বাণী

মেঘে মেঘে অন্ধ অসীম আকাশ।
আমারি মত কাঁদে দিশাহারা
নয়ন পুতলি চাঁদে হারায়ে
হারায়ে তারি নয়ন তারা।।
আমার ভুবন আঁধারে ভরিয়া
নয়ন মণি মোর কে নিল হরিয়া
প্রিয় নাম ধরে তারে খুঁজি দিকে দিকে
শূন্য গগনে শুধু ঝরে বারি ধারা।।
হে আলোর রাজা বল বল মোরে
মোর আঁখি পুতলি কেন নিলে হ’রে
তব উৎসব সভা হ’তো না কি উজল
আমার আঁখির আলো ছাড়া।।

বাণী

রেশ্‌মি চুড়ির শিঞ্জিনীতে রিমঝিমিয়ে মরম কথা
পথের মাঝে চম্‌কে’ কে গো থম্‌কে’ যায় ঐ শরম-নতা।।
	কাঁখ-চুমা তার কলসি-ঠোঁটে
	উল্লাসে জল উল্‌সি’ ওঠে,
	অঙ্গে নিলাজ পুলক ছোটে
			বায় যেন হায় নরম লতা।।
অ-চকিতে পথের মাঝে পথ-ভুলানো পরদেশিকে
হান্‌লে দিঠি পিয়াস-জাগা পথ্‌বালা এই উর্বশীকে!
	শূন্য তাহার কন্যা হিয়া
	ভর্‌ল বঁধুর বেদ্‌না নিয়া,
	জাগিয়ে গেল পর্‌দেশিয়া
			বিধুর বধূর মধুর ব্যথা।।

বাণী

আয় গোপিনী খেলবি হোরি ফাগের রাঙা পিচ্‌কারিতে
আজ শ্যামে লো করব ঘায়েল আবির হাসির টিট্‌কারিতে।।
রঙে রাঙা হয়ে শ্যাম আজ হবে যেন রাই কিশোরী
যমুনা জল লাল হবে আজ আবির ফাগের রঙে ভরি
কপালে কলঙ্ক মোদের ধুয়ে যাবে রঙ ঝারিতে।।
গুরুজনার গঞ্জনা আজ
সইব না লো মানব না লাজ
কূল ভুলে গোকুল পানে ভেসে যাব রাঙা গীতে।।

বাণী

নন্দ দুলাল নাচে নাচে রে হাতে সরের নাড়ু নিয়ে নাচে
ব্রজের গোপাল নাচে নাচে রে হাতে সরের নাড়ু নিয়ে নাচে
ওসে হাতের নাড়ু মুখে ফেলে, আড় চোখে চায় হেলে দুলে
যথায় গোপীর ক্ষীর নবনী দইয়ের হাঁড়ি আছে॥
শূন্য দু হাত শূন্যে তুলে দেয় সে করতালি বলে তাই তাই তাই
নন্দ পিতায় কয় ইশারায় নাই ননী নাই
নন্দ ধরতে গেলে যায় পিছিয়ে
মুচকি হেসে যায় এগিয়ে যশোমতীর কাছে রে॥
কহে শিউরে উঠে শিমুল ফুল নাচ রে গোপাল নাচ নাচ রে
	নাচ রে গোপাল নাচ
সারা গায়ে ঘুঙুর বেঁধে নাচে ডুমুর গাছ রে
	নাচ রে গোপাল নাচ
শিমুল গায়ে নাচে সুখে কাঁটা দিয়ে ওঠে ফুল ফোটে মরা গাছে॥
	নাচ ভুলে সে থমকে দাঁড়ায়
	মার চোখে জল দেখতে সে পায় রে
ননী মাখা দু হাত দিয়ে চোখ মুছিয়ে লুকায় বুকের কাছে॥

বাণী

কোন্‌ সে-সুদূর অশোক-কাননে বন্দিনী তুমি সীতা।
আর কতকাল জ্বলিবে আমার বুকে বিরহের চিতা।।
			সীতা — সীতা!!
	বিরহে তোমার অরণ্যচারী
	কাঁদিব রঘুবীর বল্কলধারী,
ঝরা চামেলির অশ্রু ঝরায়ে ঝুরিছে বন-দুহিতা।।
			সীতা — সীতা!!
তোমার আমার এই অনন্ত অসীম বিরহ নিয়া,
কত আদি কবি কত রামায়ন রচিবে, কে জানে প্রিয়া!
	বেদনার সুর-সাগর তীরে
	দয়িতা আমার এসো এসো ফিরে,
আবার আঁধার হৃদি-অযোধ্যা হইবে দীপান্বিতা।।
			সীতা — সীতা!!

নাটকঃ ‘বন্দিনী বিরহিনী সীতা’

বাণী

পথহারা পাখি কেঁদে ফিরে একা
আমার জীবনে শুধু আঁধারের লেখা।।
বাহিরে অন্তরে ঝড় উঠিয়াছে
আশ্রয় যাচি হায় কাহার কাছে
	বুঝি দুখ-নিশি মোর
	হবে না হবে না ভোর
ফুটিবে না আশার আলোক রেখা।।

নাটকঃ ‘সিরাজদ্দৌলা’