বাণী

বাজে মঞ্জুল মঞ্জির রিনিকি ঝিনি
নীর ভরণে চলে রাধা বিনোদিনী
তার চঞ্চল নয়ন টলে টলমল
যেন দু'টি ঝিনুকে ভরা সাগর জল।।
ও সে আঁখি না পাখি গো
রাই ইতি-উতি চায়
কভু তমাল-বনে কভু কদম-তলায়।
রাই শত ছলে ধীরে পথ চলে কভু কন্টক বেঁধে চরণে
তবু যে কাঁটা-লতায় আঁচল জড়ায় বেণী খুলে যায় অকারণে।
গিয়ে যমুনার তীরে চায় ফিরে ফিরে আনমনে ব'সে গণে ঢেউ
চকিতে কলসি ভরি’লয় তার যেই মনে হয় আসে কেউ।
হায় হায় কেউ আসে না
“ভোলো অভিমান রাধারানী” বলি’ শ্যাম এসে সম্ভাষে না।
রাই চলিতে পারে না পথ আর,
বিরস বদন অলস চরণ শূন্য-কলসি লাগে ভার।
বলি,কালা নাহি এলো যমুনা তো ছিল লইয়া শীতল কালো জল।
কেন ডুবিয়া সে-কলে উঠিলি আবার কাঁদায়ে ভাসাতে ধরাতল।।

বাণী

আমার নয়নে নয়ন রাখি' পান করিতে চাও কোন অমিয়।
আছে এ আঁখিতে উষ্ণ আঁখি-জল মধুর সুধা নাই পরান-প্রিয়।।
	ওগো ও শিল্পী, গলাইয়া মোরে
	গড়িতে চাহ কোন মানস-প্রতিমারে,
ওগো ও পূজারি, কেন এ আরতি জাগাতে পাষাণ- প্রণয়-দেবতারে।
এ দেহ-ভৃঙ্গারে থাকে যদি মদ ওগো প্রেমাষ্পদ, পিও গো পিও।।
	আমারে কর গুণী, তোমার বীণা
	কাঁদিব সুরে সুরে, কণ্ঠ-লীনা
	আমার মুখের মুকুরে কবি
হেরিতে চাহ মোরে কর গো চন্দন তপ্ত তনু তব শীতল করিও ।। ১

১. এই অনুচ্ছেদটি গ্রামোফোন রেকর্ডে গাওয়া হয়নি।

বাণী

নীল যমুনা সলিল কান্তি চিকন ঘনশ্যাম।
তব শ্যামরূপে শ্যামল হল সংসার ব্রজধাম।।
রৌদ্রে পুড়িয়া তপিতা অবনি
চেয়েছিল শ্যাম-স্নিগ্ধা লাবনি,
আসিলে অমনি নবনীত তনু
ঢলঢল অভিরাম চিকন ঘনশ্যাম।।
আধেক বিন্দু রূপ তব দুলে ধরায় সিন্ধুজল
তব বেণু শুনি’, ওগো বাঁশুরিয়া,
প্রথম গাহিল কোকিল পাপিয়া,
হেরি কান্তার-বন-ভুবন ব্যাপিয়া
বিজড়িত তব নাম; চিকন ঘনশ্যাম।।

বাণী

কুমকুম আবির ফাগের ল’য়ে কালিকা।
খেলিছে ‘রসিয়া’ হোরি ব্রজ-বালিকা।।
	হোরির অনুরাগে
	যমুনায় দোলা লাগে,
মাধব সনে ঐ খেলে মাধবিকা।।
	রঙের গাগরিতে
	রঙিলা ঘাগরিতে,
রঙের মাতন লাগায় নাগর-নাগরিকা।।
	জেগেছে রঙের নেশা
	মাধবী মধু-মেশা,
মনের বনে দোলে রাঙা ফুল-মালিকা।।

বাণী

	আমার মালায় লাগুক তোমার মধুর হাতের ছোঁওয়া
	ঘিরুক তোমায় মোর আরতি পূজা-ধূপের ধোঁওয়া।।
		পূজায় ব'সে দেব-দেউলে
		তোমায় দেখি মনের ভুলে
প্রিয়	তুমি নিলে আমার পূজা হবে তারই লওয়া
		হবে দেবতারই লওয়া।।
		তুমি যেদিন প্রসন্ন হও ঠাকুর চাহেন হেসে
	কাঁদলে তুমি, বুকে আমার দেবতা কাদেঁন এসে।
		আমি অন্ধকারে ঠাকুর পুজে
		ঘরের মাঝে পেলাম খুজেঁ
	সে যে তুমি, আমার চির অবহেলা-সওয়া।।

বাণী

কেন আসিলে ভালোবাসিলে দিলে না ধরা জীবনে যদি।
বিশাল চোখে মিশায়ে মরু চাহিলে কেন গো বে–দরদী।।
		ছিনু অচেতন আপনা নিয়ে
		কেন জাগালে আঘাত দিয়ে
তব আঁখিজল সে কি শুধু ছল একি মরু হায় নহে জলধি।।
ওগো কত জনমের কত সে কাঁদন করে হাহাকার বুকেরি তলায়
ওগো কত নিরাশায় কত অভিমান ফেনায়ে ওঠে গভীর ব্যথায়।
মিলন হবে কোথায় সে কবে কাঁদিছে সাগর স্মরিয়া নদী।।