বাণী

হিন্দু আর মুসলিম মোরা দুই সহোদর ভাই।
এক বৃন্তে দু’টি কুসুম এক ভারতে ঠাঁই॥
সৃষ্টি যাঁর মুসলিম রে ভাই হিন্দু সৃষ্টি তাঁরি
মোরা বিবাদ ক’রে খোদার উপর করি যে খোদকারি।
শাস্তি এত আজ আমাদের হীন-দশা এই তাই॥
দুই জাতি ভাই সমান মরে মড়ক এলে দেশে
বন্যাতে দুই ভাইয়ের কুটির সমানে যায় ভেসে।
দুই জনারই মাঠেরে ভাই সমান বৃষ্টি ঝরে —
সব জাতিরই সকলকে তাঁর দান যে সমান করে
চাঁদ সুরুযের আলো কেহ কম-বেশি কি পাই
বাইরে শুধু রঙের তফাৎ ভিতরে ভেদ নাই॥

বাণী

(হায় গো) 	ভালোবেসে অবশেষে কেঁদে দিন গেল।
		ফুল-শয্যা বাসি হল, বঁধূ না এলো।।
		শুকাইল পানের খিলি বাঁটাতে ভরা,
		এ পান আমি কারে দিব সে বঁধূ ছাড়া।
(হায় গো) 	নীলাম্বরী শাড়ি ছি ছি পরলেম মিছে লো।।
		এবার ধ’রে দিস্ যদি তায়
		রাখ্‌ব বেঁধে বিনোদ খোঁপায়,
		কাঙালে পাইলে রতন রাখে যেমন লো।।
		সোঁদা-মাখা নিস্‌নে কেশে, গন্ধে যে লো তার
		মনে আনে চন্দন-গন্ধ সোনার বঁধূয়ার।
		এত দুঃখ ছিল আমার এই বয়সে লো।।

বাউল

বাণী

হয়ত আমার বৃথা আশা তুমি ফিরে আসবে না।
আশা-তরী ডুববে কূলে দুখের স্রোতে ভাসবে না।।
	হয়তো তুমি এমনি ক'রে
	পথ চাওয়াবে জনম ভ'রে
রইবে দূরে চিরতরে সামনে এসে হাসবে না।।
কামনা মোর রইলো মনে রূপ ধ'রে তা উঠলো না;
বারে বারে ঝরলো মুকুল ফুল হয়ে তা ফুটলো না।
	অবুঝ এ প্রাণ তবু কেন
	তোমার ধ্যানেই বিভোর হেন
তুমি চির চপল নিঠুর - জানি, ভালোবাসবে না।।

বাণী

হাওয়াতে নেচে’ নেচে’ যায় ঐ তটিনী।
পাহাড়ের পথ-ভোলা কিশোরী নটিনী।।
		তরঙ্গ আঁচল দুলায়ে
		বনভূমির মন ভুলায়ে,
চলেছে চপল পায়ে একাকিনী উদাসিনী।।
এঁকে বেঁকে থম্‌কে গিয়ে,
হরিণীরে চম্‌কে দিয়ে।
ছুটিয়া যায় সুদূরে
আয় আয় বলি, ডাকে কে কুলের বধূরে,
নেচে চলে পথ বেভুল ঘর-ছাড়া বিবাগিনী।।

বাণী

হে পাষাণ দেবতা!
মন্দির দুয়ার খোল কও কথা।।
দুয়ারে দাঁড়ায়ে শ্রান্তি-হীন দীর্ঘ দিন,
অঞ্চলের পূষ্পাঞ্জলি শুকায়ে যায় উষ্ণ বায়;
আঁখি দীপ নিভিছে হায়, কাঁপিছে তনুলতা।
শুভ্রবাসে পূজারিণী, দিন শেষে —
গোধুলির গেরুয়া রঙ হের প্রিয় লাগে এসে;
খোল দ্বার শরণ দাও, সহে না আর নীরবতা।।

বাণী

হোরি খেলে নন্দলালা
প্রেমের রঙে মাতোয়ালা॥
বিশ্বরাধা সে সাথে রঙে খেলায় মাতে
রঙে ত্রিভুবন ছায় রাঙা আলোক আবির ছড়ায়
	হোরি রবি-শশী থালা॥
আজি বনে বনে মনে মনে হোরি
মনের মরুতে লতায় তরুতে রাঙা ফুল ফোটে মরি মরি।
আজি প্রাণে প্রাণে ফুল দোল
দোল পূর্ণিমা রাতি রাঙা ফুল তারা বাতি
	ধরণীতে আকাশে জ্বালা॥