বাণী

বরষ গেল, আশ্বিন এলো, উমা এলো কই
শূন্য ঘরে কেমন করে পরান বেঁধে রই।।
‌	ও গিরিরাজ! সবার মেয়ে
	মায়ের কোলে এলো ধেয়ে,
আমারই ঘর রইল আঁধার, আমি কি মা নই?
নাই শাশুড়ি ননদ উমার, আদর করার নাই (কেহ)
মা অনাদরে কালী সেজে বেড়ায় নাকি তাই।
	মোর গৌরী বড় অভিমানী,
	সে বুঝবে না মার প্রাণ-পোড়ানী;
আনতে তারে সাধতে হবে তার যে স্বভাব ঐ।।

বাণী

বাঁশিতে সুর শুনিয়ে নূপুর রুনঝনিয়ে
	এলে আজি বাদলপ্রাতে।
কদম কেশর ঝুরে পুলকে তোমার পায়ে,
তমাল বিছায়ে ছায়া শ্যামল আদুল গায়ে।
অলকা পথ বাহি আসিলে মেঘের নায়ে,
নাচের তালে বাজিয়া ওঠে চুড়ি কাঁকন হাতে।।
ধানি রঙের শাড়ি ফিরোজা রঙ উত্তরীয়
প'রেছি এ শ্রাবণ দোলাতে দুলিতে প্রিয়।
কেশের কমল-কলি, বনমালী, তুলিয়া আদরে
চাঁচর চিকুরে আপনি পরিও
তোমার রূপের কাজল পরায়ো আমার আঁখি পাতে।।

বাণী

বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ, নবযুগ ঐ এলো ঐ
		এলো ঐ রক্ত যুগান্তর রে।
বল জয় সত্যের জয় আসে ভৈরব বরাভয়,
		শোন অভয় ঐ রথ-ঘর্ঘর রে।।
রে বধির! শোন পেতে কান ওঠে ঐ কোন মহাগান,
হাঁকছে বিষাণ ডাকছে ভগবান রে।
জগতে জাগলো সাড়া জেগে ওঠ উঠে দাঁড়া,
ভাঙ্‌ পাহারা মায়ার কারা-ঘর রে।
যা আছে যাক্‌ না চুলায় নেমে পড় পথের ধূলায়,
নিশান দুলায় ঐ প্রলয়ের ঝড় রে।।
সে ঝড়ের ঝাপটা লেগে ভীম আবেগে উঠনু জেগে
পাষাণ ভেঙে প্রাণ-ঝরা নির্ঝর রে।
ভুলেছি পর ও আপন ছিঁড়েছি ঘরের বাঁধন,
স্বদেশ স্বজন স্বদেশ মোদের ঘর রে।
যারা ভাই বদ্ধ কুয়ায় খেয়ে মার জীবন গোঁয়ায়
তাদের শোনাই প্রাণ-জাগা মন্তর রে।।
ঝড়ের ঝাঁটার ঝাণ্ডা নেড়ে মাভৈঃ বানীর ডঙ্কা মেরে
শঙ্কা ছেড়ে হাঁক প্রলয়ঙ্কর রে।
তোদের ঐ চরণ-চাপে যেন ভাই মরণ কাঁপে
মিথ্যা পাপের কণ্ঠ চেপে ধর্‌ রে।
শোনা তোর বুক-ভরা গান জাগা তোর দেশ-জোড়া প্রাণ,
দে বলিদান প্রাণ ও আত্মপর রে।।
মোরা ভাই বাউল চারণ মানি না শাসন বারণ,
জীবন মরণ মোদের অনুচর রে।
দেখে ঐ ভয়ের ফাঁসি হাসি জোর জয়ের হাসি,
অ-বিনাশী নাইকো মোদের ডর রে,
গেয়ে যাই গান গেয়ে যাই মরা প্রাণ উট্‌কে দেখাই,
ছাই-চাপা ভাই অগ্নি ভয়ঙ্কর রে।।
খুঁড়ব কবর তুড়ব শ্মশান মড়ার হাড়ে নাচাব প্রাণ,
আনব বিধান নিদান কালের বর রে
শুধু এই ভরসা রাখিস মরিস্‌নি ভির্মি গেছিস
ঐ শুনেছিস ভারত বিধির স্বর রে।
ধর্‌ হাত ওঠ্‌ রে আবার দুর্যোগের রাত্রি কাবার,
ঐ হাসে মা'র মূর্তি মনোহর রে।।

বাণী

বরণ করেছি তারে সই বারণ ক’রো না
মরম সঁপেছি তারে নিতে মরণ যাতনা।।
	গোপনে সঁপেছি মন
	গোপনে করি যতন,
কাঁদে প্রাণ তারি তরে, মিলিতে বাসনা।।

বাণী

আবৃত্তি:	কুমারী রাধিকা ঘোষের প্রতি শ্রীমৎ ক্যাগ বিমাতার উক্তি:
		বলি মাথা খাস্ রাধে ওলো কথা শোন্।
		বলি কুল আর তুই খাস্‌নে (রাধে কুল আর তুই খাস্‌নে)
		ওলো গোকুল ঘোষের কন্যা যে তুই কুল গাছ পানে চাস্‌নে
		(পরের কুল গাছ পানে চাস্‌নে)
		ও কুল গাছে বড় কাঁটা
		গায়ে অথবা পায়ে বিঁধিলে দায় হবে পথ হাঁটা
		(রাধে গায়ে অথবা পায়ে বিঁধিলে দায় হবে পথ হাঁটা)
		কলঙ্ক দিলি (কলঙ্ক দিলি)
		তুই যারি তারি কুল চুরি করে খেলি
		গোকুলের কুলে কলঙ্ক দিলি (কুলে কলঙ্ক দিলি) রাধে গো।
		ওলো ভাবিস এখনও বয়েস হয়নি কারণ বেড়াস ফ্রক পরে।
		ওই কুল গাছ আগলায় ভীমরুল চাক
		(ওই কুল গাছ আগলায় ভীমরুল চাক)
		তোর কুল খাওয়া বের হবে ফুলে হবি ঢাক
		(ফুল হবি জয় ঢাক)।
		বলি পড়তে নাকি কুল খেতে যাস রোজ রোজ ইস্কুলে
		(রাধে পড়তে নাকি কুল খেতে যাস রোজ রোজ ইস্কুলে)
		ওই কুলেরি কাঁটায় দুকুল ছিঁড়িস বেণী আঁটিস খুলে
		(রাধে বেণী আঁটিস খুলে)
		খাস তুই টোপা কুল খাস নারকুলে কুল
		(খাস তুই টোপা কুল খাস নারকুলে কুল)
		অত কুল খেয়ে রাতে পেট ডাকে কুল কুল কুল কুল।
		ওলো কুলোতে নারি (কুলোতে নারি)
		ওলো তোর কুল দিয়ে আর কুলোতে নারি (দিয়ে কুলোতে নারি)
		ছিল কুলুঙ্গীতে কুলের আচার তাও খেয়েছিল কুল খোয়ারী
		(কুলুঙ্গীর ও কুলের আচার তাও খেয়েছিস কুল খোয়ারী)।
		ওই কুল গাছ ধরে (সখি গো রাধে গো)
		(বহুত আচ্ছা দাদা বহুত আচ্ছা বহুত আচ্ছা)
		ওই কুল গাছ ধরি কোলাকুলি করি ফ্যাসাদ বাধাবি শেষে
		আর কুল ত্যাগিনী হবে কি নাশিনী কুল গাছ ভালোবেসে
		(আর কুল ত্যাগিনী হবে কি নাশিনী কুল গাছ ভালোবেসে)॥

বাণী

বৈকালী সুরে গাও চৈতালি গান, বসন্ত হয় অবসান।
নহবতে বাজে সকরুণ মূলতান।।
নীরব আনমনা পিক চেয়ে আছে দূরে অনিমিখ
ধূলি-ধূসর হলো দিক আসে বৈশাখ অভিযান।।
চম্পা-মালা রবমলিন লুটায় ফুল-ঝরা বন-বীথিকায়,
ঢেলে দাও সঞ্চিত প্রাণের মধু-যৌবন দেবতার পায়।
অনন্ত বিরহ-ব্যথায় ক্ষণিকের মিলন হেথায়
ফিরে নাহি আসে যাহা যায়-নিমেষের মধুতর গান।।