গভীর নিশীথে জাগি’ খুঁজি তোমারে
বাণী
গভীর নিশীথে জাগি’ খুঁজি তোমারে। দূর গগনে প্রিয় তিমির-‘পারে।। জেগে যবে দেখি হায় তুমি নাই কাছে আঙিনাতে ফুটে’ ফুল ঝ’রে পড়ে আছে, বাণ-বেঁধা পাখি সম আহত এ প্রাণ মম — লুটায়ে লুটায়ে কাঁদে অন্ধকারে।। মৌন নিঝুম ধরা, ঘুমায়েছে সবে, এসো প্রিয়, এই বেলা বক্ষে নীরবে। কত কথা কাঁটা হ’য়ে বুকে আছে বিঁধে কত আভিমান কত জ্বালা এই হৃদে, দেখে যাও এসো প্রিয় কত সাধ ঝ’রে গেল — কত আশা ম’রে গেল হাহাকারে।।
গগনে কৃষ্ণ মেঘ দোলে
বাণী
গগনে কৃষ্ণ মেঘ দোলে – কিশোর কৃষ্ণ দোলে বৃন্দাবনে। থির সৌদামিনী রাধিকা দোলে নবীন ঘনশ্যাম সনে; দোলে রাধা শ্যাম ঝুলন-দোলায় দোলে আজি শাওনে।। পরি’ ধানি রঙ ঘাঘরি, মেঘ রঙ ওড়না গাহে গান, দেয় দোল গোপীকা চল-চরণা, ময়ূর নাচে পেখম খুলি’ বন-ভবনে।। গুরু গম্ভীর মেঘ-মৃদঙ্গ বাজে আঁধার অশ্রুর তলে, হেরিছে ব্রজের রসলীলা অরুন লুকায়ে মেঘ-কোলে। মুঠি মুঠি বৃষ্টির ফুল ছুঁড়ে হাসে দেব-কুমারীরা হেরে অদূর আকাশে, জড়াজড়ি করি‘ নাচে, তরুলতা উতলা পবনে।।
গভীর ঘুম ঘোরে স্বপনে শ্যাম-কিশোরে
বাণী
গভীর ঘুম ঘোরে স্বপনে শ্যাম-কিশোরে হেরে’ প্রেমময়ী রাধা। রাধারে ত্যজিয়া আঁধার নিশীথে চন্দ্রার সাথে বাঁধা।(শ্যাম-চাঁদ) যেন চাঁদের বুকে কলঙ্ক গো নির্মল শ্যাম-চাঁদের বুকে চন্দ্রা যেন কলঙ্ক গো।। অরুণ নয়ানে মলিন বয়ানে জাগিল অভিমানিনী (ভাবে) রাধার হৃদয় আধার যাহার সে কেন ভজে কামিনী। শ্রীরাধার মান ভয়হীন, তাই শ্রীরাধা অভিমানিনী, পরমশুদ্ধ প্রেম শ্রীরাধার, নির্ভয় অভিমানিনী।। কৃষ্ণকেও সে ভয় করে না, নির্ভয় অভিমানিনী রাধা বুঝতে নারে গো চির-সরল অমৃতময় গরল কেন হয় বুঝতে নারে গো কাঁপে থরথর সারা কলেবর, ভাবে রাধা একি বিপরীত। প্রেম ভিক্ষু কহে, বুঝি বুঝিবার নহে চঞ্চল শ্যামের রীত।। বোঝা যে যায় না চঞ্চল শ্যামের রীত অবুঝ মনের বোঝা যায় না তাতে তবু কখন সে রাধার, কখন সে চন্দ্রার।।
গীতিচিত্র: ‘অভিমানিনী’
গ্রামের শেষের মাঠের পথে
বাণী
গ্রামের শেষের মাঠের পথে গান গেয়ে কে যায় একা বাউল আনমনা। তার সুরে সবুজ ধানের ক্ষেত্রে ঢেউ খেলিয়া যায় গায় সাথে চপল-ঝরনা।। চলে নূপুর মুখর পায় সুর বাজিয়ে একতারায়, তাথৈ তাথৈ হাততালি দেয় সাথে তালবনা।। শান্ত নদীর কূলে হঠাৎ জোয়ার উঠে দুলে, বালুচরে চম্কে চখা চাহে নয়ন তুলে’। ওঠে রেঙে আকাশ কোল্ লাগে শাখায় শাখায় দোল্ লাগে দোল্, মনের মাঝে এঁকে সে যায় সুরের আল্পনা।।