বাণী

কেন দিলে এ কাঁটা যদি গো কুসুম দিলে
ফুটিত না কি কমল ও কাঁটা না বিঁধিলে।।
	কেন এ আঁখি-কূলে
	বিধুর অশ্রু দুলে
কেন দিলে এ হৃদি যদি না হৃদয় মিলে।।
	কেন কামনা-ফাঁদে
	রূপ-পিপাসা কাঁদে
শোভিত না কি কপোল ও কালো তিল নহিলে।।
	কাঁটা-নিকুঞ্জে কবি
	এঁকে যা সুখের ছবি
নিজে তুই গোপন রবি তোরি আঁখির সলিলে।।

বাণী

মা-মা-মা-মা-মা-মাগো
এবারের পূজা মাগো দশভূজা বড় দুর্গতিময়।
পড়েছিস এ.বি.সি.ডি? বুঝিস ব্ল্যাক আউট কারে কয়?
ব্ল্যাক আউট মানে যত কালো ছিল বাহির হয়েছে মাগো
যত আলো ছিল যত ভালো ছিল, সকলেরে বলে ভাগো।
ডাইনে বাঁ ধারে ভীষণ আঁধারে হাঁটু কাঁপে আর হাঁটি
আমড়ার মত হয়ে আছি মাগো চামড়া এবং আঁটি।
নন্দী ভৃঙ্গী সিঙ্গি যাইলে তাহারাও ভয় পাবে
তাদের দিব্য দৃষ্টি লয়েও মাগো আঁধারে হোঁচট খাবে।
বলি বিগ্রহ তোর কে দেখিতে যাবে মা কুগ্রহের ফেরে
বিড়ি খেয়ে ফেরে গুন্ডারা যদি দেয় মাগো ভুঁড়ি ফেড়ে।
মা তুই বর দেওয়ার আগেই বর্বরেরা এসে
ঠেসে ধরে নিয়ে যাবে চিত্রগুপ্তের দেশে।
চোঁয়া ঢেকুর ওঠে মা মেকুর ডাকিলে কেঁদে উঠি ওঙা ওঙা;
ঢেঁকির আওয়াজ শুনলে মাগো ভয়ে খাড়া হয়ে ওঠে রোঁয়া।
সত্য পথে মা চলিতে পারি না পথে কাদা রাখে ফেলে
উচিত কথা মাগো বলিতে পারি না চিৎ করে দেয় ফেলে।
এ চিতে শক্তি দে মা চিৎ করবো ভয়কে
বলবো এবার তোরে খাব দে মা মাগো মা।।

নাট্য-গ্রন্থঃ ‘ব্লাক আউট’
ব্ল্যাক আউট নাট্যগ্রন্থের এই পাঠকে, আদি রেকর্ডের (এন. ২৭২০৬) পাঠের তুলনায়, স্বতন্ত্র গান হিসাবে বিবেচনা করা যায়।
[অগ্রন্থিত নজরুল, সংকলন ও সম্পাদনাঃ ব্রহ্মমোহন ঠাকুর, ডি.এম. লাইব্রেরি, কলকাতা, ২০০৩]

বাণী

নাচিয়া নাচিয়া এসো নন্দদুলাল,
মোর প্রাণে মোর মনে, এসো ব্রজগোপাল॥
এসো নূপুর রুনুঝুনু পায়ে, এসো প্রেম যমুনা নাচায়ে
এসো বেণু বাজায়ে, এসো ধেনু চরায়ে এসো কানাই রাখাল॥
ঝুলনে হোরিতে রাসে, এসো কুরুক্ষেত্র রণে এসো প্রভাসে,
(এসো) শিশু রূপে, এসো কিশোর বেশে
এসো কংস, অরি, এসো মৃত্যুকরাল॥

বাণী

কথা কও, কও কথা, থাকিও না চুপ ক'রে।
মৌন গগনে হের কথার বৃষ্টি ঝরে।।
ধীর সমীরণ নাহি যদি কহে কথা
ফোটে না কুসুম, নাহি দোলে বনলতা।
কমল মেলে না দল, যদি ভ্রমর না গুঞ্জরে।।
শোন কপোতীর কাছে কপোত কি কথা কহে,
পাহাড়ের ধ্যান ভাঙি মুখর ঝর্ণা বহে।
আমার কথার লঘু মেঘগুলি হায়!
জ'মে হিম হয়ে যায় তোমার নীরবতায়;
এসো আরো কাছে এসো কথার নূপুর প'রে।।

গীতিচিত্রঃ অতনুর দেশ

বাণী

পেয়ে আমি হারায়েছি গো আমার বুকের হারামণি।
গানের প্রদীপ জ্বেলে তা’রেই খুঁজে ফিরি দিন-রজনী।।
সে ছিল গো মধ্যমণি আমার মনের মণি-মালায়,
রেখেছিলাম লুকিয়ে তায়, মানিক যেমন রাখে ফণী।।
স্নিগ্ধ জ্যোতি নিয়ে সে মোর এসেছিল দগ্ধ বুকে,
অসীম আঁধার হাত্‌ড়ে ফিরি খুঁজি তারি রূপ-লাবণি।।
হারিয়ে যে যায় হায় কেন সে যায় হারিয়ে চিরতরে,
মিলন-বেলাভুমে বাজে বিরহেরই রোদন-ধ্বনি।।

বাণী

এলো এলো রে বৈশাখী ঝড় এলো এলো রে,
ঐ বৈশাখী ঝড় এলো এলো মহীয়ান সুন্দর।
পাংশু মলিন ভীত কাঁপে অম্বর চরাচর থরথর।।
ঘনবন–কুন্তলা বসুমতী সভয়ে করে প্রণতি,
সভয়ে নত চরণে ভীতা বসুমতী।
সাগর তরঙ্গ মাঝে তারি মঞ্জীর যেন বাজে বাজে রে
পায়ে গিরি–নির্ঝর–ঝরঝর ঝরঝর।।
ধূলি–গৈরিক নিশান দোলে ঈশান গগন চুম্বী,
ডম্বরু ঝল্লরী ঝাঁঝর ঝনঝন বাজে
এলো ছন্দ বন্ধন–হারা এলো রে
এলো মরু–সঞ্চর বিজয়ী বীরবর।।