বাণী

ওরে ও-স্রোতের ফুল!
ভেসে ভেসে হায় এলি অসহায় কোথায় পথ-বেভুল।।
	কোল্ খালি ক’রে কোন্ লতিকার
	নিভাইয়া নয়নের জ্যোতি কা’র,
বনের কুকুম অকূল পাথারে খুঁজিয়া ফিরিস্ কূল।।
ভবনের স্নেহ নারিল রাখিতে ঠেলে ফেলে দিল যা’রে,
সারা ভুবনের স্নেহ কি কখনো তাহারে ধরিতে পারে।
	জল নয়, তোর জননী যে ভুঁই
	অভিমানী! সেথা চল্ ফিরে তুই,
ধূলিতেও যদি ঝরিস্ সেথায় স্বর্গ সেই অতুল।।

বাণী

ও কে সোনার চাঁদ কাঁদে রে হেরা গিরির ’পরে।
শিরে তাঁহার লক্ষ কোটি চাঁদের আলো ঝরে।।
কী অপরূপ জ্যোতির ধারা নীল আসমান হ’তে
			নামে বিপুল স্রোতে,
হেরা পাহাড় বেয়ে বহে সাহারা মরু পথে,
সেই জ্যোতিতে দুনিয়া আজি ঝলমল করে।।
আগুন বরণ ফেরেশ্‌তা এক এসে,
‘খোদার হাবিব, জাগো জাগো’, বলে হেসে হেসে।
নবুয়তের মোহর দিল বাজুতে তাঁর বেঁধে
তাজিম ক’রে কদমবুসি করে কেঁদে কেঁদে,
সেই নবীরই নামে আজি দুনিয়া দরুদ পড়ে।।

বাণী

ওরে ও দরিয়ার মাঝি! মোরে নিয়ে যা রে মদিনা।
তুমি মুর্শিদ হ'য়ে পথ দেখাও ভাই আমি যে পথ চিনি না।।  
	আমার প্রিয় হজরত সেথায়
	আছেন নাকি ঘুমিয়ে ভাই,
আমি প্রাণে যে আর বাঁচি না রে আমার হজরতের দরশ বিনা।। 
নদী নাকি নাই ও দেশে, নাও না চলে যদি —
আমি চোখের সাঁতার পানি দিয়ে বইয়ে দেব নদী। 
	ঐ মদিনার ধূলি মেখে
	কাঁদবো 'ইয়া মোহাম্মদ' ডেকে ডেকে রে —
কেঁদেছিল কারবালাতে, (ওরে) যেমন বিবি সাকিনা।।

বাণী

ও-রে শাদা মেঘ! তোর পাখা নাই তবু কেমনে
ভাসিয়া বেড়াস্ শান্ত শারদ-গগনে।।
	আমি তোর মত লঘু হ’ব
	আমি ধূলির ঊর্দ্ধে রব,
আমি দেখিয়া গৌরী-শঙ্কর-শোভা গলিয়া পড়িব চরণে।।
আমি নিশির কপোলে শিশিরের স্বেদ হেরিব,
আমি রংধনু হ’য়ে চাঁদের চাহনি ঘেরিব।
	সে কি নিশীথে বাঁশিতে ডাকে তাই
	সে কি জানে, মেঘ হতে কেন চাই,
যদি আমার বুকে দামিনী পায় — সে নবীন নীরদ-বরণে।।

বাণী

ওগো ঠাকুর! বলতে পার কোথায় তোমার দেশ।
সেই দেশেতে যাব আমি করবো দুখের শেষ।।
	কাঁদবো তোমার পায়ে ধ’রে
	আমার বাবা-মায়ের তরে,
দেখতে নারি ঠাকুর, তাদের আর এ দীন বেশ।।

নাটকঃ ‘নরমেধ’

বাণী

ও বন্ধু! দেখ্‌লে তোমায়, বুকের মাঝে জোয়ার-ভাঁটা খেলে।
আমি এক্‌লা ঘাটে কুলবধূ কেন তুমি এলে
			বন্ধু, কেন তুমি এলে।।
ও বন্ধু, আমার অঙ্গে কাঁটা দিয়ে ওঠে বাজাও যখন বাঁশি
আমি খিড়্‌কি দুয়ার দিয়ে বন্ধু, জল ভরিতে আসি
ভেসে’ নয়ন-জলে ঘরে ফিরি ঘাটে কলস ফেলে।।
আমার পাড়ায়, বন্ধু, তোমার নাম যদি নেয় কেউ
বুকে আমার দুলে ওঠে পদ্মা নদীর ঢেউ বন্ধু পদ্মা নদীর ঢেউ।
	ওগো ও চাঁদ, এনো না আর
	দু’কূল-ভাঙা এমন জোয়ার
কত ছল ক’রে জল লুকাই চোখের কাঁচা কাঠে আগুন জ্বেলে।।