বাণী

কেন বারে বারে আমি এসে’ ফিরে যাই তাহারি দুয়ারে।
পাষাণ ভাঙ্গিয়া বহিবে গো কবে নির্ঝর শত ধারে।।
পাষাণে গঠিত দেবতা বলিয়া গলে না হিয়া হায়,
বৃথা বেদীতলে কুসুম শুকায় দেউল আঁধারে।।

নাটক : ‘আলেয়া’

বাণী

কেন হেরিলাম নব ঘনশ্যাম কালারে কাল্‌ কালিন্দী-কূলে।
(সে যে) বাঁশরির তানে সকরুণ গানে ডাকিল প্রেম-কদম্ব মূলে।।
কেন কলস ভরিতে গেনু যমুনা-তীরে,
মোর কলস সাথে গেল ভাসি, লাজ-কূল-মান আকুল নীরে।
কলসির জল মোর নয়নে ভরিয়া সই আসিনু ফিরে।।
সখি হে তোদের সে রাই নাই, গোকুলের রাই গোকুলে নাই।
সে যে হারাইয়া গেছে শ্যামের রূপে লো নবীন নীরদে বিজলি প্রায়।
সে রবি-শশী সম ডুবিয়া গেছে লো সুনীল রূপের গগন-গায়।।
হরি-চন্দন-পঙ্কে লো সখি শীতল ক’রে দে জ্বালা,
দুলায়ে দে গলে বল্লভ-রূপী শ্যাম পল্লব মালা।
নীল কমল আর অপরাজিতার, শেজ্‌ পেতে দে লো কোমর বিথার
পেতে দে শয্যা পেতে দে, নীল শয্যা পেতে দে পেতে দে!
পরাইয়া দে লো সখি অঙ্গে নীলাম্বরী, জড়াইয়া কালো বরণ আমি যেন মরি।।

বাণী

একটুখানি দাও অবসর বসতে কাছে,
তোমায় আমার অনেক যুগের অনেক কথা বলার আছে।।
গ্রহ ঘিরে উপগ্রহ, ঘোরে যেমন অহরহ;
আমার আকুল এ বিরহ তেমনি প্রিয় তোমায় যাচে॥
চিরকালই রইলে তুমি আমার পাওয়ার বহুদূরে
আজকে ক্ষণিক কইব কথা সকরুণ গানের সুরে।
করব পূজা গানে গানে, চাইব না আর নয়ন পানে;
আমার চোখের অশ্রুলেখা দেখে তুমি চেন পাছে॥

বাণী

ঝলমল জরীণ বেণী দুলায়ে প্রিয়া কি এলে 
সজল শাওন-মেঘে কাজল নয়ন মেলে।।
কেয়া ফুলের পরিমল, ঝুরে মরে তব পথে,
হেরি দীঘল তব তনু তাল পিয়াল তরু পড়ে হেলে’।।
পরিবে বলিয়া খোঁপায় ঝরিছে বকুল চাঁপা
তোমায় খুঁজিছে আকাশ তারার প্রদীপ জ্বেলে।।
তোমারি লাবনি প্রিয়া ঝরিছে শ্যামল মেঘে,
ফুটালে ফুল মরুভূমে চঞ্চল চরণ ফেলে।।

বাণী

এমনি মধুর ক্ষণে প্রিয়তম নাহি পাশে।
আকুল পরান মম চম্পা-ফুল-সুবাসে।।
উতলা সমীরে বাজে ব্যাকুল বাঁশি
কাননে উছলি’ পড়ে সুরের রাশি,
আলোকে সুরভি তারি গগন ভরিয়া হাসে।।
বাতায়নে মোর নিশীথের তারা সুধায় নীরবে ডাকি,
‘হায় গো উদাসী এমন নিশায় সজল কেন গো আঁখি।’
	সুদূরে রহিল বঁধু একেলা আমি
	অসহ বিরহ সহি দিবসযামী,
আশার মালিকা রচি’, বসিয়া তাহারি আশে।।

বাণী

সমবেত	:	সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
			পাত ভ’রে ভাত পাই না, ধ’রে আসে হাত গো॥
১ম		:	তোর ঘরে আজ কি রান্ন হায়েছে?
২য়		:	ছেলে দুটো ভাত পায়নি, পথ চেয়ে রয়েছে।
৩য়		:	আমিও ভাত রাঁধিনি, দেখ্ না চুল বাঁধিনি
			শাশুড়ি মান্ধাতার বুড়ি মন্দ কথা কয়েছে।
৪র্থ		:	আমার ননদ বড় দজ্জাল বজ্জাত গো।
সমবেত	:	সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
			পাত ভ’রে ভাত পাই না, ধ’রে আসে হাত গো॥
১ম		:	এত খায় তবু ওদের বউগুলো সুঁট্‌কো
২য়		:	ছেলেগুলো প্যাঁকাটি, বাবুগুলো মুট্‌কো।
৩য়		:	এরা কাগজের ফুল, এরা চোখে চাঁদ দেখে না।
৪র্থ		:	ইটের ভিতরে কীটের মত কাটায় এরা রাত গো।
সমবেত	:	সারাদিন পিটি কার দালানের ছাদ গো
			পাত ভ’রে ভাত পাই না, ধ’রে আসে হাত গো॥

চলচ্চিত্রঃ ‘চৌরঙ্গী’