বাণী

ফিরে যা সখি ফিরে যা ঘরে
থাকিতে দে লো এ পথে পড়ে
যে পথ ধরে গিয়াছে হরি চলি’
আমি যাব না আর গোকুলে,
সখি শিশিরে আর ভয় কি করি ভেসেছি যবে অকূলে
সখি দিসনে লো দিসনে লো রাখ গোপী-চন্দন,
চন্দনে জুড়ায় না প্রাণের ক্রন্দন।
দ্বিগুণ বাজায় জ্বালা নব মালতী-মালা,
ও যে মালা নয়, মনে হয় সাপিনীর বন্ধন।।
সখি যাহার লাগিয়া বসন ভূষণ, সেই গেল যদি চলে
কি হবে এ ছার ভূষণের ভার ফেলে দে যমুনা-জলে।
সকলের মায়া কাটায়েছি সখি, টুটিয়াছে সব বন্ধন,
যেতে দে আমায়, যথা মথুরায় বিহরে নন্দ-নন্দন।।
দেখব তারে, রাজার সাজে দেখব তারে
রাজার সাজে কেমন মানায় গো-রাখা রাখাল-রাজে।

বাণী

রুমুঝুম রুমুঝুম্ কে এলে নূপুর পায়
ফুটিল শাখে মুকুল ও রাঙা চরণ-ঘায়।।
সে নাচে তটিনী-জল টলমল টলমল,
বনের বেণী উতল ফুলদল মুরছায়।।
বিজরি-জরীর আঁচল ঝলমল ঝলমল
নামিল নভে বাদল ছলছল বেদনায়।
তালীবন থৈ তাথৈ করতালি হানে ঐ, (হায় রে হায়)
‌‌‘কবি, তোর তমালী কই’ — শ্বসিছে পুবালি-বায়।।

বাণী

সুবল সখা! এই দেখ্ এই পথে তাহার, সোনার নূপুর আছে পড়ে,
	বৃন্দাবনের বনমালী গেছে রে ইে পথ ধরে।
	হরি চন্দন গন্ধ পথে পথে পাই
	ঝরা ফুলে ছেয়ে আছে বনবীথি তাই।
	ভ্রমে ভ্রমর শ্রীচরণ-চিহ্ন ঘিরে
	রাঙ্গা কমল ভ্রমে, ভ্রমে শ্রীচরণ-চিহ্ন ঘিরে।
	ভাসে বাঁশির বেদন তার মৃদু সমীরে।
	তারে খুঁজবো কোথায় — সেই চোরের রাজায় খুঁজবো কোথায়?
	তারে খুঁজলে বনে, মনে লুকায়, চোরের রাজায় খুঁজবো কোথায়?
	সুবল রে —
	শ্রীদাম দেখেছে তারে রাখাল দলে,
	গোপিনীরা দেখিয়াছে যমুনা-জলে।
	বাঁশরি দেখেছে তারে কদম শাখায়
	কিশোরী দেখেছে তারে ময়ূর পাখায়।
	বৃন্দা এসেছে দেখে রাজা মথুরায়,
	যশোদানন্দ বলে কোলে সে ঘুমায়।
	জানি না কোথায় সে দে রে দেখায়ে দে কোথা ঘনশ্যাম
	কবে বুকে পাব তারে, মুখে জপি যাঁর নাম।।

বাণী

মোর বুক ভরা ছিল আশা প্রাণ ভরা ভালোবাসা।
হায় আসিল সে যবে কাছে মুখে সরিল না ভাষা।।
	আমি পেয়েছিলাম তায় একা
	ছিল চোখে তাহার প্রেম-লেখা,
তবু বলিতে পারিনি তারে কাঁদে প্রাণে কি দুরাশা।।
	এসে ভরা নদীর তীরে
	পান না করিয়া বারি
	আমি আসিলাম ফিরে — 
ছিল তৃষ্ণা-কাতর এ প্রাণে মরুভূমির পিয়াসা।।

বাণী

অরুণ-রাঙা গোলাপ-কলি
	কে নিবি সহেলি আয়।
গালে যার গোলাপী আভা
	এ ফুল-কলি তারে চায়।।
ডালির ফুল যে শুকায়ে যায়
কোথায় লায়লী, শিরী কোথায়
কোথায় প্রেমিক বিরহী মজনু
	এ ফুল দেব কাহার পায়।।
পূর্ণ চাঁদের এমন তিথি
ফুল-বিলাসী কই অতিথি
বুলবুলি বিনে এ গুল্‌ যে
	অভিমানে মুরছায়।।

বাণী

[শোন গিন্নী শুন্‌ছ —]
আজকে হোরি ও নাগরী, ওগো গিন্নী ও ললিতে।
ফাগের রাঙা জল ভ’রে দাও, ফর্‌সি হুঁকোর পিচ্‌কিরিতে॥
গাজর বিট আর লাল বেগুনে, রাঁধবে শালগম তেলে নুনে,
রাঙা দেখে লঙ্কা দিও, লাল নটে আর ফুলকারিতে॥
গাইব গান দোল পূর্ণিমাতে, মালোয়ারী জ্বর আসলে রাতে,
তুমি দোহার ধ’রবে সাথে, গিঁটে বাতের গিঁটকিরিতে॥
(আর) আমি লাল গামছা প’রে যাবো, লাল বাজারে পায়চারিতে,
তুমি যাবে চিড়িয়াখানায়, এই মুখেতে গন্ডার মারিতে॥
(না হয়) তুমি যাও বাপের বাড়ি, পাছুপাছু যাবো আমি ওগো শ্বশুর বাড়িতে
পাছু পাছু যাবো তোমার, না হয় শ্বশুর বাড়িতে॥