বাণী

কেন	বাজাও বাঁশি কালোশশী মৃদু মধুর তানে।
ঘরে	রইতে নারি জ্ব’লে মরি বাজাইও না বনে
		বাঁশি, আর বাজাইও না বনে
		নিঝুম রাতে বাজে বাঁশি
		পরায় গলে প্রেম-ফাঁসি,
কেহ	নাহি জানে হে শ্যাম (আমি) মরি শুধু প্রাণে॥
		রাখ রাখ ও-বাঁশরি
		ওহে কিশোর-বংশীধারী,
	মন নাহি মানে হে শ্যাম (বঁধু) বাঁশি কি গুণ জানে॥

বাণী

কত কথা ছিল বলিবার, বলা হ’ল না।
বুকে পাষাণ সম রহিল তারি বেদনা।।
	মনে রহিল মনের আশা
	মিটিল না প্রাণের পিপাসা,
বুকে শুকালো বুকের ভাষা — মুখে এলো না।।
	এত চোখের জল, এত গান
	এত আদর সোহাগ অভিমান,
কখন সে হ’ল অবসান — বোঝা গেল না।।
	ঝরিল কুসুম যদি হায়!
কেন স্মৃতির কাঁটাও নাহি যায়,
বুঝিল না কেহ কাহারো মন বিধির ছলনা।।

বাণী

	কিশোরী, মিলন-বাঁশরি
শোন	বাজায় রহি’ রহি’ বনের বিরহী —
	লাজ বিসরি’ চল জল্‌কে।
তার	বাঁশরি শুনি’ কথার কুহু
	ডেকে ওঠে কুহুকুহু - মুহুমুহু;
	রস-যমুনা-নীর হ’ল অধীর, রহে না থির;
ও তার 	দু-কূল ছাপায়ে তরঙ্গদল ওঠে ছল্‌কে॥    
	কেন লো চম্‌কে দাঁড়ালি থম্‌কে —
পেলি	দেখতে কি তোর প্রিয়তম্‌কে!
পেয়ে	তারি কি দেখা নাচিছে কেকা,
হ’ল	উতলা মৃগ কি দেখে চপল্‌কে॥

নাটকঃ ‘চক্রব্যূহ’

বাণী

কে পাঠালে লিপির দূতী গোপন লোকের বন্ধু গোপন।
চিন্‌তে নারি হাতের লেখা মনের লেখা চেনে গো মন।।
	গান গেয়ে যাই আপন মনে
	সুরের পাখি গহন বনে,
সে সুর বেঁধে কার নয়নে — জানে শুধু তা’রি নয়ন।।
	কে গো তুমি গন্ধ-কুসুম
	গান গেয়ে কি ভেঙেছি ঘুম,
তোমার ব্যথার নিশীথ নিঝুম — হেরে’ কি মোর গানের স্বপন।।
	নাই ঠিকানা নাই পরিচয়
	কে জানে ও-মনে কি ভয়,
গানের কমল ও-চরণ ছোঁয় — তাইতে মানি ধন্য জীবন।।
	সুরের গোপন বাসর-ঘরে
	গানের মালা বদল করে,
সকল আঁখির অগোচরে — না দেখাতে মোদের মিলন।।

বাণী

কালা		এত ভাল কি হে কদম্ব গাছের তলা।
আমি		দেখ্‌ছি কত দেখ্‌ব কত তোমার ছলাকলা;
আমি		নিতুই নিতুই সবই কত, (কালা) তিন সতিনের জ্বালা॥
আমি		জল নিতে যাই যমুনাতে তুমি বাজাও বাঁশি হে,
		মনের ভুলে কলস ফেলে তোমার কাছে আসি হে,
শ্যাম		দিন-দুপুরে গোকুলপুরে (আমার) দায় হল পথ চলা॥
আমার	চারদিকেতে ননদ-সতীন দু’কূল রাখা ভার,
		আমি সইব কত আর বাঁকা শ্যাম।
ওরা		বুঝছে সবই নিত্যি-নতুন, (নিতি) মিথ্যে কথা বলা॥

বাণী

কিশোর গোপ-বেশ মুরলিধারী শ্রীকৃষ্ণ গোবিন্দ।
দ্বিভুজ শ্যাম সুন্দর মূরতি অপরূপ অনিন্দ্য।।
	পরমাত্মারূপী পরম মনোহর
	গোলকবিহারী চিন্ময় নটবর,
ময়ূর পাখাধারী চিকুর চাঁচর মণি-মঞ্জীর শোভিত শ্রীচরণারবিন্দ।।
গলে দোলে নব বিকশিত কদম ফুলের মালা
খেলে ঘিরে যাঁরে প্রেমময়ী গোপবালা,
	শোভিত স্বর্ণবর্ণ পীতবাসে
	ওঙ্কার বিজড়িত শ্রীরাধার পাশে,
পদ্মপলাশ আঁখি মৃদু-হাসে — যেরূপ ধেয়ায় মুনি ঋষি দেববৃন্দ।।