বাণী

এসো কল্যাণী চির-আয়ুষ্মতী।
তব নির্মল করে ভবন-প্রদীপ জ্বালো জ্বালো জ্বালো সতী।।
মঙ্গল-শঙ্খ বাজাও বাজাও সুমঙ্গলা
সকল অকল্যাণ সকল অমঙ্গল কর দূর (শুভ) সমুজ্জ্বলা!
এ মাটির কুটিরে দূর আকাশের অরুন্ধতী।।
এসো লক্ষ্মী গৃহের আঁকো অঙ্গনে মঙ্গল আল্‌পনা
তব পুণ্য-পরশ দিয়ে ধূলি-মুঠিরে কর গো সোনা,
তুমি দেবতার শুভ বর মূর্তিমতী।।
স্নান-শুদ্ধা তুমি পূজা-দেউলে যবে কর আরতি,
আনত আকাশ যেন তব চরণে করে প্রণতি।
	তব কুণ্ঠিত গুণ্ঠন-তলে
	চির শান্তির ধ্রবতারা জ্বলে,
সংসার অরণ্যে ধ্যান-মগ্না তুমি তপতী।।

বাণী

এত কথা কি গো কহিতে জানে
		চঞ্চল ঐ আঁখি
নীরব ভাষায় কি যে ক'য়ে যায়
	ও সে মনের বনের পাখি।।
বুঝিতে পারি না ঐ আঁখির ভাষা
জলে ডুবে তবু মেটে না পিপাসা,
আদর সোহাগ প্রেম ভালোবাসা
	অভিমান মাখামাখি।।
মুদিত কমলে ভ্রমরেরি প্রায়
বন্দী হইয়া কাঁদিয়া বেড়ায়
চাহিয়া চাহিয়া মিনতি জানায়
	সুনীল আকাশে ডাকি'।।

বাণী

এলো ফুলের মরশুম শরাব ঢালো সাকি
বকুল শাখে কোকিল ওঠে ডাকি’।।
গেয়ে ওঠে বুলবুল আঙ্গুর-বাগে
নীল আঁখি লাল হলো রাঙ্-অনুরাগে
আজি ফুল-বাসরে শিরাজির জল্‌সা
		বরবাদ্‌ হবে না-কি।।
চাঁপার গেলাস ভরি’ ভোমরা মধু পিয়ে
মহুয়া ফুলের বাসে আঁখি আসে ঝিমিয়ে।
পাপিয়া পিয়া পিয়া ডাকে বন-মাঝে
গোলাপ-কপোল রাঙে গোলাপী লাজে
হৃদয়-ব্যথার সুধা আছে তব কাছে
		রেখো না তারে ঢাকি’।।

বাণী

এলো এলো রে ঐ সুদূর বন্ধু এলো।
এলো পথ চাওয়া এলো হারিয়ে পাওয়া
মনের আঁধার দূরে গেল, ঐ বন্ধু এলো।।
এলো চঞ্চল বন্যার ঢল মন্থর স্রোত-নীড়ে,
এলো শ্যামল মেঘ-মায়া তৃষিত গগন ঘিরে;
তার পলাতকা মৃগে বন ফিরে পেল।।
এলো পবনে বিহ্‌বল চঞ্চলতা
যেন শান্ত ভবনে এলো সারা ভুবনের কল-কথা।
অলি গুঞ্জরি’ কয় জাগো বনবীথি;
ডাকে দখিনা মলয় — এলো এলো অতিথি;
বাজে তোরণ দ্বারে বাঁশরি গীতি,
দুখ নিশি পোহাল, আঁখি মেল।।

নাটিকা: ‌‘বাসন্তিকা’

বাণী

এ নহে বিলাস বন্ধু ফুটেছি জলে কমল
এ যে ব্যথা রাঙা হৃদয় আঁখি জলে টলমল।।
কমল মৃণাল দেহ ভরেছে কন্টক ঘায়
শরণ লয়েছি গো তাই শীতল দীঘির জল।।
ডুবেছি আজ কালো জলে কত যে জ্বালা স'য়ে
শত ব্যথা ক্ষত লয়ে হইয়াছি শতদল।।
কবি রে কোন ক্ষত মুখে ফোটে যে তোর গীত সুর
সে ক্ষত দেখিল না কেউ দেখিল তোরে কেবল
সে গীতি দেখিল না কেউ শুনিল গীতি কেবল।।

বাণী

এলো ঐ		পূর্ণ শশী		ফুল-জাগানো
বহে বায়		বকুল-বনে	ঘুম-ভাঙানো।।
লাগিল		জাফরানি-রঙ	শিউলি-ফুলে
ফুটিল		প্রেমের কুঁড়ি	পাপড়ি খুলে,
খুশির আজ	আমেজ জাগে	মন-রাঙানো।।
চাঁদিনী		ঝিলমিলায়	ঝিলের জলে,
আবেশে		শাপলা ফুলের	মৃণাল টলে,
জাগে ঢেউ	দীঘির বুকে	দোল-লাগানো।।
এসো আজ	স্বপন-কুমার	নিরিবিলি
খুলিয়া		গোপন প্রাণের	ঝিলিমিলি,
এসো মোর	হতাশ প্রাণে	ভুল-ভাঙানো।।