বাণী

যদি আমি তোমায় হারাই, তুমি যেয়ো না নাথ হারিয়ে।
আমি পথ হারালে ধ’রো আমায় আঁধারে হাত বাড়িয়ে।।১
	ঝড়-বাদলে নিশীথ-রাতে
	লুকিয়ে চ’লো আমার সাথে,
ফুলের কাছে নিয়ে যেয়ো কাঁটার বাধা ছাড়িয়ে।।
তোমায় দেওয়া এ প্রাণ যদি অন্যে চাহি দানিতে,
তুমি যেন ‘না’ বোলো না কঠোর আঘাত হানিতে।
	চঞ্চল মোর চিত্ত যেন
	তোমার পায়ে টেনে এনো
তোমার পূজা শিখায়ো নাথ তুমিই পাশে দাঁড়িয়ে।।

১. অন্ধকারে ধরো আমায় সহসা হাত বাড়িয়ে।।

বাণী

যদি	শালের বন হ’ত শালার বোন,
	ক’নে বউ হ’ত ঐ গৃহেরই কোণ,
ছেড়ে	যেতাম না গো শালার বোন,
আমি	থাকতাম পড়ে সদা, খেতাম না গো, শালার বোনথ —
	বনে হারিয়ে যেতাম,
	শালার বোন ঐ বৃন্দাবনে না হয় চারিয়ে যেতাম —
	দাদা গো, ওগো দাদা —
আর	মাকুন্দ হত যদি কুন্দবালা,
হ’ত	দাড়িম্ব সুন্দরী দাড়িওয়ালা,
আমি	ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে তার —
	জয়নাথ তরকনাথ বলে আমি ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে,
বাবা	দুগ্‌গা ব’লে আমি ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে তার —
	দাদা গো, ওগো দাদা —
আহা	বাচ্চা হইত যদি চৌবাচ্চায়
নিতি	পানকৌড়ি হ’য়ে ডুবে থাকিতাম তায়,
যদি	দামড়ার ল্যাজ হ’ত কুন্তল দাম
	বেণী রূপে ল্যাজ ধ’রে মাঠে দাঁড়াতাম — ঘুরে যে বেড়াতাম, তার
	আমি ল্যাজ ধ’রে ঘুরে যে বেড়াতাম, দাদা গো —
যদি	ভাগ্যগুণে এক মিলিল শালী —
বাবা	বিশাল বপু তার সে যে বিশালী,
ওযে	শালী নয় শালী নয়, শাল্মলী তরু সম
	সে যে বিশালী গো, শাল্মলী তরু সম সে যে বিশালী গো —
আহা	চিম্‌টি শালীর হ’ত বাবলা কাঁটা,
হ’ত	শর-বন তার খ্যাংড়া ঝ্যাঁটা
	খ্যাংড়া মেরে বিষ ঝেড়ে যে দিত গো —

বাণী

	যাও যাও তুমি ফিরে এই মুছিনু আঁখি
	কে বাঁধিবে তোমারে হায় গানের পাখি॥
মোর	আজ এত প্রেম আশা এত ভালোবাসা
	সকলি দুরাশা আজ কি দিয়া রাখি॥
	তোমার বেঁধেছিল নয়ন শুধু এ রূপের জালে
	তাই দুদিন কাঁদিয়া হায় এ বাঁধন ছাড়ালে।
	আমার বাঁধিয়াছে হিয়া আমি ছাড়াব কি দিয়া
	আমার হিয়া তো নয়ন নহে ও সে ছাড়ে না কাঁদিয়া,
	ওগো দুদিন কাঁদিয়া।
	এই অভিমান জ্বালা মোর একেলারি কালা
	ম্লান মিলনেরি মালা দাও ধূলাতে ঢাকি॥

বাণী

যে নামে মা ডেকেছিল সুরথ আর শ্রীমন্ত তোরে।
সেই নাম তুই শিখিয়ে দে মা, ডাকব আমি তেমনি ক’রে।।
	বেদ-পুরাণে যে নাম শুনি
	যে নাম জপে ঋষি-মুনি
সেই নাম দে, যে নাম নিতে বক্ষ ভাসে অশ্রু-নীরে।।
ভয় যদি তোর ভক্তি দিতে, কর মা অসুর দানব মোরে
আসবি যখন শাস্তি দিতে, দেখব তোরে নয়ন ভরে।।
	তোর হাতে মা মরণ হলে
	ঠাঁই পাব যে তোরই কোলে
আঘাত করে ছেলেকে মা কাঁদে যেমন বক্ষে ধরে।।

বাণী

যে	অবহেলা দিয়ে মোরে করিল পাষাণ।
সখি	কেন কেঁদে ওঠে তারি তরে মোর প্রাণ।।
	যে ফুল ফুটায়ে তার মধু নিল না
মোরে	ধরার ধূলিতে এনে ধরা দিল না,
কেন	তার তরে বুকে এত জাগে অভিমান।।
মোর	প্রেম-অঞ্জলি সে যত যায় দলি’
তারে	তত জড়াতে চাই, শ্যাম-সুন্দর বলি’,
	চাঁদ সে যে আকাশের সে ধরা দেয় না
তবু	চকোরীর ভুল হয় নাকো অবসান।।

বাণী

যে ব্যথায় এ অন্তর-তল নিশিদিন উঠিছে দুলে'।
তারি ঢেউ এ সঙ্গীতে মোর মুরছায় সুরের কূলে।।
	ভালোবাসা তোমরা যারে
	দু'দিনেই ভোলো গো তারে (হায়)
শরতের সজল মেঘ-প্রায় কেঁদে যাও নিমেষে ভুলে।।
	কঠিন পুরুষেরি মন
	গলিয়া বহে গো যখন
বহে সে নদীর মতন চিরদিন পাষাণ-মূলে।।
আলোর লাগি' জাগে ফুল, নদী ধায় সাগরে যেমন,
চকোর চায় চাঁদ, চাতক মেঘ, যারে চায় তায় চাহে এই রে মন।
নিয়ে যায় সুদূর অমরায় পূজে তায় বাণী-দেউলে।।