বাণী

চুম্বক পাথর হায় লোহারে দেয় গালি,
আমার গায়ে ঢ’লে প’ড়ে কুলে দিলে কালি।।
	লোহা বলে, হায় পাষাণী
	তুমিই লহ বুকে টানি’,
(কেন) সোনা-রূপা ফেলে দিয়ে আমায় টান খালি।।
চুম্বক আর লোহায় চলে দ্বন্দ্ব সারা বেলা,
কে’দে মরে, বুঝতে নারে (এ) কোন্ নিঠুরের খেলা।
	হঠাৎ তাদের দৃষ্টি গেল খুলে
	ঊর্দ্ধ পানে চায় নয়ন তুলে,
(দেখে) খেলেন তাদের নিয়ে রস-শেখর বনমালি।।

বাণী

চাঁদিনী রাতে মল্লিকা লতা।
আবার কহিতে চাহে কোন কথা।।
আবার ভ্রমর-নূপুর বাজে
কী যেন হারানো হিয়ার মাঝে,
আবার বেণুর উতলা রবে ব্যাকুল হ’য়ে
ওঠে গোপন ব্যথা।।
তনুর পিঞ্জর ভাঙিয়া কেন হায়,
না-জানা-আকাশে হৃদয় যেতে চায়।
বায়ুরে ডেকে বলে, বহিতে নারি আর
যে দিল, তা’রে দিও সুরভি মধু-ভাব,
কৃপা কর, আমি ঝরিয়া ম’রে যাই
সহিতে পারি না মাটির মমতা।।

বাণী

	চিকন কালো বেদের কুমার কোন্‌ পাহাড়ে যাও?
কোন্‌	বন-হরিণীর পরান নিতে বাঁশরি বাজাও?
	তুমি শিস্‌ দিয়ে গান গাও
	তুমি কুটিল চোখে চাও।।
	তীর-ধনুক নিয়ে সারাবেলা
	ও শিকারি, এ কি খেলা?
শাল গাছেরই ডাল ভাঙিয়া একটু বাতাস খাও।।
কাঁকর-ভরা কাঁটার পথে (আজ) নাই শিকারে গেলে,
অশথ্‌-তলে বাজাও বাঁশি (তোমার) হাতের ধনুক ফেলে’।
	তোমার কালো চোখের কাজল নিয়ে
	ঝিল উঠেছে ঝিল্‌মিলিয়ে, ঝিল্‌মিলিয়ে।
ঐ কমল ঝিলের শাপলা নিয়ে বাঁশিখানি দাও।।

বাণী

চুড়ি কিঙ্কিনী রিনি রিন ঝিনি বীণ বাজায়ে চলে
শুনি নদীর নীল জলে জোয়ার উথলে।।
বাজে পায়ে পাঁইজোর ঘুঙুর ঝুমুর ঝুমুর
গাহে পাপিয়া পিয়া পিয়া শুনি সে সুর
শত পরান হতে চায় ঐ চরণে নূপুর
হৃদি হতে চায় চাবি তাহার আঁচলে।।
পথিকে বধিতে কি নদীতে সে জলকে যায়
ছল চল বলি তাহার কলসিতে জল ছ’লকে যায়
কাজল-ঘন চোখে বিজলি জ্বালা ঝলকে যায়
মন-পতঙ্গ ধায় ঐ আঁখির অনলে
শুনি নদীর নীল জলে জোয়ার উথলে।।

বাণী

চম্‌’কে চম্‌’কে ধীর ভীরু পায়,
পল্লী–বালিকা বন–পথে যায় একেলা বন–পথে যায়।।
শাড়ি তার কাঁটা লতায়, জড়িয়ে জড়িয়ে যায়,
পাগল হাওয়াতে অঞ্চল ল’য়ে মাতে —
		যেন তার তনুর পরশ চায়।।
শিরীষের পাতায় নূপুর, বাজে তার ঝুমুর ঝুমুর,
কুসুম ঝরিয়া মরিতে চাহে তার কবরীতে,
		পাখী গায় পাতার ঝরোকায়।।
চাহি’ তা’র নীল নয়নে, হরিণী লুকায় বনে,
হাতে তা’র কাঁকন হ’তে মাধবী লতা কাঁদে,
		ভ্রমরা কুন্তলে লুকায়।।

বাণী

চরণে দলিয়া গিয়াছে চলিয়া
			তবু কেন তারে ভালোবাসি।
বলিতে পারি না বোঝাতে পারি না
			আঁখি-জলে যায় বুক ভাসি’।।
কেন সে বিরাজে		হৃদয়েরি মাঝে
তার স্বর যেন 		সদা প্রাণে বাজে
কি বাঁধনে মোরে		বেঁধেছে বল সে
			দিয়ে গেছে গলে প্রেম-ফাঁসি।।