বাণী

টলমল টলমল পদভরে
বীরদল চলে সমরে॥
খরধার তরবার কটিতে দোলে
রণন ঝনন রণ-ডঙ্কা বোলে
ঘন তূর্য-রোলে শোক-মৃত্যু ভোলে
দেয় আশিস সূর্য সহস্র করে॥
চলে শ্রান্ত দূর-পথে মরু দুর্গম পর্বতে
চলে বন্ধুবিহীন একা, মোছে রক্তে ললাট-কলঙ্ক-লেখা।
কাঁপে মন্দিরে ভৈরবী -  এ কি বলিদান!
জাগে নিঃশঙ্ক শঙ্কর ত্যজিয়া শ্মশান!
দোলে ঈশান মেঘে কাল প্রলয় নিশান!
বাজে ডম্বরু, অম্বর কাঁপিছে ডরে॥

বাণী

	ও বাবা! তুর্কী-নাচন নাচিয়ে দিলে।
(ওসে)	কোন্ অভাগা অঙ্ক-লক্ষ্মী নাম দিল এই শঙ্খ-চিলে।।
		দিন রাত্তির অঙ্ক কষে
		পান্ হতে চুন কখন্ খসে,
	স্ত্রী ব’লে আন্‌নু ঘরে শাড়ি পরা কোন্ উকিলে।।
	প্রাণ-পাখি মোর খাঁচা-ছাড়া, (এই) ঝুল্‌তি বেণীর গুল্‌তি ঢিলে’
	মাতঙ্গিনী মহিষিণী গুঁতিয়ে ফাটায় পেটের পিলে।
		যেমন বাঘ দেখে ছাগ ছুটেরে ভাই
		তেমনি কাছা খুলে পালিয়ে বেড়াই
	ওগো মাগো এসে রক্ষা কর হালুম-বাঘায় ফেল্‌ল গিলে।।

বাণী

বনের হরিণ আয় রে বনের হরিণ আয়
কাজল-পরা চোখ নিয়ে আয় আমার আঙিনায় রে।।
(দেখ্‌) নেই বনে কেউ এক্‌লা দুপুর
আয় ঝরা পাতায় বাজিয়ে নুপুর, ঝুমুর ঝুমুর
তোরে ডাকে নোটন পায়রার দল ডাকে মেঘের ঝরোকায় রে।।
কি দেখে তুই ধীরি ধীরি চাস্‌ রে ফিরি ফিরি,
বন্‌-শিকারির তীর নহে ও, ঝরনা ঝিরি ঝিরি।
	মাদল বাজে ঈশান কোণে
	ঝড় উঠেছে আমার মনে
সেই তুফানের তালে তালে নাচ্‌বি চপল পায় রে।।

বাণী

এসো শারদ প্রাতের পথিক এসো শিউলি বিছানো পথে।
এসো ধুইয়া চরণ শিশিরে এসো অরুণ-কিরণ-রথে।।
দলি, শাপলা শালুক শতদল এসো রাঙায়ে তোমার পদতল
নীল লাবনি ঝরায়ে চলচল এসো অরণ্য পর্বতে।।
এসো ভাদরের ভরা নদীতে ভাসায়েকেতকী পাতার তরণী
এসো বলাকার রঙ পালক কুড়ায়ে বাহি’ ছায়াপথ-সরণি।
শ্যাম শস্যে কুসুমে হাসিয়া এসো হিমেল হাওয়ায় ভাসিয়া
এসো ধরনীরে ভালোবাসিয়া দুর নন্দন-তীর হতে।।

বাণী

ভবনে ভুবনে আজি ছড়িয়ে গেছে রঙ।
রাঙিল, মাতিল ধরা অভিনব ঢং।।
রাঙা বসন্ত হাসে নন্দন-আনন্দে
চিত্ত-শিখী নাচে মদালস-ছন্দে,
নাচিছে পরানে আজি তরুণ দূরন্ত বাজায়ে মৃদঙ।।
কামোদে নটে আমোদে ওঠে গান,
মাতিয়া ওঠে প্রাণ।
উতল যমুনা-জল-তরঙ্গ,
অঙ্গে অপাঙ্গে আজি খেলিছে অনঙ্গ,
পরানে বাজে সারং সুর কাফির সঙ্গ।।

বাণী

অরুণ কিরণ সুধা-স্রোতে, ভাসাও প্রভু মোরে।
গ্লানি পাপ তাপ মলিনতা, যাক ধুয়ে চিরতরে।।
প্রশান্ত স্নিগ্ধ তব হাসি, ঝরুক অশান্তি প্রাণে বুকে১
প্রভাত আলোর ধারা, যেমন ঝরে সব ঘরে।।
যেমন বিহগেরা জাগি ভোরে, আলোর নেশার ঘোরে
আকাশ পানে ..., বন্দে প্রেম-মনোহরে২।।

১. পান্ডুলিপিতে পরিবর্ত লাইন হিসেবে ‘সবারে আজ যেন ভালোবাসি’ লেখা আছে।
২. পান্ডুলিপিতে গানটির সঙ্গে কবি-কৃত স্বরলিপি আছে।