বাণী

	এক্‌লা ভাসাই গানের কমল সুরের স্রোতে।
	খেলার ছলে ওপার পানে এপার হ’তে।।
	আসবে গো এই গাঙের কূলে হয়ত ভুলে আমার প্রিয়া
	খোঁপায় নেবে আমার গানের কমল তুলে তামার প্রিয়া
	খুঁজতে আমায় আসবে সুরের নদী-পথে।।
	নাম-হারা কোন্ গাঁয়ে থাকে অচেনা সে,
তারে	না-ই জানিলাম, গান ভেসে যাক্ তাহার আশে।
	নদীর জলে আল্‌তা-রাঙা পা ডুবায়ে, রয় সে মেয়ে
	গানের কমল লাগে গো তা’র কমল-পায়ে, উজান বেয়ে,
	সেদিন অমর হয় মোর গান, যায় অমরায় পুষ্প-রথে।।

বাণী

এসো এসো তব যাত্রা-পথে
শুভ বিজয়-রথে ডাকে দূর-সাথি।
মোরা তোমার লাগি’, হেথা রহিব জাগি’
তব সাজায়ে বাসর জ্বালি’ আশার বাতি।।
হের গো বিকীর্ণ শত শুভ চিহ্ন পথ-পাশে নগর-বাটে,
স-বৎসা ধেনু গো-ক্ষুর-রেণু উড়ায়ে চলে দূর মাঠে।
দক্ষিণ-আবর্ত-বহ্নি, পূর্ণ-ঘট-কাঁখে তম্বী,
দোলে পুষ্প-মালা, ঝলে’ শুক্লা রাতি।।
হের পতাকা দোলে দূর তোরণ-তলে, গজ তুরগ চলে।
শুক্লা ধানের হের মঞ্জরী ঐ, এসো কল্যাণী গো,
		আনো নব-প্রভাতী।।

নাটক : ‘সাবিত্রী’

বাণী

এরি লাগি তপস্যা কি করে আঁধার রাতি।।
সই দেখলো চেয়ে রূপ-সায়রে জ্বলে এ কোন্ বাতি
লক্ষ চাঁদের জোছনা হেথা কে রেখেছে পাতি’?

নাটক : ‘মধুমালা’ (স্বপনপরীর গান)

বাণী

এসো বসন্তের রাজা হে আমার
এসো এ যৌবন-বাসর-সভাতে।।
ফুলের দরবারে পাখির জলসাতে
বুকের অঞ্চল-সিংহাসনে মম
বসো আমার চাঁদ চাঁদনি রাতে।।
রূপের দীপালি মোর জ্বলবে তোমায় ঘিরে বঁধূ,
পিয়াব তোমায় পিয়া কানে-কানে কথার মধু।
বন-কুসুমের মালা দিব বাহুর মালার সাথে
চরণে হব দাসী বন্ধু হব দুখ রাতে।।

বাণী

একটুখানি দাও অবসর বসতে কাছে,
তোমায় আমার অনেক যুগের অনেক কথা বলার আছে।।
গ্রহ ঘিরে উপগ্রহ, ঘোরে যেমন অহরহ;
আমার আকুল এ বিরহ তেমনি প্রিয় তোমায় যাচে॥
চিরকালই রইলে তুমি আমার পাওয়ার বহুদূরে
আজকে ক্ষণিক কইব কথা সকরুণ গানের সুরে।
করব পূজা গানে গানে, চাইব না আর নয়ন পানে;
আমার চোখের অশ্রুলেখা দেখে তুমি চেন পাছে॥

বাণী

এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী-জননী।
ফুলে ও ফসলে কাদা মাটি জলে ঝলমল করে লাবনি॥
রৌদ্রতপ্ত বৈশাখে তুমি চাতকের সাথে চাহ জল,
আম কাঁঠালের মধুর গন্ধে জ্যৈষ্ঠে মাতাও তরুতল।
ঝঞ্ঝার সাথে প্রান্তরে মাঠে কভু খেল ল’য়ে অশনি॥
কেতকী-কদম-যূথিকা কুসুমে বর্ষায় গাঁথ মালিকা,
পথে অবিরল ছিটাইয়া জল খেল চঞ্চলা বালিকা।
তড়াগে পুকুরে থই থই করে শ্যামল শোভার নবনী॥
শাপলা শালুক সাজাইয়া সাজি শরতে শিশির নাহিয়া,
শিউলি-ছোপানো শাড়ি পরে ফের আগামনী-গীত গাহিয়া।
অঘ্রাণে মা গো আমন ধানের সুঘ্রাণে ভরে অবনি॥
শীতের শূন্য মাঠে তুমি ফের উদাসী বাউল সাথে মা,
ভাটিয়ালি গাও মাঝিদের সাথে গো, কীর্তন শোনো রাতে মা।
ফাল্গুনে রাঙা ফুলের আবিরে রাঙাও নিখিল ধরণী॥