বাণী

অনাদরে স্বামী প’ড়ে আছি আমি তব কোলে তুলে নাও
নিয়ে ধরণীর ধূলি আছি আমি ভুলি’ চরণের ধূলি দাও॥
	বিভবে বিলাসে সংসার কাজে
	অশান্ত প্রাণ কাঁদে বন্ধন মাঝে
বৃথা দ্বারে দ্বারে চেয়েছি সবারে এবার তুমি মোরে চাও॥
	যাহা কিছু প্রিয় জীবনের মম
	হরিয়া লহ তুমি, লও প্রিয়তম।
	সূর্যের পানে সূর্যমুখী ফুল
	যেমন চাহিয়া রয় বিরহ-ব্যাকুল
তেমনি প্রভু আমার এ মন তোমার পানে ফিরাও॥

বাণী

ও মেঘের দেশের মেয়ে।
কোথা হ’তে এলি রে তুই কেয়াপাতার খেয়া বেয়ে।।
	ধারা নূপুর রুন্‌ঝুনিয়ে
	কানে কদম দুল দুলিয়ে
ফুল কুড়াতে এলি কি তুই মোর কাননে ধেয়ে।।
পূব-হাওয়াতে উড়ছে আঁচল নীলাম্বরী,
তুমি বুঝি ভাই রূপকাহিনীর মেঘ্লা-পরী।
তোর	কণ্ঠে বাজে যে গান মধুর
	তারি’ তালে নাচে ময়ূর,
মেঘ-মাদলের সাথে ওঠে আমারও মন গেয়ে।।

বাণী

শূন্য এ–বুকে পাখি মোর আয় ফিরে আয় ফিরে আয়!
তোরে না হেরিয়া সকালের ফুল অকালে ঝরিয়া যায়।।
		তুই নাই ব’লে ওরে উন্মাদ
		পান্ডুর হ’ল আকাশের চাঁদ,
কেঁদে নদী–জল করুণ বিষাদ ডাকে: ‘আয় ফিরে আয়’।।
		গগনে মেলিয়া শত শত কর
		খোঁজে তোরে তরু, ওরে সুন্দর!
তোর তরে বনে উঠিয়াছে ঝড় লুটায় লতা ধূলায়!
		তুই ফিরে এলে, ওরে চঞ্চল
		আবার ফুটিবে বন ফুল–দল
ধূসর আকাশ হইবে সুনীল তোর চোখের চাওয়ায়।।

বাণী

কোন্‌ সে-সুদূর অশোক-কাননে বন্দিনী তুমি সীতা।
আর কতকাল জ্বলিবে আমার বুকে বিরহের চিতা।।
			সীতা — সীতা!!
	বিরহে তোমার অরণ্যচারী
	কাঁদিব রঘুবীর বল্কলধারী,
ঝরা চামেলির অশ্রু ঝরায়ে ঝুরিছে বন-দুহিতা।।
			সীতা — সীতা!!
তোমার আমার এই অনন্ত অসীম বিরহ নিয়া,
কত আদি কবি কত রামায়ন রচিবে, কে জানে প্রিয়া!
	বেদনার সুর-সাগর তীরে
	দয়িতা আমার এসো এসো ফিরে,
আবার আঁধার হৃদি-অযোধ্যা হইবে দীপান্বিতা।।
			সীতা — সীতা!!

নাটকঃ ‘বন্দিনী বিরহিনী সীতা’

বাণী

কেন করুণ সুরে হৃদয় পুরে বাজিছে বাঁশরি
ঘনায় গহন নীরদ সঘন নয়ন মন ভরি॥
বিজলি চমকে পবন দমকে পরান কাঁপে রে
বুকের বঁধুরে বুকে বেঁধে ঝুরে বিধুরা কিশোরী॥

বাণী

বনে বনে দোলা লাগে।
মনে মনে দোলা লাগে
	দখিনা-সমীর জাগে।।
একি এ বেদনা লয়ে
ফুটিল কুসুম হৃদয়ে
আবেশে পুলকে ভয়ে
	না-জানা পরশ মাগে।।
কিশোর হৃদয় পুটে
অশোক রঙিন ফোটে
কপোল রাঙিয়া ওঠে
	অতনুর অনুরাগে।।