বাণী

	নাইয়া! ধীরে চালাও তরণী
	একে ভরা ভাদর তায় বালা মাতোয়ালা মেঘলা রজনী।।
	হায় পারে নেওয়ার ছলে নিলে মাঝ নদীতে
	যৌবন-নদী টলমল নারি রোধিতে
ঐ	ব্যাকুল বাতাস হরি’ নিল লাজ বাস
তায়	চঞ্চল-চিত যে তুমি চাহ বধিতে
	পায়ে ধরি ছাড়, বঁধু আমি পরের ঘরের ঘরণী।।
	তরঙ্গ ঘোর রঙ্গ করে, অঙ্গে লাগে দোল্
	একি এ নেশার ঘোরে তনু মন আঁখি লোল্।
	দুলিছে নদী দুলে বায়ু দুলিছে তরী
	কেমনে থির রাখি মোর চিত উতরোল ।
	ওঠে ডিঙি পান্‌সি ভরি’ বারি কি করি কিশোরী রমণী।।

বাণী

দক্ষিণ সমীরণ সাথে বাজো বেণুকা।
মধু-মাধবী সুরে চৈত্র-পূর্ণিমা রাতে, বাজো বেণুকা।।
বাজো		শীর্ণা-স্রোত নদী-তীরে
		ঘুম যবে নামে বন ঘিরে’
যবে		ঝরে এলোমেলো বায়ে ধীরে ফুল-রেণুকা।।
		মধু মালতী-বেলা-বনে ঘনাও নেশা
		স্বপন আনো জাগরণে মদিরা মেশা।
			মন যবে রহে না ঘরে
			বিরহ-লোকে সে বিহরে
		যবে নিরাশার বালুচরে ওড়ে বালুকা।।

বাণী

কত নিদ্রা যাও রে কন্যা		জাগো একটু খানি
যাবার বেলায় শুনিয়া যাই		তোমার মুখের বাণী।।
নিশীথিনীর ঘুম ভেঙে যায়	চন্দ্র যখন হেসে তাকায় গো
চাতাকিনী ঘুমায় কি গো		দেখলে মেঘের পানি।।
ফুলের কুঁড়ি চোখ মেলে চায়	যেই না ভ্রমর বোলে (রে কন্যা)
বসন্ত আসিলে রে কন্যা		বনের লতা দোলে (রে কন্যা)
যারা আছে প্রাণে প্রাণে		জাগে তারা ঘুম না জানে
আমি যখন রইব না গো		(তখন) জাগবে তুমি জানি।।

বাণী

পুরুষ		:	মন নিয়ে আমি লুকোচুরি খেলা খেলি প্রিয়ে।
স্ত্রী		:	ধরিতে পারি না পেতে তাই প্রেম ফাঁদ —
			তুমি মেঘ আমি চাঁদ, ফের গো কাঁদিয়ে।।
পুরুষ		:	মন্দ বায় আমি গন্ধ লুটি শুধু —
			চাই না আমি সে মধু;
স্ত্রী		:	চাইনে চাইনে বঁধু —
			তাহে নাই সুখ নাই, আমি পরশ যে চাই।
পুরুষ		:	স্বপন-কুমার ফিরি যে আমি মন ভুলিয়ে।।
উভয়ে	:	চল তবে যাই মোরা স্বপনের দেশে
			জোছনায় ভেসে —
			নন্দন-পারিজাত ফুল ফুটিয়ে।।

বাণী

ও কালো বউ! জল আনিতে যেয়ো না আর বাজিয়ে মল।
তোমায় দেখে শিউরে ওঠে কাজ্‌লা দীঘির কালো জল।
		ওগো কাজ্‌লা দীঘির কালো জল।।
	দেখে তোমার কালো আঁখি
	কালো কোকিল ওঠে ডাকি’
তোমার চোখের কাজল মাখি’ হয় সজল ঐ মেঘ-দল
		ওগো হয় সজল ঐ মেঘ-দল।।
	তোমার কালো রূপের মায়া
	দুপুর রোদে শীতল ছায়া
কচি অশথ্‌ পাতায় টলে ঐ কালো রূপ টলমল।।
	ভাদর মাসের ভরা ঝিলে
	তোমার রূপের আদর মিলে গো —
তোমার তনুর নিবিড় নীলে আকাশ করে টলমল।
		ঐ আকাশ করে টলমল।।

বাণী

খুলেছে আজ রঙের দোকান বৃন্দাবনে হোরির দিনে।
প্রেম-রঙিলা ব্রজ-বালা যায় গো হেথায় আবির কিনে।।
	আজ গোকুলের রঙ মহলায়
	রামধনু ঐ রঙ পিয়ে যায়
সন্ধ্যা-সকাল রাঙতো না গো ঐ হোরির কুমকুম বিনে।।
রঙ কিনিতে এসে সেথায় রব শশী আকাশ ভেঙে'
এই ফাগুনী ফাগের রাগে অশোক শিমুল ওঠে রেঙে'।
আসে হেথায় রাধা-মাধব এই রঙেরই পথ চিনে।।