পথে কি দেখলে যেতে আমার
বাণী
পথে কি দেখলে যেতে আমার গৌর দেবতারে। যা’রে কোল যায় না দেওয়া, কোল দেয় সে ডেকে তারে।। নবীন সন্ন্যাসী সে রূপে তার পাগল করে আঁখির ঝিনুকে তা’র অবিরল মুক্তা ঝরে। কেঁদে সে কৃষ্ণের প্রেম ভিক্ষা মাগে দ্বারে দ্বারে।। জগতের জগাই-মাধাই মগ্ন যারা পাপের পাঁকে সকলের পাপ নিয়ে সে সোনার গৌর-অঙ্গে মাখে। উদার বক্ষে তাহার ঠাঁই দেয় সকল জাতে দেখেছ প্রেমের ঠাকুর সচল জগন্নাথে? একবার বললে হরি যায় নিয়ে সে ভবপারে।।
আমার বিদায়-রথের চাকার ধ্বনি
বাণী
আমার বিদায়-রথের চাকার ধ্বনি ঐ গো এবার কানে আসে। পুবের হাওয়া তাই কেঁদে যায় ঝাউ-এর বনে দীঘল শ্বাসে।। ব্যথায়-বিবশ গুলঞ্চ ফুল মালঞ্চে আজ তাই শোকাকুল, মাটির মায়ের কোলের মায়া ওগো আমার প্রাণ উদাসে।। অঙ্গ আসে অলস হ’য়ে নেতিয়ে-পড়া অলস ঘুমে, স্বপন-পারের বিদেশিনীর হিম-ছোঁওয়া যায় নয়ন চুমে। হাতছানি দেয় অনাগতা আকাশ ডোবা বিদায়-ব্যথা, লুটায় আমার ভুবন ভরি’ বাঁধন-ছেঁড়ার কাঁদন-ত্রাসে।। মোর বেদনার কর্পূর-বাস ভরপুর আজ দিগ্বলয়ে, বনের আঁধার লুটিয়ে কাঁদে হরিণটি তার হারার ভয়ে। হারিয়ে-যাওয়া মানসী হায় নয়ন-জলে শয়ন তিতায়, ওগো, এ কোন্ যাদুর মায়ায় দু’চোখ আমার জলে ভাসে।। আজ আকাশ-সীমায় শব্দ শুনি অচিন পায়ের আসা-যাওয়ার, তাই মনে হয় এই যেন শেষ আমার অনেক দাবিদাওয়ার। আজ কেহ নাই পথের সাথি সামনে শুধু নিবিড় রাতি, আমায় দূরের বাঁশি ডাক দিয়েছে, রাখ্বে কে আর বাঁধন-পাশে।।
কিশোর রাখাল বেশে মেষ চারণে যায় নবী
বাণী
কিশোর রাখাল বেশে মেষ চারণে যায় নবী নীল রেশমি রুমাল বেঁধে তার চারু-চাঁচর কেশে। তাঁর রাঙা পদতলে পুলকে ধরা টলে তাঁর রূপ -লাবনির ঢলে মরুভূমি গেল ভেসে।। তাঁর মুখে রহে চাহি মেষ-শিশু তৃণ ভুলি' বিশ্বের শাহানশাহ আজ মাখে গোঠের ধূলি, তাঁর চরণ-নখরে কোটি চাঁদ কেঁদে মরে তাঁর ছায়া ক'রে চলে আকাশে মেঘ এসে।। কিশোর নবী গোঠে চলে তাঁর চরণ-ছোঁয়ায় পথের পাথর মোম হয়ে যায় গ'লে তসলিম জানায় পাহাড় চরণে ঝুকে তাঁহার। নারাঙ্গি,আঙুর,খরজুর,পায়ে নজরানা দেয় হেসে।।
বিজন গোঠে কে রাখাল বাজায় বেণু
বাণী
বিজন গোঠে কে রাখাল বাজায় বেণু আমি সুর শুনে তা'র বাউল হয়ে এনু (গো)।। ঐ সুরে পড়ে মনে কোন সুদুর বৃন্দাবনে যেত নন্দ-দুলাল ব্রজ-গোপাল বাজিয়ে বেণু বনে পথে লুটতো কেঁদে গোপাবালা, ভূরতো তৃণ-ধেণু গো কেঁদে ভুলতো তৃণ-ধেণু।। কবে নদীয়াতে গোরা ও ভাই ডেকেছিল এমনি সুরে এমনি পাগল-করা। কেঁদে ডাকতো বৃথাই শচীমাতা, সাধতো বসুন্ধরা, প্রেমে গ'লে যত নর-নারী যাচতো পদ-বেণু গো তারা যাচতো পদ-রেণু।।
তোরা যারে এখনি হালিমার কাছে লয়ে
বাণী
তোরা যারে এখনি হালিমার কাছে লয়ে ক্ষীর সর ননী আমি খোয়াবে দেখেছি কাঁদিছে মা বলে আমার নয়ন-মণি॥ মোর শিশু আহমদে যেদিন কাঁদিয়া হালিমার হাতে দিয়াছি সঁপিয়া সেই দিন হ’তে কেঁদে কেঁদে মোর কাটিছে দিন রজনী॥ পিতৃহীন সে সন্তান হায় বঞ্চিত মা’র স্নেহে তারে ফেলে দূরে কোল খালি করে (আমি) থাকিতে পারি না গেহে। অভাগিনী তার মা আমিনায় মনে করে সে কি আজো কাঁদে হায় বলিস তাহারি আসার আশায় দিবানিশি দিন গণি॥