বাণী

সন্ধ্যা নেমেছে আমার বিজন ঘরে, তব গৃহে জ্বলে বাতি।
ফুরায় তোমারি উৎসব নিশি সুখে, পোহায় না মোর রাতি।।
	আমার আশার ঝরা ফুলদল দিয়া,
	তোমার বাসর শয্যা রচিছ প্রিয়া
তোমার ভবনে আলোর দীপালি জ্বলে, আঁধার আমার সাথী।
					পোহায় না মোর রাতি।।
ঘুমায়ে পড়েছে আমার কাননে কুহু, নীরব হয়েছে গান;
তোমার কুঞ্জে গানের পাখিরা তুলিয়াছে কলতান।
	পৃথিবীর আলো মোর চোখে নিভে আসে,
	বাজিছে বাঁশরি তোমার মিলন-রাসে;
ওপারের বাঁশি আমায় ডাকিবে কবে, আছি তাই কান পাতি।
					পোহায় না মোর রাতি।।

বাণী

সখি, সে হরি কেমন বল্‌। 
নাম শুনে যা’র এত প্রেম জাগে চোখে আনে এত জল।।
সখি	সে কি আসে এই পৃথিবীতে
	গাহি’ রাধা নাম বাঁশরিতে?
যা’র অনুরাগে বিরহ-যমুনা হয়ে ওঠে চঞ্চল।।
তা’রে কি নামে ডাকিলে আসে
কোন্‌ রূপ কোন্‌ গুন পাইলে, সে রাধা সম ভালোবাসে?
	সখি শুনেছি সে নাকি কালো
	জ্বালে কেমনে সে এত আলো,
মায়া ভুলাইতে মায়াবী সে নাকি করে গো মায়ার ছল।।

বাণী

সংসারেরি দোলনাতে মা ঘুম পাড়িয়ে কোথায় গেলি?
আমি অসহায় শিশুর মত ডাকি মা দুই বাহু মেলি’।।
	অন্য শক্তি নাই মা তারা
	‘মা’ বুলি আর কান্না ছাড়া,
তোরে না দেখলে কেঁদে উঠি, আবার কোল পেলে মা হাসি খেলি।।
(ও মা) ছেলেকে তোর তাড়ন করে মায়ারূপী সৎমা এসে।
আবার ছয় রিপুতে দেখায় মা ভয় পাপ এলো পুতনার বেশে।১
	মরি ক্ষুধা তৃষ্ণাতে মা
	শ্যামা আমার কোলে নে মা।
আমি ক্ষণে চমকে উঠি ভাবি দয়াময়ী মা কি এলি।।

১. পাপবর্গী এলো দেশে।

বাণী

সুন্দর অতিথি এসো, এসো, কুসুম-ঝরা বনপথে,
তোমার আশায় মুকুলগুলি চেয়ে আছে প্রভাত হ'তে।।
	তোমার আসার অনুরাগে
	পাতায় পাতায় শিহর লাগে
কণ্ঠে কুহুর কুজন জাগে ভাসলো আকাশ আলোর স্রোতে।।
চলতে যদি বেদনা পায় তব কোমল চরণ-কমল
বন-বীথিকার পথ-ধূলি ঝরা পল্লব পাপড়ি-দল।
	পেয়ে আজি আসার আভাস
	উতল হ'ল মন্দ বাতাস
চেয়ে আছে উদাসী আকাশ আসবে কবে সোনার রথে।।

বাণী

সকাল হ'ল শোন রে আজান
	ওঠ রে শয্যা ছাড়ি'
তুই মসজিদে চল দ্বীনের কাজে
	ভোল দুনিয়াদারি।।
ওজু করে ফেল রে ধুয়ে
	নিশীথ রাতের গ্লানি
সিজদা করে জায়নামাজে
	ফেল রে চোখের পানি;
খোদার নামে সারাদিনের
	কাজ হবে না ভারী।।
নামাজ প'ড়ে দু'হাত তুলে
	প্রার্থনা কর তুই -
ফুল-ফসলে ভ'রে উঠুক
	সকল চাষির ভূঁই
সকল লোকের মুখে হোক
	আল্লার নাম জারী।।
ছেলে-মেয়ে সংসার-ভার
	সঁপে দে আল্লারে
নবীজীর দোয়া ভিক্ষা কর
	কর রে বারে বারে;
তোর হেসে নিশি প্রভাত হবে
	সুখে দিবি পাড়ি।।

বাণী

সখি কেন এত সাজিলাম যতন করি
জাগিয়া পোহাল হায় বিভাবরী।।
	চাহিতে মুকুর পানে
	সজ্জা লজ্জা হানে।
অভিমানে লুটাইয়া কাঁদে কবরী।।
সখি লুকায়ে হাসিবে সবে দেখিয়া মোরে
বল এ মুখ দেখাব আমি কেমন করে?
	সখি ঐ দেখ লোক জাগে
	কেহ জাগিবার আগে
নিয়ে চল যমুনাতে ডুবিয়া মরি।।