া লয় না কোলে গো আমি কোল্ যে বড় ভালবাসি।)
			কেশবে ডাকিয়া লয় না কোলে।।
ওরা দেবতা ভাবিয়া পূজা দেয় যাহা, আমি তাহা নাহি খাই;
লুকায়ে ভিখারি সাজিয়া ওদের পাতের অন্ন চাই।
ওরা প্রভু ব’লে মোরে দূরে রাখে, তাই কেঁদে দূরে যাই চ’লে।
(ওরা গোপাল বলিয়া ডাকে না মোরে, কেন বুকে বেঁধে রাখে না।)
আমি তাই দূরে যাই চ’লে, কেশবে ডাকিয়া লয় না কোলে।।

নাটক : ‌‘অন্নপূর্ণা’

বাণী

আধো আধো বোল্ লাজে-বাধো-বাধো বোল
				ব’লো কানে কানে।
যে কথাটি আধো রাতে মনে লাগায় দোল
				ব’লো কানে কানে।।
যে কথার কলি সখি আজও ফুটিল না, হায়
শরমে মরম-পাতে দোলে আন্‌মনা, হায়
যে কথাটি ঢেকে রাখে বুকের আঁচল
				ব’লো কানে কানে।।
যে কথা লুকায়ে থাকে লাজ-নত চোখে
না বলিতে যে কথাটি জানাজানি লোকে
যে কথাটি ধ’রে রাখে অধরের কোল
লুকিয়ে ব’লো নিরালায় থামিলে কলরোল।
যে কথাটি বলিতে চাও বেশভূষার ছলে
যে কথা দেয় ব’লে তব তনু পলে পলে
যে কথাটি বলিতে সই গালে পড়ে টোল্ —
				ব’লো কানে কানে।।

বাণী

	আমার মালায় লাগুক তোমার মধুর হাতের ছোঁওয়া
	ঘিরুক তোমায় মোর আরতি পূজা-ধূপের ধোঁওয়া।।
		পূজায় ব'সে দেব-দেউলে
		তোমায় দেখি মনের ভুলে
প্রিয়	তুমি নিলে আমার পূজা হবে তারই লওয়া
		হবে দেবতারই লওয়া।।
		তুমি যেদিন প্রসন্ন হও ঠাকুর চাহেন হেসে
	কাঁদলে তুমি, বুকে আমার দেবতা কাদেঁন এসে।
		আমি অন্ধকারে ঠাকুর পুজে
		ঘরের মাঝে পেলাম খুজেঁ
	সে যে তুমি, আমার চির অবহেলা-সওয়া।।