বাণী

ফাগুন ফুরাবে যবে —
উঠিবে দীরঘ শ্বাস চম্পার বনে
কোয়েলা নীরব হবে।।
আমারে সেদিন যদি স্মরণে আসে
বেদনা জাগে ঝরা ফুল সুবাসে
আমার স্মৃতি যত ঝরা পাতার মত
ফেলিয়া দিও নীরবে।।
যবে বাসর নিশি ফুরাবে
রাতের মিলন-মালা প্রভাতে মলিন হবে;
সুখ শশী অস্ত যাবে —
আসিবে জীবনে তব বৈশাখী মলিন হবে;
লুটাবে পথের' পরে ভেঙে যাবে ঘর
সেদিন স্মরণে তব আসিবে কি তাহারে
গৃহহীন করিয়াছ যাহারে ভবে।।

বাণী

চপল আঁখির ভাষায়, হে মীনাক্ষী ক’য়ে যাও।
না-বলা কোন্ বাণী বলিতে চাও॥
	আড়ি পাতে নিঝ্‌ঝুম বন
	আঁখি তুলি’ চাহিবে কখন,
আঁখির তিরস্কারে ঐ বন-কান্তারে ফুল ফোটাও॥
নিটোল আকাশ টোল খায় তোমারি চাওয়ায়, হে মীনাক্ষী,
নদী-জলে চঞ্চল সফরী লুকায়, হে মীনাক্ষী!
	ওই আঁখির করুণা
	ঢালো রাগ অরুণা,
আঁখিতে আঁখিতে ফুল-রাখি বেঁধে দাও॥

বাণী

তুমি যখন এসেছিলে তখন আমার ঘুম ভাঙেনি
মালা যখন চেয়েছিলে বনে তখন ফুল জাগেনি।।
	আমার আকাশ আঁধার কালো
	তোমার তখন রাত পোহালো
তুমি এলে তরুণ-আলো তখন আমার মন রাঙেনি।।
ওগো রুদ্ধ ছিল মোর বাতায়ন পূর্ণ শশী এলে যবে,
আঁধার-ঘরে একেলা জাগি হে চাঁদ আবার আসবে কবে।
	আজকে আমার ঘুম টুটেছে
	বনে আমার ফুল ফুটেছে
ফেলে যাওয়া তোমারি মালায় বেঁধেছি মোর বিনোদ-বেনী।।

বাণী

যাও মেঘদূত, দিও প্রিয়ার হাতে
আমার বিরহ–লিপি লেখা কেয়া পাতে।।
আমার প্রিয়ার দিরঘ নিশাসে
থির হয়ে আছে মেঘ যে–দেশেরই আকাশে
আমার প্রিয়ার ম্লান মুখ হেরি’
ওঠে না চাঁদ আর যে–দেশে রাতে।।
পাইবে যে–দেশে কুন্তল–সুরভি বকুল ফুলে
আমার প্রিয়া কাঁদে এলায়ে কেশ সেই মেঘনা–কূলে।
স্বর্ণলতার সম যার ক্ষীণ করে
বারে বারে কঙ্কণ চুড়ি খুলে পড়ে
মুকুল’ বয়সে যথা বরষার ফুল–দল
বেদনায় মুরছিয়া আছে আঙিনাতে।।

বাণী

এসো মাধব এসে পিও মধু।
এসো মাধবী লতার কুঞ্জ বিতানে (মধু) মাধবী রাতে এসো বঁধু।।
এসো মৃদুল মধুর পা ফেলে
এসো ঝুমুর ঝুমুর ঘুমুর বাজায়ে শ্রবণে অমিয়া মধু ঢেলে,
এসো বাজায়ে বাঁশরি যে সুর-লহরী শুনে কুল ভোলে ব্রজবধূ।।
এসো নিবিড় নীরদ বরণ শ্যাম
তমাল কাননে কাজল বুলায়ে দুলায়ে চাঁচর চিকুর দাম,
এসো বামে হেলায়ে শিখী-পাখা ত্রিভঙ্গ ঠামে এসো বঁধু।।
এসো নারায়ণ এসো অবতার
পার্থসারথি বেশে এসো পাপ কুরুক্ষেত্রে আরবার,
তুমি মহাভারতের ভাগ্যবিধাতা গীতি উদ্গাতা নহ শুধু।।

বাণী

[সংলাপঃ পুরুষ: ঘরে কে গো? (দরজায় টোকার শব্দ)
বলি ঘরে কে? (আবার টোকার শব্দ) শালাজ নাকি —
ও হো-হো-হো-হো ...]
পুরুষ	:	ঘরে কে গো? বলি ঘরে কে, শালাজ নাকি?
		এ যে মোর গোয়ালের গাই।
স্ত্রী	:	ও ছোট ঠাকুর ঝি, ওলো আয় আয়,
		দেখে যা এসেছে নন্দাই। এ যে মোর ননদের ভাই।
পুরুষ	:	দেখ, রাত্রি জেগে গুনব কত চালের কড়ি কাঠ
স্ত্রী	:	তাইতো, আগে হয়নি সারা আমার ঘর কন্নার পাট।
পুরুষ	:	তোমার কাজের মাথায় মারো লাঠি
স্ত্রী	:	আমি নিয়ে শীতল পাটি মাস-শাশুড়ির পা টিপিতে যাই।
পুরুষ	:	ওগো শুনছো! শোনো শোনো শোনো না — সত্যি সত্যি চললে,
		নতুনতর ঝুমকোর এক নমুনা এনেছি (আমি)।
স্ত্রী	:	অ্যা, তাই নাকি!
পুরুষ	:	হ্যা — গো — হ্যা।
স্ত্রী	:	কাল চাল ডাল বাছবো, চল এই আমি আসিতেছি
		ওগো এই আমি আসিতেছি
পুরুষ	:	না না, ও তোমায় পা টিপিতে বলেছিলেন কি ভাবিবেন মাসি
স্ত্রী	:	আমার গা করছে বমি বমি তাকে বলে আসি।
পুরুষ	:	এমন শ্যাকরার মত বিন্দে দূতি কলিকালের বৃন্দাবনে নাই॥
		বেঁচে থাক বাবা শ্যাকরার পো হুল্লোড় ঘটালে তবে ছাড়লে॥