বাণী

কে তুমি এলে হেলে দুলে।
প্রাণের গাঙে লহর তুলে।।
তোমার চটুল চরণ ছন্দে
মন-ময়ূর নাচে আনন্দে,
ঝরে ফুলদল বেণীর বন্ধে —
মেঘের মাধুরী এলোচুলে।।
আমার গানে আমার সুরে
প্রাণে আনে তব নূপুরে,
রূপ-তরঙ্গ খেলিছে রঙ্গে —
ব্যাকুল তনুর কূলে কূলে।।

বাণী

চোখে চোখে চাহ যখন তোমরা দু’টি পাখি।
সেই চাহনি দেখি আমি অন্তরালে থাকি’।।
	মনে জাগে, অনেক আগে
	এম্‌নি গভীর অনুরাগে,
আমার পানে চাইত কেহ এম্‌নি অরুণ-আঁখি।।
ঘুমাও যখন তোমরা দু’জন পাখায় বেঁধে পাখা,
আমি দূরে জেগে থাকি, যায় না কাঁদন রাখা।
	পরশ যেন লেগে আছে
	শূন্য আমার বুকের কাছে,
তোমার মতন ঘুমাত কেউ এই বুকে মুখ রাখি’।।

বাণী

নিদাঘের খর তাপে ক্লান্ত এ ধরণী।
মাধুরী হারায়ে হল পাণ্ডুর বরণী।।
পিঙ্গল জটাজাল, তেজ তার অশনি।
বৈশাখী ভোরে স্মরি’ রুদ্রাণী জননী।।
ধূলি-ধূসরিত প্রসারিত অম্বর
বুক-ভরা তৃষা তার, চাহে সে নটবর,
শ্যামলী মেঘ-মালা, সেই তার জলধর —
দাহনের অবসানে জুড়াইবে আপনি।।

বাণী

		কেহ বলে তুমি রূপ সুন্দর, কেহ বলে তুমি জ্যোতি!
		আমি জানি প্রভু তুমি যে আমার চির-জনমের পতি।।
			কেহ বলে তুমি চিরদিন দূরে রহ
			কেহ বলে, আছে অন্তরে অহরহ,
যার		যাহা সাধ ডাকে সেই নামে (প্রভু) তোমার নাহিক ক্ষতি।।
		অন্ধ দেখে না চন্দ্র-সূর্য তবু জানে আলো আছে,
(আমি) 	দেখিনি, তবুও তোমার প্রকাশ সহজ-আমার কাছে
			রূপ কি অরূপ কাহারেও নাহি দুষি,
			নাই দেখি ফুল সুরভি পেয়েই খুশি,
(আমি)		অঞ্জলি ভরি’ অমৃত চাই, পাত্রে নাহিক মতি।।

বাণী

	পরো সখি মধুর বধূ-বেশ
	বাঁধো আকুল চাঁচর কেশ।।
বাঁকা ভুরুর মাঝে পর খয়েরি টিপ বকুল-বেলার হার,
ছাড় মলিন বাস শাড়ি চাঁপা রং পর পর আবার।
অধর রাঙাও সলাজ হাসিতে মোছ নয়ন-ধার —
বিদেশী বন্ধু তোমারে স্মরিয়া ফিরে এলো নিজ দেশ।।
মিলন-দিনে আর সাজে না মুখ-ভার ভোলো ভোলো অভিমান,
মধুরে ডাক কাছে তায়, জুড়াও তাপিত প্রাণ।
অরুণ-রাঙা হোক অনুরাগের রঙে করুণ সজল নয়ান —
মরম বীণায় উঠুক বাজিয়া মিলন-মধুর রেশ।।

বাণী

তাপসিনী গৌরী কাঁদে বেলা শেষে,
উপবাস-ক্ষীণ তবু যোগিনী বেশে।।
বুকে চাপি’ করতল বিল্বপত্র-দল,
কেঁপে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে শিব-আবেশে।।
অস্ত রবি তা’র সহস্র করে
চরণ ধ’রে বলে ফিরে যেতে ঘরে,
‘শিব দাও শিব দাও’ ব’লে লুটায় ধূলি-তলে —
কৈলাস-গিরি পানে চাহে অনিমেষে।।