বাণী

সুদূর সিন্ধুর ছন্দ উতল
আমরা কলগীতি চঞ্চল॥
তুফান ঝঞ্ঝা কল্লোল ছলছল
ঊর্ধ্বে আমি ঝড় বহি শন্‌শন্‌
মম বক্ষে তব মঞ্জির তোলে গো রণন্
আনন্দ চিত্তে মেতে উঠি নৃত্যে
গুরু গুরু গুরু বাজে বাদল মাদল॥
তুমি গগন তলে উঠি মেঘের ছলে
জল-বিম্বমালা বালা পরাও গলে।
তুমি বাদল হাওয়ায় কর আদন যখন
মোরে কান্না পাওয়ায়।
ধুলি গৈরিক ঝড়ে সাগর নীলাম্বরী
জড়াইয়া অপরূপ করে ঝলমল॥

বাণী

সজল-কাজল-শ্যামল এসো তমাল-কানন-ঘেরি,
কদম-তমাল-কানন ঘেরি।
মনের ময়ূর কলাপ মেলিয়া নাচুক তোমারে হেরি’।।
ফোটাও নীরস চিত্তে সরস মেঘমায়া,
আনো তৃষিত নয়নে মেঘল ছায়া,
বাজাও কিশোর বাঁশের বাঁশরি ব্যাকুল বিরহেরই।।
দাও পদরজঃ হে ব্রজবিহারী, মনের ব্রজধামে —
রুমু-ঝুমু ঝুমু বাজুক নূপুর চরণ ঘেরি,
কদম-তমাল-কানন ঘেরি।।

বাণী

বোন		:	সাত ভাই চম্পা কে কি হবি বল। তোরা কে কি হবি বল 
			কেলো, ভূলো, হেবো, পচা, ভুতো, ন্যাড়া, ডল্।
প্রথম ভাই	:	আমি হব কাব্‌লিওয়ালা এক কুলো চাপ দাড়ি।
			‘তেরে মুসে আগা, মোর মা গায়া, লেয়াও রূপী তাড়াতাড়ি’।
দ্বিতীয় ভাই	:	আমি হব পন্ডিত মশাই, কাঁপবে ছেলের দল
			দেখে কাঁপবে ছেলের দল।।
তৃতীয় ভাই	:	আমি হব ফেরিওয়ালা চাই চানাচুর ঘুগ্‌নিদানা!
			পাড়ায় পাড়ায় ফিরব ঘুরে পারবে না কেউ করতে মানা!
			রাত্রে হাঁক্‌ব ‘কুলফী বরফ’ হায় কি মজার কল।।
চতুর্থ ভাই	:	আমি হব জজ সাহেব, দিব ফাঁসি ছ’ মাস ক’রে
পঞ্চম ভাই	:	দারোগা আমি, তোর জজকে চালান দিব থানায় ধ’রে।
ষষ্ঠ ভাই	:	আমায় দেখে দারোগা গুড়ুম
			আমি হব কনিষ্ঠ-বল।।
সপ্তম ভাই	:	আমি হব বাবার বাবা মা সে আমার ভয়ে
			ঘোম্‌টা দিয়ে লুকোবে কোণে চূনি-বিল্লি হয়ে!
			বল্‌ব বাবায়, ওরে খোকা শিগ্‌গির পাঠশাল্ চল্।।

বাণী

সবুজ শোভার ঢেউ খেলে যায়
নবীন আমন ধানের ক্ষেতে।।
হেমন্তের ঐ শিশির-নাওয়া হিমেল হাওয়া
	সেই নাচনে উঠলো মেতে।।
টইটুম্বুর ঝিলের জলে
কাঁচা রোদের মানিক ঝলে
চন্দ্র ঘুমায় গগন-তলে সাদা মেঘের আঁচল পেতে।।
নটকানো রঙ শাড়ি প’রে কে বালিকা
ভোর না হতে যায় কুড়াতে শেফালিকা।
	আনমনা মন উড়ে বেড়ায়
	অলস প্রজাপতির পাখায়
মৌমাছিদের সাথে সে চায় কমল-বনের তীর্থে যেতে।।

বাণী

সখি কই গোপীবল্লভ শ্যামল পল্লব কান্তি
সখি আমার হরি বিনে হরি চন্দনে নাহি শান্তি।
ঐ দেখ্ দেখ্ শ্যাম দাঁড়িয়ে
ও নহে কদম তমাল পিয়াল পিয়া মোর ঐ দাঁড়িয়ে।
ও নহে তরুণ শাখা ও যে মোর বঁধু আসে বাহু বাড়িয়ে।
পুষ্প পাগল তরু কি কখনো দুলে গো অমন করিয়া
(ও যে) বনমালা গলে বনমালী মোর নাচিছে হেলিয়া দুলিয়া।
তোরা দেখে আয় তোরা দেখে আয়
অভিমানে শ্যাম আসিছে না কাছে ডেকে আয় তারে ডেকে আয়
তারি বিগলিত নীল লাবনি কি ঐ যমুনার কালো জলে
বিজলির আঁখি ইঙ্গিতে সে কি ডাকে মোরে মেঘ দলে।
সখি গো! তোরা যেতে দে মোরে যেতে দে আর দিস্‌নে বাধা
(ঐ) গহন কালোতে গাহন করিয়া জুড়াক আলোক রাধা।।

বাণী

সতী–হারা উদাসী ভৈরব কাঁদে।
বিষাণ ত্রিশূল ফেলি’ গভীর বিষাদে।।
	জটাজুটে গঙ্গা
	নিস্তরঙ্গা,
রাহু যেন গ্রাসিয়াছে ললাটের চাঁদে।।
দুই করে দেবী–দেহ ধরি’ বুকে বাঁধে,
রোদনের সুর বাজে প্রণব–নিনাদে।
ভক্তের চোখে আজি ভগবান শঙ্কর —
সুন্দরতর হ’ল – পড়ি’ মায়া ফাঁদে।।