বাণী

শুকসারী সম তনু মন মম নিশিদিন গাহে তব নাম।
শুকতারা সম ছলছল আঁখি পথ চেয়ে থাকি ঘনশ্যাম।।
	হে চির সুন্দর আধো রাতে আসি’
	বল বল কে বাজায় আশার বাঁশি,
কেন মোর জীবন-মরণ শ্রীহরি তব শ্রীচরণে সঁপিলাম।
কেন গোপন রোদনের যমুনায় জোয়ার আসে?
কেন নব নীরদ মায়া ঘনায় হৃদি-আকাশে।
	দেখা যদি নাহি দেবে কেন মোরে ডাকিলে
	কেন, অনুরাগ-তিলক ললাটে আঁকিলে
কেন কুহু কেকা সম বিরহ অভিমান অন্তরে কাঁদে অবিরাম।।

বাণী

শিউলি তলায় ভোর বেলায় কুসুম কুড়ায় পল্লী-বালা।
শেফালি পুলকে ঝ’রে পড়ে মুখে খোঁপাতে চিবুকে আবেশ-উতলা।।
		ঘোম্‌টা খুলিয়া তার পিঠে লুটায়
		শিথিল কবরী লুটিছে পায়,
নৃত্যের ভঙ্গে ফুল তোলে রঙ্গে, আধো আঁধার বন তার রূপে উজালা।।
নিলাজ পাঁয়জোরে তার ওঠে ঝঙ্কার রিনিঝিনি, মন কয় চিনি চিনি
		এ কি গো বন-দেবীর সতিনী
শিশির ধরে’ পায় আল্‌তার রঙ্‌ চায় পাখি তারি গান গায় বনে নিরালা।।

বাণী

দ্বৈত	:	শ্রী রঘুপতি রাম
		লহ প্রণাম শ্রী রঘুপতি রাম
		নব দূর্বাদল শ্যাম অভিরাম।
স্ত্রী	:	সুরাসুর কিন্নর যোগী ঋষি নর
পুরুষ	:	চরাচর যে নাম জপে অবিরাম॥
স্ত্রী	:	সরযূ নদীর জল ছল ছল কান্তি
পুরুষ	:	ঢল ঢল অঙ্গ ললাটে প্রশান্তি
স্ত্রী	:	নাম স্মরণে টোটে শোক তাপ ভ্রান্তি
দ্বৈত	:	পদারবিন্দে মূরছিত কোটি কাম॥
স্ত্রী	:	জানকী বল্লভ সুঠাম অঙ্গ
পুরুষ	:	পরশে নিমেষে হয় হরধনু ভঙ্গ
দ্বৈত	:	রাবণ ভয় হরে যাঁহার নাম॥
স্ত্রী	:	পিতৃ সত্যব্রত পালনকারী
পুরুষ	:	চির বল্কলধারী কাননচারী
দ্বৈত	:	প্রজারঞ্জন লাগি সর্বসুখ ত্যাগী
		যে নামে ধরা হল আনন্দধাম॥

বাণী

শ্যাম সুন্দর মন-মন্দিরমে আও আও।
হৃদয়-কুঞ্জমে রাধা নাম কি বন্‌শী শুনাও শুনাও।।
	বহতা যমুনা নয়ন-নীরকে
	আও শ্যাম ওহি যমুনা তীরপে,
বয়ঠি বনঠন ভক্তি-গোপীন কাহে তুম বিল্‌মাও আও আও।।
চঞ্চল মোহন চরণ-কমল পে নুপুর বাজাও,
প্রীতি চন্দন মনকে মেরে লেকে অঙ্গ সাজাও।
	বিরহ কি মৌর পাপিহা বোলে
	প্রেম কি নাইয়া ডগমগ ডোলে,
আও কানাইয়া রাস রচাইয়া মধুর সুরত দেখ্‌লাও, আও আও।।

বাণী

শূন্য আজি গুল-বাগিচা যায় কেঁদে দখিন হাওয়া।
রাঙা গুলের বাজার আজি স্মৃতির কাটায় ছাওয়া।।
ধূলি ঢাকা ফুল সমাধি আজি সে গুলিস্তানে
ছিল যথায় খুশির জলসা বুলবুলির গজল গাওয়া।।
শুকনো পাতায় ছেয়েছে আজ সাকির চরণ রেখা
নাহি সেথায় বঁধুর লাগি বঁধূর আসা-যাওয়া।।
নাহি মিঠা পানির নহর আছে প'ড়ে বালুচর
এ যেন গো হৃদয়ের ভরা-ডুবির পথ বাওয়া।।

বাণী

শাওন আসিল ফিরে সে ফিরে এল না
বরষা ফুরায়ে গেল আশা তবু গেল না।
ধানী রং ঘাগরি, মেঘ–রং ওড়না
পরিতে আমারে মাগো, অনুরোধ ক’রো না
কাজরির কাজল মেঘ পথ পেল খুঁজিয়া
সে কি ফেরার পথ পেল না মা, পেল না।।
আমার বিদেশিরে খুঁজিতে অনুক্ষণ
বুনো হাঁসের পাখার মত উড়ু উড়ু করে মন।
অথৈ জলে মাগো, মাঠ–ঘাট থৈ থৈ
আমার হিয়ার আগুন নিভিল কই?
কদম–কেশর বলে, ‘কোথা তোর কিশোর’,
চম্পাডালে ঝুলে শূন্য দোলনা।।