বাণী

মাতল গগন-অঙ্গনে ঐ আমার রণ-রঙ্গিণী মা।
সেই মাতনে উঠল দুলে ভূলোক দ্যুলোক গগন-সীমা।।
	আঁধার-অসুর-বক্ষপানে
	অরুণ-আলোর খড়গ হানে,
মহাকালের ডম্বরূতে উঠল বেজে মা’র মহিমা।।
সৃষ্টি-প্রলয় যুগল নূপুর বাজে শ্যামার যুগল পায়ে,
গড়িয়ে পড়ে তারার মালা উল্কা হয়ে গগন-গায়ে।
লক্ষ গ্রহের মুন্ডমালা দোলে গলে দোলে ঐ
বজ্র-ভেরীর ছন্দ-তালে নাচে শ্যামা তাথৈ থৈ,
অগ্নি-শিখায় ঝলকে ওঠে খড়গ-ঝরা লাল শোণিমা।।

বাণী

		মোরা বিহান-বেলা উঠে রে ভাই চাষ করি এই মাটি।
		যে মাটির বুকে আছে পাকা ধানের সোনার কাঠি॥
		ফসল বুনে রোদের তাতে উঠি যখন ঘেমে
		সদয় হয়ে আকাশ বেয়ে বৃষ্টি আসে নেমে
(ওরে)		মুচকি হেসে বৌ এনে দেয় পান্তা ভাতের বাটি॥
		আশ মেটে না চারা ধানের পানে চেয়ে চেয়ে
		মরাই ভ’রে থাকবে ওরাই আমার ছেলে মেয়ে।
(আমি)	চাই না স্বর্গ, পাই যদি এই পাকা ধানের আটি (রে ভাই)॥
		জল নিতে যায় আড়চোখে চায় বৌ-ঝি নদীর কূলে
		খুশিতে বুক ভ’রে ওঠে, খাটুনি যাই ভুলে।
		এ মাঠ নয় ভাই বৌ পেতেছে ঠান্ডা শীতল পাটি॥

বাণী

	মহাকালের কোলে এসে গৌরী হ’ল মহাকালী,
	শ্মশান–চিতার ভস্ম মেখে ম্লান হ’ল মার রূপের ডালি।।
		তবু মায়ের রূপ কি হারায়
	সে যেছড়িয়ে আছে চন্দ্র তারায়,
	মায়ের রূপের আরতি হয় নিত্য সূর্য–প্রদীপ জ্বালি’ ।।
	উমা হ’ল ভৈরবী হায় বরণ ক’রে ভৈরবেরে,
হেরি’	শিবের শিরে জাহ্নবী রে শ্মশানে মশানে ফেরে।
		অন্ন দিয়ে ত্রি–জগতে
		অন্নদা মোর বেড়ায় পথে,
	ভিক্ষু শিবের অনুরাগে ভিক্ষা মাগে রাজদুলালী।।

বাণী

মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান।
মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।।
	এক সে আকাশ মায়ের কোলে
	যেন রবি শশী দোলে,
এক রক্ত বুকের তলে, এক সে নাড়ির টান।।
এক সে দেশের খাই গো হাওয়া, এক সে দেশের জল,
এক সে মায়ের বক্ষে ফলাই একই ফুল ও ফল।
	এক সে দেশের মাটিতে পাই
	কেউ গোরে কেউ শ্মাশানে ঠাঁই
এক ভাষাতে মা’কে ডাকি, এক সুরে গাই গান।। 

নাটিকাঃ‘পুতুলের বিয়ে’

বাণী

মা মেয়েতে খেল্‌ব পুতুল আয় মা আমার খেলাঘরে।
আমি মা হয়ে মা শিখিয়ে দেব পুতুল খেলে কেমন করে।।
কাঙাল অবোধ করবি যারে বুকের কাছে রাখিস্ তারে (মা)
[নইলে কে তার দুখ ভোলাবে
যারে রত্ন মানিক দিবি না মা, উচিত সে তার মাকে পাবে]
আবার কেউ বা ভীষণ দামাল হবে কেউ থাকবে গৃহ কোণে প’ড়ে।।
মৃত্যু সেথায় থাকবে না মা থাকবে লুকোচুরি খেলা
রাত্রি বেলায় কাঁদিয়ে যাবে আসবে ফিরে সকাল বেলা।
কাঁদিয়ে খোকায়, ভয় দেখিয়ে, ভয় ভোলাবি আদর দিয়ে (মা)
[বেশি তারে কাঁদাস না মা, মা ছেড়ে সে পালিয়ে যাবে]
সে খেলে যখন শ্রান্ত হবে ঘুম পাড়াবি বক্ষে ধ’রে।।

বাণী

	মমতাজ মমতাজ তোমার তাজমহল —
যেন 	ফিরদৌসের একমুঠো প্রেম,
	বৃন্দাবনের একমুঠো প্রেম, আজো করে ঝলমল।।
	কত সম্রাট হ’ল ধূলি স্মৃতির গোরস্তানে —
	পৃথিবী ভুলিতে নারে প্রেমিক শাহ্‌জাহানে,
	শ্বেত মর্মরে সেই বিরহীর ক্রন্দন –মর্মর গুঞ্জরে অবিরল।।
	কেমনে জানিল শাজাহান – প্রেম পৃথিবীতে ম’রে যায়,
তাই	পাষাণ প্রেমের স্মৃতি রেখে গেল পাষাণে লিখিয়া হায়!
যেন	তাজের পাষাণ অঞ্জলি ল’য়ে নিঠুর বিধাতা পানে
	অতৃপ্ত প্রেম বিরহী আত্মা আজো অভিযোগ হানে!
বুঝি	সেই লাজে বালুকায় মুখ লুকাইতে চায় শীর্ণা যমুনা জল।।