বাণী

জাগো জাগো, রে মুসাফির হ’য়ে আসে নিশিভোর।
ডাকে সুদূর পথের বাঁশি ছাড় মুসাফির-খানা তোর।।
অস্ত-আকাশ-অলিন্দে ঐ পান্ডুর কপোল রাখি’
কাঁদে মলিন ভোরের শশী, বিদায় দাও বন্ধু চকোর।।
মরুচারী খুঁজিস সলিল অগ্নিগিরির কাছে, হায়!
খুঁজিস অমর ভালোবাসা এই ধরণীর এই ধূলায়।
দারুণ রোদের দাহে খুঁজিস কুঞ্জ-ছায়া স্বপ্ন-ঘোর।।

বাণী

বসিয়া নদী-কূলে,এলোচুলে			কে উদাসিনী
কে এলে, পথ ভুলে, এ অকূলে		বন-হরিণী।।
কলসে জল ভরিয়া চায় করুণায়		কুল-বধূরা,
কেঁদে যায় ফুলে, ফুলে, পদমূলে,		সাঁঝ-তটিনী।।
দলিয়া কত ভাঙা-মন, ও চরণ,		করেছ রাঙা
কাঁদায়ে কত না দিল, এলে নিখিল		মন-মোহিনী।।
হারালি গোধূলি-লগন কবি,			কোন নদী কিনারে,
একি সেই স্বপন-চাঁদ, পেতেছে ফাঁদ		প্রিয়ার সতিনী।।

বাণী

ওগো সুন্দর! তুমি আসিবে বলিয়া বনপথে পড়ে ঝরি’
				(রাঙা) অশোকের মঞ্জরি।
হাসে বনদেবী বেণীতে জড়ায়ে মালতীর বল্লরী,
				নব কিশলয় পরি’।।
	কুমুদী-কলিকা ঈষৎ হেলিয়া
	চাঁদেরে নেহারি হাস মুচিকিয়া,
মহুয়ার বনে ভ্রম-ভ্রমরী ফিরিতেছে গুঞ্জরি’।।
যাহা কিছু হেরি ভাল লাগে আজ লুকাইতে নারি হাসি,
কাজ করি আর শুনি যেন কানে মিঠে পাহাড়িয়া বাঁশি।
	এক শাড়ি খুলে পরি’ আর শাড়ি
	বারে বারে মুখ মুকুরে নেহারি,
দুরু দুরু হিয়া উঠে চমকিয়া, অকারণে লাজে মরি।।

বাণী

গভীর ঘুম ঘোরে স্বপনে শ্যাম-কিশোরে হেরে’ প্রেমময়ী রাধা।
রাধারে ত্যজিয়া আঁধার নিশীথে চন্দ্রার সাথে বাঁধা।(শ্যাম-চাঁদ)
যেন চাঁদের বুকে কলঙ্ক গো নির্মল শ্যাম-চাঁদের বুকে চন্দ্রা যেন কলঙ্ক গো।।
অরুণ নয়ানে মলিন বয়ানে জাগিল অভিমানিনী
(ভাবে) রাধার হৃদয় আধার যাহার সে কেন ভজে কামিনী।
শ্রীরাধার মান ভয়হীন, তাই শ্রীরাধা অভিমানিনী,
পরমশুদ্ধ প্রেম শ্রীরাধার, নির্ভয় অভিমানিনী।।
কৃষ্ণকেও সে ভয় করে না, নির্ভয় অভিমানিনী রাধা বুঝতে নারে গো
চির-সরল অমৃতময় গরল কেন হয় বুঝতে নারে গো
কাঁপে থরথর সারা কলেবর, ভাবে রাধা একি বিপরীত।
প্রেম ভিক্ষু কহে, বুঝি বুঝিবার নহে চঞ্চল শ্যামের রীত।।
বোঝা যে যায় না চঞ্চল শ্যামের রীত
অবুঝ মনের বোঝা যায় না তাতে তবু কখন সে রাধার, কখন সে চন্দ্রার।।

গীতিচিত্র: ‘অভিমানিনী’

বাণী

আজি	ঘুম নহে, নিশি জাগরণ।
	চাঁদেরে ঘিরি’ নাচে ধীরি ধীরি তারা অগণন।।
	প্রখর-দাহন দিবস-আলো,
	নলিনী-দলে ঘুম তখনি ভালো।
	চাঁদ চন্দন চোখে বুলালো
		খোলো গো নিঁদ-মহল-আবরণ।।
	ঘুরে ঘুরে গ্রহ, তারা, বিশ্ব, আনন্দে
	নাচিছে নাচুনি ঘূর্ণির ছন্দে।
	লুকোচুরি-নাচ মেঘ তারা মাঝে
	নাচিছে ধরণী আলোছায়া-সাজে,
	ঝিল্লির ঘুমুর ঝুমুঝুমু বাজে
		খুলি’ খুলি’ পড়ে ফুল-আভরণ।।

বাণী

	পুব সাগরে ডুব দিয়ে ঐ সোনার রবি উঠ্ল রে।
	রাতের চোখের অশ্রু ঝ’রে কুসুম হয়ে ফুট্ল রে।।
		যাত্রী ওরে যেতে হবে
		গভীর ব্যথা পেতে হবে,
তাই	মিলন রাতের বালুর মালা জাগরণে টট্ল রে।।

নাটক : ‘মধুমালা’ (ঘুমপরীর গান)