বাণী

হাতে হাত দিয়ে আগে চল হাতে নাই থাক হাতিয়ার।
জমায়েত হও, আপনি আসিবে শক্তি জুলফিকার।।
আন আলীর শৌর্য, হোসেনের ত্যাগ ওমরের মত কর্মানুরাগ;
খালেদের মত সব অশান্ত ভেঙে কর একাকার।।
ইসলামে নাই ছোট বড় আর আশরাফ আতরাফ
নিষ্ঠুর হাতে এই ভেদ জ্ঞান কর মিসমার সাফ।
চাকর সৃজিতে , চাকরি করিতে, ইসলাম আসে নাই পৃথিবীতে।
মরিবে ক্ষুধায় কেহ নিরন্ন, কারো ঘরে রবে অঢেল অন্ন
এ জুলুম সহেনি, ইসলাম, সহিবে না আজো আর।।

বাণী

তোমা বিনা মাধব রহিতে পারি না আর।
বায়ু বিনা যেমন বাঁচে না জীবন তেমনি আপন তুমি যে আমার॥
	মেঘ বিনা চাতকিনী মরে যায়,
	জল বিনা যেমন শতদল ঝরে যায়,
তিল্ তিল্ করি মরিতেছি আমি যে তেমনি বিরহে তোমার॥
তুমি ছাড়া প্রীতম্ মনে হয় কেহ মোর নাহি এ নিখিলে;
নিভে গেছে রবি-শশী, ডুবে গেছে পৃথিবী প্রলয়-সলিলে।
আর সকলের, তুমি প্রভু, ধ্রুব-জ্যোতি;
			কৃষ্ণ নয়ন-তারা তুমি যে মীরার॥

বাণী

শূন্য এ–বুকে পাখি মোর আয় ফিরে আয় ফিরে আয়!
তোরে না হেরিয়া সকালের ফুল অকালে ঝরিয়া যায়।।
		তুই নাই ব’লে ওরে উন্মাদ
		পান্ডুর হ’ল আকাশের চাঁদ,
কেঁদে নদী–জল করুণ বিষাদ ডাকে: ‘আয় ফিরে আয়’।।
		গগনে মেলিয়া শত শত কর
		খোঁজে তোরে তরু, ওরে সুন্দর!
তোর তরে বনে উঠিয়াছে ঝড় লুটায় লতা ধূলায়!
		তুই ফিরে এলে, ওরে চঞ্চল
		আবার ফুটিবে বন ফুল–দল
ধূসর আকাশ হইবে সুনীল তোর চোখের চাওয়ায়।।

বাণী

	গানগুলি মোর আহত পাখির সম
	লুটাইয়া পড়ে তব পায়ে প্রিয়তম।।
		বাণ–বেঁধা মোর গানের পাখিরে
		তু’লে নিও প্রিয় তব বুকে ধীরে,
	লভিবে মরণ চরণে তোমার সুন্দর অনুপম।।
তারাসুখের পাখায় উড়িতেছিল গো নভে —
তবনয়ন–শায়কে বিঁধিলে তাহাদের কবে।
		মৃত্যু আহত কন্ঠে তাহার
	‌‌একি এ গানের জাগিল জোয়ার —
	মরণ বিষাদে অমৃতের স্বাদ আনিলে নিষাদ মম।।

বাণী

কেন আসিলে যদি যাবে চলি’।
গাঁথিলে না মালা ছিঁড়ে ফুল-কলি।।
কেন বারে বারে আসিয়া দুয়ারে
ফিরে গেলে ‘পারে কথা নাহি বলি’,
কী কথা বলিতে, আসিয়া নিশীথে,
শুধু ব্যথা-গীতে গেলে মোরে ছলি’।।
প্রভাতের বায়ে কুসুম ফুটায়ে,
নিশীথে লুকায়ে উড়ে গেল অলি।।
কবি শুধু জানে, কোন্ অভিমানে,
চাহি যারে গানে কেন তা’রে দলি।।

বাণী

ওরে বনের ময়ূর কোথায় পেলি এমন চিত্রপাখা
তোর পাখাতে হরির স্মৃতি পাখার শ্রী কি আঁকা॥
		তারই মতন হেলে দুলে
		নাচিস্ রে তুই পেখম খুলে
তনুতে তোর ওরে শ্যামের আঁখির নীলাঞ্জন মাখা॥
হারিয়ে নব কিশোরে, দিবা-নিশি ঘুরি
তাই কি শ্যামের বিভূতি তুই আনলি ক’রে চুরি।
		সান্ত্বনা কি দিতে মোরে 
		শ্যামল রেখে গেছে তোরে
তাইতো তোরে হেরি ওরে যায় না কাঁদন্ রাখা॥