বাণী

তুমি	বর্ষার ঝরা চম্পা, তুমি যূথিকা-অশ্রুমতী।
তুমি	কুহেলি-মলিন ঊষা, তুমি বেদনা-সরস্বতী।।
	কদম-কেশর-কীর্ণা
তুমি	পুষ্প-বীথিকা শীর্ণা,
হ’লে	ধরণীতে অবতীর্ণা —
	ক্ষীণ তারকা স্নিগ্ধ জ্যোতি।।
	মন্দ-স্রোতা মন্দাকিনী তুমি কি অলকানন্দা,
	আঁধারের কালো-কুন্তল-ঢাকা তুমি কি ধূসর সন্ধ্যা?
			পাষাণ-দেবতা-চরণে
			তুমি মরেছ অমর মরণে,
তুমি	অঞ্জলি ঝরা কুসুমের, তুমি ব্যর্থ ব্যথা-আরতি।।

বাণী

আমি কি সুখে লো গৃহে রবো
সখি গো —
আমার শ্যাম হলো যদি যোগী ওলো সখি আমিও যোগিনী হবো।
আমি যোগিনী হবো
শ্যাম যে তরুর তলে বসিবে লো ধ্যানে
সেথা অঞ্চল পাতি’ রবো
আমার বঁধুর পথের ধূলি হবো
আমায় চলে যেতে দলে যাবে সেই সুখে লো ধূলি হবো
সখি গো —
আমি আমার সুখের গোধূলি বেলার
রঙে রঙে তারে রাঙাইব
তার গেরুয়া রাঙা বসন হয়ে
জড়াইয়া রবো দিবস যামী
সখি গো —
সখি আমার কঠিন এ রূপ হবে রুদ্রাক্ষেরই মালা
তার মালা হয়ে ভুলব আমার পোড়া প্রাণের জ্বালা
আমার এ দেহ পোড়ায়ে হইব চিতা ছাই
মাখিবে যোগী মোর পুড়িব সেই আশায়
পোড়ার কি আর বাকি আছে
আমার শ্যাম গেছে যোগী হয়ে ছায়া শুধু পড়ে আছে।।

বাণী

ঝিল্লি-নূপুর বাজে।
বিভাবরী নাচে বন-শবরী সাজে।।
তিমির কুন্তলে তারার ফুল দোলে
চাঁদের চন্দন-ফোঁটা ললাট-মাঝে।।
দোলে নদী-জল অঞ্চল ধীরে
বন-বেণী দোলে চঞ্চল-সমীরে।
জাগে দুরন্ত নিশীথ-বসন্ত
ঘুমন্ত নববধূ রেঙে ওঠে লাজে।।

বাণী

তব মাধবী-লীলায় কর মোরে সঙ্গী (হে বন-লক্ষ্মী)।
তব অপাঙ্গে হইব ভ্রুভঙ্গি।।
মোরে জ্বালায়ে জ্বালো
তব বাসরে আলো,
মোরে নূপুর করি’ বাঁধ চরণে তারি —
	নাচে তোমার সভায় যে কুরঙ্গী।।
তব রূপের দেশে
এনু বাউল বেশে,
যেন ফিরে নাহি যাই
আঁখি-প্রসাদ পাই —
	হব কেশে তব বেণীর ভুজঙ্গী।।

বাণী

হে নট-ভৈরবী আশাবরি।
ওঠো গো অরুণ গান বিসরি’।।
চেয়ে আছ জলভরা নয়নে,
তীব্র নিদাঘ তাপ কোমল করি’।।
পঞ্চমে কোয়েলিয়া ক’য়ে যায়
প্রথম প্রহর দিবা ব’য়ে যায়,
গুরু গঞ্জনা দিতে আসে ঐ —
মুখ ভার করি’ তব ননদিনী তোড়ি।।

বাণী

আজি		গানে গানে ঢাক্‌ব আমার গভীর অভিমান।
		কাঁটার ঘায়ে কুসুম ক’রে ফোটাব মোর প্রাণ।।
			ভুলতে তোমার অবহেলা
			গান গেয়ে মোর কাট্‌বে বেলা,
		আঘাত যত হান্‌বে বীণায় উঠ্‌বে তত তান।।
			ছিড়লে যে ফুল মনের ভুলে
			আমি গাঁথব মালা সেই ফুলে,
(ওগো)		আস্‌বে যখন বন্ধু তোমার কর্‌ব তা’রে দান।।
(আজি)		কথায় কথায় মিলায়ে মিল
		কবি রে, তোর ভরল কি দিল্‌,
তোর		শূন্য হিয়া, শূন্য নিখিল মিল পেল না প্রাণ।।