বাণী

নাচে নন্দ-দুলাল।
নদী-তরঙ্গে অধীর রঙ্গে — বাজে মঞ্জির চঞ্চল তাল।।
	চরণের নূপুর খুলে
	ফুল হয়ে ঝরে তরুমূলে,
পূবালী পবনে বন-ভবনে দোলে সে-ছন্দে পিয়াল তমাল।।
	মধুকর কল-গুঞ্জনে
	কাজরি গাহে নীপবনে,
ময়ূর পাপিয়া উঠিল মাতিয়া বাজে বৃষ্টির বীণা করতাল।।

বাণী

এমনি মধুর ক্ষণে প্রিয়তম নাহি পাশে।
আকুল পরান মম চম্পা-ফুল-সুবাসে।।
উতলা সমীরে বাজে ব্যাকুল বাঁশি
কাননে উছলি’ পড়ে সুরের রাশি,
আলোকে সুরভি তারি গগন ভরিয়া হাসে।।
বাতায়নে মোর নিশীথের তারা সুধায় নীরবে ডাকি,
‘হায় গো উদাসী এমন নিশায় সজল কেন গো আঁখি।’
	সুদূরে রহিল বঁধু একেলা আমি
	অসহ বিরহ সহি দিবসযামী,
আশার মালিকা রচি’, বসিয়া তাহারি আশে।।

বাণী

	গগনে খেলায় সাপ বরষা-বেদিনী।
	দূরে দাঁড়ায়ে দেখে ভয়-ভীতা মেদিনী।।
	দেখায় মেঘের ঝাপি তুলিয়া
	ফনা তুলি’ বিদ্যুৎ-ফণি ওঠে দুলিয়া,
	ঝড়ের তুব্‌ড়িতে বাজে তার অশান্ত রাগিণী।।
	মহাসাগরে লুটায় তার সর্পিল অঞ্চল
	দিগন্তে দুলে তার এলোকেশ পিঙ্গল
	ছিটায় মন্ত্রপূত ধারাজল অবিরল তন্বী-মোহিনী।।
	অশনি-ডমরু ওঠে দমকি’
	পাতালে বাসুকি ওঠে চমকি’
তার 	ডাক শুনে ছুটে আসে নদীজল যেন পাহাড়িয়া নাগিনী।।

বাণী

ওগো অন্তর্যামী, ভক্তের তব শোন শোন নিবেদন
যেন থাকে নিশিদিন তোমারি সেবায় মোর তনু-প্রাণ-মন।।
	নয়নে কেবল দেখি যেন আমি
	তোমারই স্বরূপ ত্রিভুবন-স্বামী
শিরে বহি যেন তোমারি পূজার অর্ঘ্য অনুক্ষণ।।
এ রসনা শুধু জপে তব নাম এই বর দাও নাথ;
তোমারি চরণ সেবায় লাগুক মোর এই দুটি হাত।
	ওঠে তব নাম প্রতি নিঃশ্বাসে
	শ্রবনে কেবল তব নাম ভাসে
তব মন্দির-পথে যেন সদা চলে মোর এ চরণ।।

বাণী

ধীরে যায় ফিরে ফিরে চায়।
চলে নব অভিসারে, ভীরু কিশোরী,
ওঠে পাতাটি নড়লে সে চম্‌কে।।
হরিণ নয়নে সভয় চাহনি,
আসিছে কে যেন দেখিবে এখনি
পথে সে দেয় ফেলে মুখর নূপুর খুলে,
আপন ছায়া হেরি ওঠে গা ছম্‌কে॥
‘চোখ গেল চোখ গেল’ ডাকে পাপিয়া
শুনিয়া শরমে ওঠে কাঁপিয়া;
হায়, যার লাগি এত, কোথায় সে
ঝিল্লি-রবে ভাবে কেউ হবে
বনে ফুল ঝরার আওয়াজে দাঁড়ায় সে থম্‌কে॥

বাণী

মরণ ডাকে — ‘আয় রে চ’লে!’ জীবন বলে — ‘যাই গো যাই।’
জীবনে হায় পায়নি ব’লে (আমার) মরণে তাই চাই গো চাই।।
	জীবন শুধু কাঁটায় ভরা
	তাই বুঝি সে দেয়নি ধরা,
ফুল-বিছানো কবরে তার মধুর পরশ পাই গো পাই।
মরণ-বঁধূর ডাক শুনে আর জীবনে সাধ নাই গো নাই।।

নাটকঃ ‘কাফন চোরা’