বাণী

দূর বনান্তের পথ ভুলি কোন্ বুলবুলি বুকে মোর আসিলি হেথায়।
হায় আনন্দের দূত যে তুই, তবু তোর চোখে কেন জল কি ব্যথায়।।
কোথা দিই ঠাঁই তোরে ওরে ভীরু পাখি, বেদনাময় আমার ও প্রাণ,
এ মরুতে নাই তরু, নাই তোর তৃষার তরে জল যে হেথায়।।
নিকুঞ্জে কার গাইতে গেলি গান, বিঁধিল বুক কণ্টকে;
হায় পুড়িয়া বৈশাখে এলি ভিজিতে অশ্রুর বরষায়।।

বাণী

দ্বীনের নবীজি শোনায় একাকী কোরানের মধু-বাণী।
আয়েশা খাতুন শোনেন বসিয়া, নয়নে ঝরিছে পানি।।
	বে-দ্বীন দিওয়ানা হ’য়ে
	কাঁদে যে কোরান ল’য়ে,
বিশ্ববাসী আনিল ঈমান যে পাক কোরান মানি’।।
চন্দ্র-তারকা-গ্রহ আদি ঐ তরুলতা মরু-বায়,
কোরানের সেই আয়াত শুনিয়া লুটায় নবীর পায়।
	কোরানে জাগাও ওরে
	জ্ঞান-গরিমায় মোরে,
মরিতে আমায় দিও গো ল’য়ে বক্ষে কোরানখানি।

বাণী

দু’হাতে ফুল ছড়ায়ে মন রাঙায়ে ধরায় আসি।
প্রথম যৌবনেরই ঘুম ভাঙাতে বাজাই বাঁশি।।
আমি কই, দেখরে চেয়ে, নেইরে জরা
আজিও চির নূতন — সেই পুরাতন বসুন্ধরা,
মাধবী চাঁদের চোখে আঁকা আজো বাঁকা হাসি।।
ফুটাই আশার কোলে শুকনো ডালে
অবসাদ আসে যবে সাধ ফুরালে,
আমি কই, এই ত’ সুরাপাত্র-পুরা রস-পিয়াসী।।

নাটক : ‘হরপার্বতী’ (কন্দর্পের গান)

বাণী

দিকে দিকে পুন জ্বলিয়া উঠেছে দীন-ই-ইসলামী লাল মশাল।
ওরে বে-খবর, তুইও ওঠ্‌ জেগে, তুইও তোর প্রাণ-প্রদীপ জ্বাল।।
গাজী মুস্তফা কামালের সাথে জেগেছে তুর্কী সুর্খ-তাজ,
রেজা পহ্‌লবী-সাথে জাগিয়াছে বিরান মুলুক ইরানও আজ
গোলামী বিসরি’ জেগেছে মিসরী, জগলুল-সাথে প্রাণ-মাতাল।।
ভুলি’ গ্লানি লাজ জেগেছে হেজাজ নেজদ্‌ আরবে ইবনে সউদ্‌
আমানুল্লার পরশে জেগেছে কাবুলে নবীন আল-মামুদ,
মরা মরক্কো বাঁচাইয়া আজি বন্দী করিম রীফ্‌-কামাল।।
জাগে ফয়সল্‌ ইরাক আজমে, জাগে নব হারুন-আল্‌-রশীদ,
জাগে বয়তুল মোকাদ্দস্‌ রে; জাগে শাম দেখ্‌ টুটিয়া নিদ
জাগে না কো শুধু হিন্দের দশ কোটি মুসলিম বে-খেয়াল।।
মোরা আস্‌হাব কাহাফের মত হাজারো বছর শুধু ঘুমাই,
আমাদেরি কেহ ছিল বাদশাহ্‌ কোন কালে; তার করি বড়াই,
জাগি যদি মোরা, দুনিয়া আবার কাঁপিবে চরণে টাল্‌মাটাল।।

বাণী

দুলে চরাচর হিন্দোল-দোলে
বিশ্বরমা দোলে বিশ্বপতি-কোলে।।
গগনে রবি-শশী গ্রহ-তারা দুলে,
তড়িত-দোলনাতে মেঘ ঝুলন ঝুলে।
	বরিষা-শত-নরী
	দুলিছে মরি মরি,
	দুলে বাদল-পরী
		কেতকী-বেণী খোলে।।
নদী-মেঘলা দোলে, দোলে নটিনী ধরা,
দুলে আলোক নভ-চন্দ্রাতপ ভরা।
করিয়া জড়াজড়ি দোলে দিবস-নিশা,
দোলে বিরহ-বারি, দোলে মিলন-তৃষা।
	উমারে লয়ে বু’কে
	শিব দুলিছে সুখে,
	দোলে অপরূপ
		রূপ-লহর তোলে।।

বাণী

দোহাই তোদের! এবার তোরা সত্যি করে সত্য বল্।
ঢের দেখালি ঢাক ঢাক গুড় গুড় ঢের মিথ্যা ছল।।
পেটে এক আর মুখে আরেক — এই যে তোদের ভন্ডামি,
এতেই তোরা লোক হাসালি, বিশ্বে হলি কম্‌-দামি।
নিজের কাছেও ক্ষুদ্র হলি আপন ফাঁকির আফসোসে,
বাইরে ফাঁকা পাঁয়তারা তাই, নাই তলোয়ার খাপ-কোষে।
তাই হলি সব সেরেফ আজ কাপুরুষ আর ফেরেব-বাজ
সত্য কথা বলতে ডরাস তোরাই আবার করবি কাজ —
				ফোঁপরা ঢেঁকির নেইক লাজ।
ইলশেগুড়ি বৃষ্টি দেখেই ঘর ছুটিস্‌ সব রাম-ছাগল!
যুক্তি তোদের খুব বুঝেছি, দুধকে দুধ আর জলকে জল।।