বাণী

	শ্যামা বড় লাজুক মেয়ে কেবলই সে লুকাতে চায়।
	আলো-আঁধার পর্দা টেনে বালিকা সে পালিয়ে বেড়ায়।।
		নিখিল ভুবন আছে তারে ঘিরে
		আমার মেয়ে তবু বসন খুঁজে ফিরে,
	তারে যে দেখে সে এক নিমেষে তারি মাঝে লয় হয়ে যায়।।
	তাই কেবলি সে লুকাতে চায়।।
	কোটি শিব ব্রহ্মা হরি অনন্তকাল গভীর ধ্যানে,
তার	সে লুকোচুরি খেলায় পায় না দিশা পায় না মনে।
		রবি শশী গ্রহতারার ফাঁকে
		যে দেখেছে পালিয়ে যেতে মাকে,
(সে)	আপনাকে আর পায় না খুঁজে মায়াবিনীর মহামায়ায়।।

বাণী

শ্যামা নামের ভেলায় চ'ড়ে কাল-নদীতে দুলি।
ঘাটে ঘাটে ঘটে ঘটে (আমি) সুরের লহর তুলি।।
	কাল-তরঙ্গে ভাসিয়ে অঙ্গ,
	দেখে বেড়াই কত রঙ্গ,
কায়ায় কায়ায় রঙ-বেরঙের (ওরে) শত মায়ার ঠুলি।।
জন্মান্তর ঘাটে ঘাটে ভাসি উঠি ডুবি
মা নিশিদিন ডাকে আমায়, 'ওরে আয় আমারে ছুঁবি'।
	মোরে কাল-স্রোতে ভাসানের ছলে
	মা লীলা দেখান নাট-মহলে
ওই খেলার (ছলে) শেষে আপনি এসে (মা) বক্ষে নেবেন তুলি।।

বাণী

শ্যামা তোর নাম যার জপমালা তার কি মা ভয় ভাবনা আছে।
দুঃখ-অভাব-রোগ-শোক-জরা লুটায় মা তার পায়ের কাছে॥
	যার চিত্ত নিবেদিত তোর চরণে
	ওমা কি ভয় তাহার জীবনে মরণে।
যেমন খেলে শিশু মায়ের সম তোর অভয় কোলে সে তেমনি নাচে॥
	রক্ষামন্ত্র যার শ্যামা তোর নাম,
	সকল বিপদ তারে করে প্রণাম।
	সদা প্রসন্ন মন তার ধ্যানে মা তোর,
	ভূমানন্দে মা গো রহে সে বিভোর।
তার নিকটে আসিতে নারে কালো কঠোর তব নাম প্রসাদ সে লভিয়াছে॥

বাণী

শ্যামা নামের লাগলো আগুন আমার দেহ ধূপ–কাঠিতে।
যত জ্বলি সুবাস তত ছড়িয়ে পড়ে চারিভিতে।।
		ভক্তি আমার ধূমের মত
		উর্দ্ধে ওঠে অবিরত,
শিব–লোকের দেব–দেউলে মা’র শ্রীচরণ পরশিতে।।
ওগো অন্তর–লোক শুদ্ধ হল পবিত্র সেই ধূপ–সুবাসে,
মা’র হাসিমুখ চিত্তে ভাসে চন্দ্রসম নীল আকাশে।
		যা কিছু মোর পুড়ে কবে
		চিরতরে ভস্ম হবে
মা’র ললাটে আঁকব তিলক সেই ভস্ম–বিভূতিতে।।

বাণী

শ্রাবণ রাতের আঁধারে নিরালা ব’সে আছি বাতায়নে
রেবা নদীর খরস্রোত বহে বেগে আমার মনে॥
		দিগন্তে করুণ কাতর
		শুনি কার ক্রন্দন স্বর
ভেসে বন-মর্মর ঝরঝর সজল উতল পুবালি পবনে॥
বিরহী যক্ষ কাঁদে একাকী কোথায় কোন্ দূর চিত্রকূটে
আমার গানে যেন তার বেদনার সকরুণ ভাষা ফুটে।
		আমার মনের অলকায়
		কোন্ বিরহিণী পথ চায়
মালবিকার আঁখি-ধার ঝরে হায় অঝোর ধারায় মোর নয়নে॥

বাণী

শ্যাম-সুন্দর-গিরিধারী।
মানস মধু-বনে মধুমাধবী সুরে মুরলী বাজাও বনচারী।।
মধুরাতে হে হৃদয়েশ মাধবী চাঁদ হয়ে এসো,
হৃদয়ে তুলিও ভাবেরই উজান রস-যমুনা-বিহারী।।
অন্তর মন্দিরে প্রীতি ফুলশয্যায় বিলাস কর লীলা-বিলাসী,
আঁখির প্রদীপ জ্বালি' শিয়রে জাগিয়া রব শ্যাম, তব রূপ-পিয়াসি।
যত সাধ আশা গেল ঝরিয়া, পর তাই গলে মালা করিয়া;
নূপুর করিব তব চরণে গাঁথি' মম নয়নের বারি।।