আমায় নহে গো ভালবাস শুধু
বাণী
আমায় নহে গো – ভালবাস শুধু ভালবাস মোর গান। বনের পাখিরে কে চিনে রাখে গান হ’লে অবসান।। চাঁদেরে কে চায় – জোছনা সবাই যাচে, গীত শেষে বীণা প’ড়ে থাকে ধূলি মাঝে; তুমি বুঝিবে না বুঝিবে না — আলো দিতে পোড়ে কত প্রদীপের প্রাণ।। যে কাঁটা-লতার আঁখি-জল, হায়, ফুল হ’য়ে ওঠে ফুটে — ফুল নিয়ে তায় দিয়েছ কি কিছু শূন্য পত্র-পুটে! সবাই তৃষ্ণা মিটায় নদীর জলে, কী তৃষা জাগে সে নদীর হিয়া-তলে — বেদনার মহাসাগরের কাছে কর সন্ধান।।
যাও হেলে দুলে এলোচুলে কে গো বিদেশিনী
বাণী
পুরুষ : যাও হেলে দুলে এলোচুলে কে গো বিদেশিনী কাহার আশে কাহার অনুরাগিনী। স্ত্রী : আমি কনক চাঁপার দেশের মেয়ে এনু ঊষার রঙের গান গেয়ে আমি মল্লিকা গো পল্লীবাসিনী। পুরুষ : চিনি চিনি ওই চুড়ি কাঁকনের রিনিকি রিনি তুমি ভোর বেলা দাও স্বপনে দেখা। স্ত্রী : তোমার রঙে কবি আঁক আমারি ছবি তুমি দেবতা রবি আমি তব পূজারিণী। পুরুষ : এসো ধরণীর দুলালী আলোর দেশে যথা তারার সাথে চাঁদ গোপনে মেশে স্ত্রী : আনো আলোক তরী আমি যাই গো ভেসে দ্বৈত : চলো যাই ধরণী ধূলির ঊর্ধে পুরুষ : যথা বয় অনন্ত স্ত্রী : প্রেম মন্দারিণী পুরুষ : যথা বয় অনন্ত দ্বৈত : প্রেম মন্দারিণী॥
আমরা শক্তি আমরা বল আমরা ছাত্রদল
বাণী
আমরা শক্তি আমরা বল, আমরা ছাত্রদল। মোদের পায়ের তলায় মূর্চ্ছে তুফান ঊর্ধ্বে বিমান ঝড় বাদল! আমরা ছাত্রদল॥ মোদের আঁধার রাতে বাধার পথে যাত্রা নাঙ্গা পায়, আমরা শক্ত মাটি রক্তে রাঙাই বিষম চলার ঘায়। যুগে যুগে রক্তে মোদারে সিক্ত হল পৃথ্বীতল। আমরা ছাত্রদল॥ মোদের কক্ষচ্যুত ধূমকেতু-প্রায় লক্ষ্যহারা প্রাণ, আমরা ভাগ্যদেবীর যজ্ঞবেদীর নিত্য বলিদান। যখন লক্ষীদেবী স্বর্গে উঠেন আমরা পশি নীল অতল। আমরা ছাত্রদল॥ আমরা ধরি মৃত্যু রাজার যজ্ঞ-ঘোড়ার রাশ, মোদের মৃত্যু লেখে মোদের জীবন-ইতিহাস। হাসির দেশে আমরা আনি সর্বনাশী চোখের জল। আমরা ছাত্রদল॥ সবাই যখন বৃদ্ধি যোগায়, আমরা করি ভুল। সাবধানীরা বাঁধ বাঁধে সব, আমরা ভাঙি কূল। দারুণ রাতে আমরা তরুণ রক্তে করি পথ পিছিল। আমরা ছাত্রদল॥ মোদের চক্ষে জ্বলে জ্ঞানের মশাল বক্ষে ভরা বাক্, কণ্ঠে মোদের কুণ্ঠা-বিহীন নিত্য-কালের ডাক। আমরা তাজা খুনে লাল করেছি সরস্বতীর শ্বেত-কমল। আমরা ছাত্রদল॥ ঐ দারুণ উপপ্লবের দিনে আমরা দানি শির, মোদের মাঝে মুক্তি কাঁদে বিংশ-শতাব্দীর! মোরা গৌরবেরি কান্না দিয়ে ভরেছি মা’র শ্যাম আঁচল। আমরা ছাত্রদল॥ আমরা রচি ভালোবাসার আশার ভবিষ্যৎ, মোদের স্বর্গ-পথের আভাস দেখায় আকাশ-ছায়াপথ! মোদের চোখে বিশ্ববাসীর স্বপ্ন দেখা হোক সফল। আমরা ছাত্রদল॥
এলো ঐ পূর্ণ শশী ফুল-জাগানো
বাণী
এলো ঐ পূর্ণ শশী ফুল-জাগানো বহে বায় বকুল-বনে ঘুম-ভাঙানো।। লাগিল জাফরানি-রঙ শিউলি-ফুলে ফুটিল প্রেমের কুঁড়ি পাপড়ি খুলে, খুশির আজ আমেজ জাগে মন-রাঙানো।। চাঁদিনী ঝিলমিলায় ঝিলের জলে, আবেশে শাপলা ফুলের মৃণাল টলে, জাগে ঢেউ দীঘির বুকে দোল-লাগানো।। এসো আজ স্বপন-কুমার নিরিবিলি খুলিয়া গোপন প্রাণের ঝিলিমিলি, এসো মোর হতাশ প্রাণে ভুল-ভাঙানো।।
আসিবে তুমি জানি প্রিয়
বাণী
আসিবে তুমি, জানি প্রিয়! আনন্দে বনে বসন্ত এলো — ভুবন হ’ল সরসা প্রিয়–দরশা, মনোহর।। বনান্তে পবন অশান্ত হ’ল তাই, কোকিল কুহরে, ঝরে গিরি–নির্ঝরিণী ঝর ঝর।। ফুল্ল–যামিনী আজি ফুল–সুবাসে চন্দ্র অতন্দ্র সুনীল আকাশে, আনন্দিত দীপান্বিত অম্বর।। অধীর সমীরে দিগঞ্চল দোলে মালতী বিতানে পাখি পিউ পিউ বোলে, অঙ্গে অপরূপ ছন্দ আনন্দ–লহর তোলে; দিকে দিকে শুনি আজ আসিবে রাজাধিরাজ প্রিয়তম সুন্দর।।