বাণী

কোয়েলা কুহু কুহু ডাকে।
নব মুকুলিত আমের শাখে।।
	যাহার দরশ লাগি’
	একেলা কুটীরে জাগি,
মোর সাথে পাখিও কি ডাকিছে তাহাকে।।
চাঁদিনী নিভে যায় আমার চোখে,
চাঁদে মনে পড়ে চাঁদের আলোকে।
	কুহু স্বর প্রাণে মম
	বাজিতেছে তার সম,
চাঁদিনী নিশীথ মোর বিষাদ-মেঘে ঢাকে।।

বাণী

	কোন্‌ সুদূরের চেনা বাঁশির ডাক শুনেছিস্‌ ওরে চখা?
			ওরে আমার পলাতকা!
তোর প’ড়লো মনে কোন্‌ হানা–ঘর,
			স্বপন-পারের কোন্‌ অলকা?
			ওরে আমার পলাতকা।।
তোর জল ভ’রেছে চপল চোখে,
বল কোন্‌ হারা–মা ডাক্‌লো তোকে রে
ঐ গগন–সীমায় সাঁঝের ছায়ায় —
	হাতছানি দেয় নিবিড় মায়ায় —
	উতল পাগল! চিনিস্‌ কি তুই চিনিস্‌ ওকে রে?
যেনবুক–ভরা ও’ গভীর স্নেহে ডাক দিয়ে যায়, ‘আয়,
			ওরে আয় আয় আয়,
কোলে আয় রে আমার দুষ্টু খোকা!
‌ওরে আমার পলাতকা।।‘
			দখিন হাওয়ায় বনের কাঁপনে —
	দুলাল আমার! হাত–ইশারায় মা কি রে তোর
				ডাক দিয়েছে আজ?
			এতদিনে চিনলি কি রে পর ও আপনে!
	নিশি ভোরেই তাই কি আমার নামলো ঘরে সাঁঝ?
			ধানের শীষে, শ্যামার শিষে —
			যাদুমণি! বল্‌ সে কিসে রে,
		তুই শিউরে চেয়ে ছিঁড়্‌লি বাঁধন!
			চোখ ভরা তোর উছলে কাঁদন রে!
তোরে কে পিয়ালো সবুজ স্নেহের কাঁচা বিষে রে!
‌‌যেন আচম্‌কা কোন্‌ শশক–শিশু চম্‌কে ডাকে হায়,
			‘ওরে আয় আয় আয় —
		বনে আয় ফিরে আয় বনের সখা।
		ওরে চপল পলাতকা।।

বাণী

কে বলে মোর মাকে কালো, মা যে আমার জ্যোতির্মতী।
কোটি চন্দ্র সূর্য তারা নিত্য করে যার আরতি।।
	কালো রূপের মায়া দিয়ে
	মহামায়া রয় লুকিয়ে,
মায়ের শুভ্ররূপ দেখেছে শুভ্র শুচি যার ভকতি।।
যোগীন্দ্র যাঁর চরণ-তলে ধ্যান করে রে যাঁর মহিমা,
দু’টি নয়ন-প্রদীপ জ্বেলে খুঁজি সেই অসীমার সীমা।
	সাজিয়ে কালী গৌরী মাকে
	পূজা করি তমসাকে,
মায়ের শুভ্ররূপ দেখেছে শুভ্র শুচি যার ভকতি।।

বাণী

স্ত্রীঃ		কোন্ বিদেশের নাইয়া তুমি আইলা আমার গাঁও
		কুল-বধূর সিনান ঘাটে বাঁধলে তোমার নাও॥
পুরুষঃ		বাণিজ্যেরই লাইগ্যা কন্যা বেড়াই ভেসে স্রোতে
		(ওগো) তোমার রূপের হাট দেখলাম যাইতে এই পথে।
স্ত্রীঃ		বুঝি তাই বাঁশের বাঁশি, তাই দিয়ে কি হে বিদেশি
		অমূল্য এই মনের মানিক, কিনতে তুমি চাও॥
পুরুষঃ		তোমায় পাবো বলে আজো শূন্য আমার তরী (রে কন্যা)
স্ত্রীঃ		অমন করে চাই ও না গো আমি ভয়ে মরি।
পুরুষঃ		ভয়ে মরার চেয়ে কন্যা ডুবে মরা ভালো
স্ত্রীঃ		আমার মন ডুবেছে দেখে তোমার নয়ন কাজল কালো (রে বন্ধু)
উভয়েঃ	নূতন প্রেমের যাত্রী দু’জন ছোট্ট মোদের নাও
		ওরে গহীন জলের আকুল জোয়ার অকূলে ভাসাও 
		মোদের অকূলে ভাসাও॥

বাণী

করিও ক্ষমা হে খোদা আমি গুণাহগার অসহায়।
কাজের মাঝে অবসর পাই না ডাকিতে তোমায়।।
যতবার তোমার পথে হে খোদা যেতে চেয়েছি
বাহির ভিতর হ’তে হাজারো বাধা পেয়েছি,
তোমার পথের দুশমন ঘরে-বাহিরে-দুনিয়ায়।।
দুঃখ-শোক-ব্যাধির তাড়নায় শুনিয়াও শুনিনি আজান,
বান্দার সে-অপরাধ করিও ক্ষমা হে রহমান।
আমি যে কাঙাল ভিখারি পুণ্যের পুঁজি নাহি
শূন্য হাতে আমারে ফিরায়ো না হে ইলাহি,
করো না নিরাশ যদিও শরণ যাচি অবেলায়।।

বাণী

		কুঁচবরণ কন্যা রে তার মেঘ-বরণ কেশ।
ওরে		আমায় নিয়ে যাও রে নদী সেই সে কন্যার দেশ রে।।
		পরনে তার মেঘ-ডম্বুর উদয়-তারার শাড়ি
ওরে		রূপ নিয়ে তার চাঁদ-সুরুজে করে কাড়াকাড়ি রে
আমি		তারি লাগি রে
		আমি তারি লাগি বিবাগী ভাই আমার চির-পথিক বেশ।।
		পিছ্‌লে পড়ে চাঁদের কিরণ নিটোল তারি গায়ে
ওরে		সন্ধ্যা-সকাল আসে তারি’ আল্‌তা হতে পায়ে রে।
ও সে		রয় না ঘরে রে
ও সে		রয় না ঘরে ঘুরে’ বেড়ায় ময়নামতীর চরে
তা’রে		দেখ্‌লে মরা বেঁচে ওঠে জ্যান্ত মানুষ মরে রে
ও সে		জল-তরঙ্গে বাজে রে তার সোনার চুড়ির রেশ।।