বাণী

মৃত্যু নাই, নাই দুঃখ, আছে শুধু প্রাণ।
আনন্ত আনন্দ হাসি অফুরান।।
	নিরাশার বিবর হ’তে
	আয় রে বাহির পথে,
দেখ্ নিত্য সেথায় — আলোকের অভিযান।।
ভিতর হ’তে দ্বার বন্ধ ক’রে
জীবন থাকিতে কে আছিস্‌ ম’রে।
	ঘুমে যারা অচেতন
	দেখে রাতে কু-স্বপন,
প্রভাতে ভয়ের নিশি হয় অবসান।।

বাণী

	মোরা ছিনু একেলা, হইনু দু’জন।
	সুন্দরতর হ’ল নিখিল ভুবন।।
আজি	কপোত-কপোতী শ্রবণে কুহরে,
	বীণা বেণু বাজে বন-মর্মরে।
	নির্ঝর-ধারে সুধা চোখে মুখে ঝরে,
	নূতন জগৎ মোরা করেছি সৃজন।।
	মরিতে চাহি না, পেয়ে জীবন-অমিয়া!
	আসিব এ কুটিরে আবার জনমিয়া।
	আরো চাই আরো চাই অশেষ জীবন।।
আজি	প্রদীপ-বন্দিনী আলোক-কন্যা,
	লক্ষ্মীর শ্রী লয়ে আসিল অরণ্যা,
	মঙ্গল-ঘটে এলো নদীজল-বন্যা,
	পার্বতী পরিয়াছে গৌরী-ভূষণ।।

বাণী

মোর	প্রথম মনের মুকুল
	ঝরে গেল হায় মনে মিলনের ক্ষণে।
	কপোতীর মিনতি কপোত শুনিল না,
			উড়ে গেল গহন-বনে।।
	দক্ষিণ সমীরণ কুসুম ফোটায় গো
	আমারি কাননে ফুল কেন ঝরে যায় গো
	জ্বলিল প্রদীপ সকলেরি ঘরে হায়
	নিভে গেল মোর দীপ গোধূলি লগনে।।
	বিফল অভিমানে কাঁদে ফুলমালা কণ্ঠ জড়ায়ে
	কাঁদি ধূলি-পথে একা ছিন্ন-লতার প্রায় লুটায়ে লুটায়ে।
	দারুণ তিয়াসে এসে সাগর-মুখে
	ঢলিয়া পড়িনু হায় বালুকারি বুকে
	ধোঁয়ারে মেঘ ভাবি’ ভুলিনু চাতকী
			জ্বলিয়া মরি গো বিরহ-দহনে।।

বাণী

মঞ্জু মধু ছন্দা নিত্যা তব সঙ্গী।
সিন্ধুর তরঙ্গ নৃত্যের কুরঙ্গী।।
গুঞ্জা বেলা পদ্ম পুঞ্জীভূত বক্ষে
অশ্রু-লাজ কুণ্ঠা শঙ্কা-ঘন চক্ষে,
অঙ্গে শ্যামাকান্তা! মন্দাকিনী-ভঙ্গী।।
অঙ্গুলিতে বন্দী অঙ্গুরিত ছন্দ
কণ্ঠে সুর-লক্ষ্মী বৃন্দাবনানন্দ,
গঙ্গা এলে বক্ষে সন্ধ্যারাগে রঙ্গী।।

বাণী

মরুর ধুলি উঠলো রেঙে রঙিন গোলাপ রাগে
বুলবুলিরা উঠলো গেয়ে মক্কার গুলবাগে।।
	খোদার প্রেমের কোন দিওয়ানা
	দ্বারে দ্বারে দেয় রে হানা,
নবীন আশার আলোক পেয়ে, ঘুমন্ত সব জাগে।।
এ কোন তরণ প্রেমিক এলো কা'বার অঙ্গনে
সবুজ পাতার নিশান দোলায় শুকনো খেজুর বনে।
	এলো নব দীনের নকীব
	চির-চাওয়া খোদার হাবীব
নিখিল পাপী-তাপী যাঁহার পায়ের পরশ মাগে।।

বাণী

মেঘ মেদুর বয়ষায় কোথা তুমি
ফুল ছাড়ায়ে কাঁদে বনভূমি।।
ঝুরে বারিধারা
ফিরে এসো পথহারা
কাঁদে নদী তট চুমি’।।