বাণী

ও মেঘের দেশের মেয়ে।
কোথা হ’তে এলি রে তুই কেয়াপাতার খেয়া বেয়ে।।
	ধারা নূপুর রুন্‌ঝুনিয়ে
	কানে কদম দুল দুলিয়ে
ফুল কুড়াতে এলি কি তুই মোর কাননে ধেয়ে।।
পূব-হাওয়াতে উড়ছে আঁচল নীলাম্বরী,
তুমি বুঝি ভাই রূপকাহিনীর মেঘ্লা-পরী।
তোর	কণ্ঠে বাজে যে গান মধুর
	তারি’ তালে নাচে ময়ূর,
মেঘ-মাদলের সাথে ওঠে আমারও মন গেয়ে।।

বাণী

ও তুই কারে দেখে ঘোমটা দিলি নতুন বউ বল গো
তুই উঠলি রেঙে যেন পাকা কামরাঙ্গার ফল গো।।
তোর মন আইঢাই কি দেখে কে জানে
তুই চুন বলে দিস হলুদ বাটা পানে
তুই লাল নটে শাক ভেবে কুটিস শাড়ির আঁচল গো।।
তুই এ ঘর যেতে ও ঘরে যাস পায়ে বাধে পা
বউ তোর রঙ্গ দেখে হাসছে ননদ জা।
তুই দিন থাকিতে পিদিম জ্বালিস ঘরে
ওলো রাত আসিবে আরো অনেক পরে
কেন ভাতের হাঁড়ি মনে ক'রে উনুনে দিস জল গো।।

বাণী

ও কে মুঠি মুঠি আবীর কাননে ছড়ায়
রাঙা-হাসির পরাগ-ফুল আননে ঝরায়।।
তার রঙের আবেশ লাগে চাঁদের চোখে
তার লালসার রঙ জাগে রাঙা অশোকে
তার রঙিন নিশান দোলে কৃষ্ণ চূড়ায়।।
তার পুষ্প ধনু দোলে শিমূল শাখায়
তার কানা কাঁপে গো ভোমরা পাখায়,
সে খোঁপাতে বেল-ফুলের মালা জড়ায়।।
সে কুসমী শাড়ি পরায় নীল বসনায়
সে আঁধার মনে জ্বালে লাল রোশনাই
সে শুকনো বনে ফাগুন আগুন ধরায়।।

বাণী

ওরে ও-স্রোতের ফুল!
ভেসে ভেসে হায় এলি অসহায় কোথায় পথ-বেভুল।।
	কোল্ খালি ক’রে কোন্ লতিকার
	নিভাইয়া নয়নের জ্যোতি কা’র,
বনের কুকুম অকূল পাথারে খুঁজিয়া ফিরিস্ কূল।।
ভবনের স্নেহ নারিল রাখিতে ঠেলে ফেলে দিল যা’রে,
সারা ভুবনের স্নেহ কি কখনো তাহারে ধরিতে পারে।
	জল নয়, তোর জননী যে ভুঁই
	অভিমানী! সেথা চল্ ফিরে তুই,
ধূলিতেও যদি ঝরিস্ সেথায় স্বর্গ সেই অতুল।।

বাণী

ওগো পিয়া তব অকরুণ ভালোবাসা।
অন্তরে দিল বিপুল বিরহ, কবিতায় দিল ভাষা।।
	মোর গানে দিল সুর
	করুণ ব্যথা বিধুর,
বাণীতে দিল সুদূর স্বর্গের পিপাসা।।
তুমি ভালো করিয়াছ ভালোবাস নাই মোরে,
রাখ নাই ধ’রে আমারে তোমার ক’রে।
	মম বিরহের বেদনাতে
	তাই ত্রিভুবন কাঁদে সাথে,
ভুলেছি সবারে চেয়ে তোমারে পাবার আশা।।

বাণী

ওগো মাগো আজো, বেঁচে আছি, তোরই প্রসাদ পেয়ে।
তোর দয়াময়ী অন্নপূর্ণা, তোরই অন্ন খেয়ে॥
	কবে কখন খেলার ছলে,
	ডেকেছিলাম শ্যামা ব’লে;
সেই পুণ্যে ধন্য আমি, আজ তোরই নাম গেয়ে॥
পাপী হয়েও পাই আমি তাই, যখন যাহা চাই।
	দুঃখে শোকে বিপদ ঝড়ে,
	বাঁচাস্ মা তুই বক্ষে ধ’রে;
দয়াময়ী নাই কেহ মা, ভবানী তোর চেয়ে॥